চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘ ব্যর্থ কেন

রোহিঙ্গাদের নিজদেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ও ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিউইয়র্কে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের ধর্মীয় এবং জাতিগত দমন-পীড়ন বন্ধে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ জরুরি।

মিয়ানমার থেকে জাতিগত নিধন ও দমন-পীড়নের শিকার হয়ে বাস্তুচ্যুত প্রায় দশ লাখ নাগরিক বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। প্রাথমিকভাবে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে আশ্রয় দেয়া হলেও, ক্রমেই এই জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের পরিবেশ-প্রতিবেশ- অর্থনীতি ও আইনশৃংখলার জন্য হুমকি ও বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে খুনের শিকারও হয়েছেন বেশ কয়েকজন। রোহিঙ্গা নেতাসহ কয়েকজন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। সর্বশেষ গত ২১ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে এক ভলান্টিয়ারকে হত্যা করেছে একদল দুষ্কৃতকারী। উখিয়ার পালংখালী ১৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এই খুনের ঘটনা ঘটে।

আমরা শুরু থেকেই রোহিঙ্গা সংকট দীর্ঘায়িত হলে এমন ঘটনাবলীর আশঙ্কা করে আসছিলাম। প্রত্যাবাসন না হওয়ায় নিরাপত্তা হুমকি বাড়ছে। এতে মানবিক সংকটও বাড়ছে। আর নিরাপত্তা হুমকি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, বরং পুরো দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বজুড়ে সংকট তৈরি হবে বলে আমাদের শঙ্কা।

এটা আশার খবর যে, বাংলাদেশের এ সংকট মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে আলোচনা করতে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। তবে গত ছয় বছরেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবসনে কোন কার্যকরী উদ্যোগ বাস্তবায়ন না হওয়ায় আক্ষেপ রয়েছে। জাতিসংঘ কেন ব্যর্থ হলো সেই দিকগুলো খুঁজে বের করে প্রতিষ্ঠানটিকে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাধ্য করতে না পারলে বিশ্বব্যাপী উগ্রবাদ বাড়বে, যা কারোরই কাম্য নয়।

আমরা মনে করি, রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারের হাতেই। মিয়ানমার অব্যাহতভাবে তার অঙ্গীকার অমান্য করলেও আজ পযন্ত এ সংকট নিরসনে তেমন কোন অগ্রগতিই হয়নি, যা দুঃখজনক। এজন্য মিয়ানমারের মানবতাবিরোধী ঔদ্ধত্যের অবসান ঘটিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে জাতিসংঘসহ বিশ্বনেতাদের কার্যকর ভূমিকা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।