চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মেয়েদের বার্সা-ইউনাইটেডে পাঠালে এশিয়ার সেরা হবে

একান্ত সাক্ষাৎকারে আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু

জাতীয় দলের আক্রমণভাগের সাবেক খেলোয়াড় আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু। বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত প্রতিপক্ষ গোলমুখে হয়ে উঠেছিলেন লাল-সবুজদের ভরসা। ১৯৮৮ সালে মাঠ ছাড়লেও ফুটবল ছেড়ে যাননি কখনোই। শেখ জামাল ক্লাবের সাথে আছেন।

১৯৮৩ সালে ঢাকায় প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপে নেপালের বিপক্ষে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছিলেন চুন্নু। মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সেই নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। চুন্নুকেও ছুঁয়ে গেছে সেই আনন্দ।

চ্যানেল আই অনলাইনকে একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন, ‘এটা বিশাল প্রাপ্তি। আমি তাদের অভিনন্দন জানাই, যারা দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছে।’

সাফল্য কীভাবে ধরা দিল তার কারণ ব্যাখ্যায় চুন্নু থাকলেন স্পষ্টভাষী, ‘সবসময় বলে এসেছি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ছাড়া কিছু হবে না। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে হবে। বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ থেকে প্রচুর খেলোয়াড় উঠে আসছে। এটা ১০ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল। ফুটবলাররা ১০ বছর ধরে এক ছাদের নিচে আছে। তাদের নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করায় কোচ জানেন কীভাবে তাদের কাজ করাতে হবে।’

সাউথ এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় উঠেছে, এখন আরও সামনে এগিয়ে যাওয়ার পালা। সেজন্য খেলা দরকার প্রচুর ম্যাচ। দেশের বাইরে গিয়েও ম্যাচ খেলে বাড়াতে হবে অভিজ্ঞতা।

ভারতের আই লিগে সেতু এফসির হয়ে ২০১৮ সালে খেলে এসেছেন শিরোপাজয়ী আসরে সর্বাধিক ৮ গোল করা অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। তিনি মালদ্বীপে প্রতিরক্ষা বাহিনীর হয়েও খেলেছেন। বাকিরাও দেশের বাইরে খেলতে পারলে সেটা আরও বড় সাফল্যের রাস্তা তৈরি করতে পারে বলে মত চুন্নুর।

‘বার্সেলোনা ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাবে মেয়েদের খেলার জন্য পাঠাতে পারলে এশিয়ার সেরা দল হতে পারবে। লিগ হলে প্রচুর প্রতিভাবান ফুটবলার পাওয়া যেত। লিগ হওয়া দরকার, থেমে থাকলে চলবে না। তাহলে ভালো খেলতে পারবে না। বাফুফেকে দেশের ফুটবলের জন্য আরও দায়িত্ব নিতে হবে। তৃণমূলে যেতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে হবে।’

চ্যাম্পিয়ন দলের অনেকেই আর্থিক অনটনের সাথে লড়ে উঠে এসেছেন। তাদের আর্থিকভাবে শক্তিশালী করতে চাকরি দেয়ার মতো উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান এক সময়ের মাঠ কাঁপানো সাবেক ফুটবলারের।

সাবিনা-স্বপ্না-কৃষ্ণা-ঋতুপর্ণারা যখন ফুটবলে নবজাগরণের জন্ম দিচ্ছেন, বিপরীতে ছেলেদের ফুটবলে সঙ্গী হচ্ছে একরাশ হতাশা। সাফে মেয়েরা যেখানে ২৩ গোল করেছেন, সেই পরিমাণ গোল জাতীয় দলের ছেলেরা করতে চার বছর সময় পার করে ফেলেছেন! কেন এমন হচ্ছে, চুন্নু করলেন খোলাসা।

‘আমরা ট্যালেন্ট হান্ট করতে পারছি না। যতদিন কোয়ালিটি খেলোয়াড় না আসবে, ততদিন ছেলেদের ফুটবলে ভালো কিছু হবে না। ভুটানের বিপক্ষে সেমিতে সাবিনা জিরো অ্যাঙ্গেল থেকে যেভাবে গোল করেছে, ছেলেরা এভাবে পারবে না।’