চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

গোল উৎসবে দুরন্ত সূচনা পেল বাংলাদেশ

ভুটানকে বড় ব্যবধানেই হারাতে বদ্ধপরিকর ছিল বাংলাদেশ। অতীত পরিসংখ্যান মাথায় রাখলে বাংলাদেশের মেয়েদের কাছে ভুটানের পাত্তা পাওয়ার কথা নয়। জাতীয় দল কিংবা বয়সভিত্তিক, মেয়েদের ফুটবলে বাঘিনীদের কখনোই হারাতে পারেনি ভুটান। অনূর্ধ্ব-১৭ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে তাদের ৮-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে দারুণ সূচনা পেল গোলাম রব্বানি ছোটনের দল।

সোমবার সন্ধ্যায় কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে হওয়া ম্যাচের ২১ সেকেন্ডেই বাংলাদেশ গোলের দেখা পেতে পারতো। সতীর্থের বাড়ানো লম্বা পাসে বল পান সুরভী আকন্দ প্রীতি। ভুটানের গোলরক্ষক দীক্ষা রাই বেরিয়ে এলে পোস্ট ফাঁকা হয়ে যায়। পোস্ট বরাবর কিক নিতে পারেননি প্রীতি, বল গোললাইন অতিক্রম করে।

১০ মিনিটের মাথায় প্রীতির নেয়া কিকে বল ধরে ফেলেন দীক্ষা। দুই মিনিট পর সুলতানা আক্তার ডি বক্সে বলের অনেকটা কাছে গেলেও ভুটানের গোলরক্ষক দারুণভাবে বল লুফে নেন।

বাংলাদেশের গোলখরার অবসান হয় ১৬ মিনিটে। দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে রক্ষণচেরা পাস দেন প্রীতি। বল আদায় করে লক্ষ্যভেদ করেন তৃষ্ণা রানি।

ম্যাচের ১৯ মিনিটে নিজ স্বাগতিক দলের এক খেলোয়াড়ের মাথায় বল লাগে। নিজেদের জালেই জড়িয়ে দিচ্ছিলেন বল। বাংলাদেশি গোলরক্ষক সঙ্গীতা রানি দাস চমৎকারভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে বল ধরেন।

পরের মিনিটে প্রীতির সঙ্গে বল আদান-প্রদানের পর ডি বক্সের উপর দিয়ে বল মেরে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন সুলতানা আক্তার। অধিনায়ক রুমা আক্তার ২১ মিনিটে নিশানাভেদ করলেও অফসাইডের বাঁশি বাজায় তখন ব্যবধান দ্বিগুণ হয়নি।

২৬ মিনিটের মাথায় নুসরাত জাহান মিতুর নেয়া ফ্রি কিকে জটলার ভেতর বল পান প্রীতি। ডি বক্সের ভেতর প্রীতি বাঁ পায়ে কিক নিতে যাওয়ার সময় ভারসাম্য রাখতে না পেরে ডি বক্সের ভেতর পড়ে যান। বল তার পায় লেগে জালে প্রবেশ করার আগ মুহূর্তে দীক্ষা সেভ করেন।

মিতুর অ্যাসিস্টে বল নিয়ে তৃষ্ণা রানি বাঁ পায়ের বদলে আকস্মিকভাবে ডান পায়ে কিক নিলে বিভ্রান্ত হন প্রতিপক্ষ দলের গোলরক্ষক। ডান পায়ের চোখ সুন্দর প্লেসিং শটে ২৮ মিনিটে তৃষ্ণা গোল করেন।

চার মিনিট পর প্রীতির ডান পায়ের ভলি পোস্টের উপর দিয়ে যায়। এরপর ডিফেন্ডার জয়নব বিবি রিতার বাঁ প্রান্ত থেকে নেয়া লম্বা ফ্রি কিক ভুটানের গোলরক্ষক ধরতে ব্যর্থ হন। তার পেছনে থাকা সুলতানা আক্তার হেডে বল জালে জড়ান।

বিরতির আগে ৪২ মিনিটে প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডার বল ক্লিয়ার করতে না পারার সুবাদে তা ছিনিয়ে নেন প্রীতি। ডি বক্সে ঢুকে ডান পায়ে ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে করা ভলিতে তিনি চোখ ধাঁধানো গোল করেন।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে পূজা দাস সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করায় ৪-০ গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে বাংলাদেশ।

বিরতির পর ৫১ মিনিটে প্রীতি গোলরক্ষককে একা পেয়েও ঠিকঠাক ভলি করতে পারেননি। উঁচুতে লাফিয়ে দীক্ষার ক্যাচ ধরতে তাই সমস্যায় পড়তে হয়নি।

৫৩ মিনিটে হ্যাটট্রিকের অনায়াস সুযোগ হাতছাড়া করেন তৃষ্ণা। সতীর্থ প্রীতির বাড়ানো বল রিসিভ করতে পারেননি। বল তার পায়ে লেগে গোলরক্ষকের গ্লাভসে যায়।

৬০ মিনিটে বললি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামার খানিক পরই নিশানাভেদ করেন থুইনুই মারমা। দুই মিনিট পরই আরেক বদলি খেলোয়াড় মুন্নি গোল করেন।

গোল উৎসবে ভাসতে থাকা বাংলাদেশ ৬৪ মিনিটে থুইনুই মারমা গোল করলেও অফসাইডে তা বাতিল হয়।

অনন্যা মুরমু বিথীর হাস্যকর ভুলে ৬৪ মিনিটে বাংলাদেশ গোল হজম করে। পর্যাপ্ত সময় থাকার পরও বল ক্লিয়ার করেননি। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভুটানের প্রিয়া ঘালি লক্ষ্যভেদ করেন। এ সময় তাকে ফাউল করায় বীথি হলুদ কার্ড দেখেন। আহত হয়ে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন ঘালি।

৭৬ মিনিটে ঋতু আক্তারের লম্বা পাসে বল পান তৃষ্ণা। তার শট বারে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে হেডে বল জালে জড়িয়ে থুইনুই জোড়া গোলের দেখা পান।

থুইনুই ৮৩ মিনিটে হ্যাটট্রিকের সুযোগ নষ্ট করেন। মোসাম্মাত সাগরিকার শট বারে লেগে ফেরে। ফিরতি বলে কিক নেন থুইনুই। বল বার ঘেঁষে বের হয়। ৮৫ মিনিটে সাগরিকা গোল করে বাংলাদেশকে অষ্টম গোলের দেখা পাইয়ে দেন।