গত তিন দশকে ঢাকায় মানুষের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সুউচ্চ ভবন। একটি দুর্ঘটনা হলেই আমাদের হুঁশ হয় অবৈধ ভবনের ব্যাপারে। আর সেই হইচই দুর্ঘটনার রেশ কাটলেই থেমে যায়।
এবার আশা করি সেটি হচ্ছে না। স্বয়ং পূর্তমন্ত্রী বনানীতে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের রেশ ধরে ত্রুটিযুক্ত ভবন চিহ্নিত করে সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন। রাজধানীতে নিয়ম না মেনে নির্মিত সব বিল্ডিং ভেঙে ফেলা হবে বলে হুঁশিয়ারী দিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
এ বিষয়ে তিনি বলেছেন: নতুন ঢাকায় একেবারে অনিয়মের বিল্ডিংগুলো ভেঙে ফেলতে হবে। যেটাকে আধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে টিকিয়ে রাখা যায়, সেই বিল্ডিংকে সেভাবে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে। একেবারে অনিয়মের বিল্ডিং ভাঙা না হলে সিলগালা করে দেয়া হবে। ভবন যদি কোনো ব্যক্তির আয়ের উৎস হয়, তা কোনোভাবেই মানুষের জীবনের চেয়ে বড় হতে পারে না।
এছাড়া বনানীর ঘটনায় ৬২ জন কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করেছে করেছে তদন্ত কমিটি। এই কর্মকর্তারা অবৈধ ভবন নির্মাণে সহযোগিতা করেছিল। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত এত সংখ্যক কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান এভাবেই চলমান রাখতে হবে।
শ ম রেজাউল করিম বলেছেন: এফ আর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের পর রাজউকের ২৪টি দলে কাজ করে এক হাজার ৮১৮টি বাড়িতে অনিয়ম পেয়েছে। তিনি অনিয়মের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেন। এতে একটি বাড়িও আইনের বাইরে থাকবে না বলে আমরা আশা করি।
এটা অস্বীকারের উপায় নেই যে, রাজধানীতে অবৈধ ভবন নির্মাণের কারণে বারবার দুর্ঘটনায় মানুষের অমূল্য জানমালের ক্ষতি হয়। চকবাজারের চুড়িহাট্টা এবং বনানীর এফআর টাওয়ার ট্র্যাজেডি এর জ্বলন্ত প্রমাণ। তাই এ অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
পূর্তমন্ত্রীর এই আশ্বাসে আমরা ভরসা করে বলতে পারি, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নিরাপদ নগর রেখে যেতে হলে আমাদের আরও অনেক দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হবে। এখানে গুটিকয় ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের জন্য যেন কোনো সুউদ্যোগ নষ্ট হয়ে না যায়।