কাতারে শিরোপাযুদ্ধ শেষে বড় বিড়ম্বনায় পড়েছেন রেফারি সাইমন মার্সিনিয়াক! দুই ফাইনালিস্ট ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনা উভয়দের তোপে বিদ্ধ তিনি। একপক্ষের দাবি, অতিরিক্ত খেলোয়াড় মাঠে ঢুকে পড়ায় মেসির দ্বিতীয় গোল বাতিল হওয়া উচিত। অন্যপক্ষ বলছে, এমবাপের হ্যাটট্রিক করা গোলের পেনাল্টিটা হয়ই না। সর্বোপরি তোপটা ফরাসিদের কাছ থেকেই আসছে বেশি।
পোলিশ রেফারি অনেকদিন চুপ ছিলেন। ফাইনাল শেষ হয়েছে তাও প্রায় সপ্তাহখানেক, এবার নিজের কাধে আসা দোষ নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন ৪১ বর্ষী রেফারি। বিশেষ করে ফ্রেঞ্চ মিডিয়া ও সমর্থকদের দাবিগুলো ঠেকাতে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করলেন একটি ছবি। দেখালেন মেসির দ্বিতীয় গোলটি বাতিল করতে চাইলে নিজেদের বড় ক্ষতি হবে।
কাতার বিশ্বকাপে আগে থেকেই রেফারিং নিয়ে প্রশ্ন। আর্জেন্টিনা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচে ইতিহাস গড়া কার্ড দেখিয়েছেন রেফারি। মরক্কোর বিপক্ষে হারার পর পর্তুগালের তারকা পেপে সরাসরি বলেছিলেন, ‘আর্জেন্টিনাকে জেতাতে সবকিছু করছে ফিফা।’ ফ্রান্স মিডিয়ার দাবি ভিন্ন। বিখ্যাত গণমাধ্যম লেকিপের প্রতিবেদন মতে, মেসির দ্বিতীয় গোলটি বাতিল হওয়া উচিত। আর সেই সূত্র ধরেই রেফারির দিকে আঙুল তুলছেন ফ্রেঞ্চ সমর্থকরা।
ফরাসি সমর্থকরা লুসেইলের ফাইনালও পূনরাবৃত্তি চায়। একটি পিটিশনে অন্তত দুই লাখ মানুষ চায় আবারও হোক শিরোপার মঞ্চ। মার্সিনিয়াক নিজের সমালোচনার জবাব দিয়েছেন একটু অন্যভাবে। ফরাসিদের ভুল সামনে এনে বুঝিয়েছেন, মেসির গোল বাতিল করলে তাদেরও একটি গোল বাতিল করা হত।
ফিফার তৃতীয় আইনের নয় নম্বর ধারা বলছে, ‘যদি কোনো খেলোয়াড় গোল করেন এবং ঠিক সেই সময় কোনো অতিরিক্ত ব্যক্তি (খেলোয়াড়, স্টাফ) মাঠে ঢুকে পড়েন, তাহলে রেফারি গোলটি বাতিল করতে পারবেন। এবং খেলাটি শুরু হবে ফ্রি কিকের মাধ্যমে। ঠিক সেখান থেকে যেখানে অতিরিক্ত খেলোয়াড় বা কোচিং স্টাফের কাউকে দেখা গেছে।’ নিয়ম অনুযায়ী দুটি গোলই তবে বাতিল হত।
Szymon Marciniak, the referee for the World Cup Final, has responded to @lequipe’s criticism that Lionel Messi’s second goal shouldn’t have counted:
“The French didn’t mention this photo, where you can see how there are seven Frenchmen on the pitch when Mbappé scores a goal.” pic.twitter.com/MW6y73iiLN
— Zach Lowy (@ZachLowy) December 23, 2022
সংবাদমাধ্যম লেকিপে ও ফরাসি সমর্থকদের সমালোচনার জবাবে মার্সিনিয়াক বলেছেন, ‘ফরাসিরা এই ছবিটির কথা তুলবে না। আপনি দেখতে পাচ্ছেন এমবাপে যখন গোল করলেন তখন সাতজন ফ্রেঞ্চ মাঠের ভেতর ছিলেন।’
পোলান্ডের রেফারি মার্সিনিয়াক ফ্রেঞ্চদের দাবির প্রেক্ষিতে বক্তব্য দিলেও আর্জেন্টাইনদের হ্যান্ডবলের দাবি নিয়ে কথা বলেননি। স্নায়ুচাপী ফাইনালের সমাধান টাইব্রেকারে হওয়ার পর চ্যাম্পিয়ন দলের সমর্থকরা হ্যান্ডবলের একটি ভিডিও প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায় কোম্যানের কর্ণার কিক থেকে বল হেড করতে লাফিয়ে ওঠা ডাওট উপামেকানো হাতে লাগে।
কিন্তু রেফারি সেটি এড়িয়ে যায়। অথচ পরে এমবাপে শট মন্টিয়েলের হাতে লাগলে পেনাল্টি পায় ফরাসিরা। সেখানেই প্রশ্ন তুলছে চ্যাম্পিয়ন সমর্থকরা, রেফারি যদি ঠিকঠাক চোখটা খোলা রাখতেন তাহলে খেলা হয়ত এতদূর গড়াতো না!