৭ নভেম্বর ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবসের চেতনায়’ নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন বেগবান করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
৭ নভেম্বর ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বিবৃতি দেন খালেদা জিয়া। ওই বিবৃতিতে তিনি বলেন: বিদেশি শক্তির এ দেশীয় চররা ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াকে হত্যা করে। জিয়া শাহাদাতবরণ করলেও তার আদর্শে বলীয়ান মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এখনো দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।
বিবৃতিতে বর্তমান সরকারের কড়া সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন: সরকারের নতজানু নীতির কারণে দেশের সার্বভৌমত্ব দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ছে। গোপন চুক্তির মাধ্যমে রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করে প্রভুত্ব কায়েমের বেপরোয়া কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
খালেদা জিয়ার অভিযোগ: ভোটারবিহীন সরকার জবরদস্তি করে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা গণতন্ত্রের পক্ষে লড়াকু নেতাকর্মীদের বীভৎস নির্মমতায় দমন করছে। বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে পৈশাচিকভাবে পিষ্ট করছে।
৭ নভেম্বরের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে তিনি বলেন: ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক অবিস্মরণীয় দিন। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সৈনিক-জনতা রাজপথে নেমে এসেছিল জাতীয় স্বাধীনতা সুরক্ষা ও হারানো গণতন্ত্র পুনরুজ্জীবনের দৃঢ় প্রত্যয় বুকে নিয়ে।
‘৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক বিপ্লব অত্যন্ত তাৎপর্যমণ্ডিত। স্বাধীনতাত্তোর রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা, তৎকালীন ক্ষমতাসীন মহল নিজ স্বার্থে জাতীয় স্বাধীনতাকে বিপন্ন করে আধিপত্যবাদের প্রসারিত ছায়ার নিচে দেশকে ঠেলে দেয়। ফলে দেশে চরম অশান্তি ও হতাশা নেমে আসে। সরকার চরম অগণতান্ত্রিক পন্থায় মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকারগুলোকে হরণ করে। দেশমাতৃকার এই চরম সংকটকালে ৭৫ এর ৩ নভেম্বর কুচক্রীরা জিয়াউর রহমানকে সপরিবারে ক্যান্টনমেন্টে বন্দী করে।’
খালেদা জিয়া বলেন: এই অরাজক পরিস্থিতিতে ৭ নভেম্বর জাতির স্বাধীনতা রক্ষায় অকুতোভয় দেশপ্রেমিক সৈনিক এবং জনতার ঢলে রাজপথে এক অনন্য সংহতির স্ফুরণ ঘটে এবং জিয়াউর রহমান মুক্ত হন। এই পটপরিবর্তনে রাষ্ট্রপতি জিয়ার নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রভাবমুক্ত হয়ে শক্তিশালী সত্তা লাভ করে। গণতন্ত্র অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়, এই দিন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে।
‘বিদেশি শক্তির এ দেশীয় অনুচররা উদ্দেশ্য সাধনের পথে কাঁটা মনে করে ১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াকে হত্যা করে। জিয়া শাহাদাত বরণ করলেও তার আদর্শে বলীয়ান মানুষ দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় এখনো দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন: বর্তমানে আবারও বিদেশি শক্তির ক্রীড়নকে পরিণত হওয়া শিখণ্ডি সরকার রাষ্ট্রক্ষমতাকে জোর করে আঁকড়ে ধরেছে। সরকারের নতজানু নীতির কারণেই দেশের সার্বভৌমত্বকে দিনের পর দিন দুর্বল হয়ে পড়েছে।’
এ অবস্থা থেকে উত্তরণে ৭ নভেম্বরের চেতনায় সব জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং জাতীয় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বেগম খালেদা জিয়া।