ইউরোপে শরণার্থীদের সংগ্রাম এবং নিজ দেশ গ্রীসের অর্থনৈতিক অচলাবস্থার জীবন্ত মুহূর্তগুলো ফ্রেমবন্দি করে প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের বর্ষসেরা ফটোগ্রাফার বা ‘ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হয়েছেন ইয়ানিস বেহরাকিস।
মানবতার মর্মস্পর্শী বর্ণনায় তার ছবিগুলো যেনো কথা বলে। ক্যামেরার লেন্সে সিরিয়-লেবানিজ অভিবাসীদের দুঃখগাথা আর গ্রীসের মন্দার স্থিরচিত্র যেনো প্রামাণ্য দলিল। প্রকৃতি আর প্রতীকী আশ্রয়ে সংগ্রামী মানুষের কথা ইয়ানিস তুলে ধরেছেন চমৎকার ভাবে।
বর্ণনাধর্মী ছবিগুলো যেনো একেকটি গল্প বলে যায়।
সূর্যাস্তের অপরূপ দৃশ্য ম্লান করে দেয় ছোট ডিঙিতে চেপে বসা অসহায় মানুষগুলোর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ।
একদিকে বিলাসীতা আরেক দিকে বিপন্নতা। এক পৃথিবীর এতো বৈষম্য চোখে আঙুল দিয়ে দেখায় এই ছবি।
ছবিটি বেহরাকিসের অন্যতম সেরা ছবি। গুণী এই চিত্রগ্রাহক শুরুতে ভেবেছিলেন শরণার্থীদের কেউ হয়তো পানিতে পড়ে গেছে। তাকে অবাক করে দিয়ে ভুস করে পানির ওপরে লাফিয়ে ওঠে ডলফিনটি। ইউরোপের শাসকরা শরণার্থীদের নিয়ে শঙ্কিত হলেও স্বাগত জানাতেই যেনো এসেছিলো ডলফিনটি।
সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে এসেও স্বস্তি নেই ওদের। জেঁকে বসা শীতে জুবুথুবু জীবনের কষ্ট নীরবে বলে যায় থার্মাল কম্বলের নিচের এই নিষ্পাপ মুখটি।
এরকম আশ্রয়ের অজস্র মুহুর্ত তুলেছে, দেখেছে, দেখিয়েছে তার ক্যামেরা।
কখনো আবার কিছু না বলেই বলেছে অনেক না বলা কথা।
কেবল মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ উপদ্রুত মানুষ নয় ইয়ানিস বেহরাকিসের ক্যামেরা বলে যায় গ্রীসের অর্থনৈতিক সঙ্কটের গল্প।
গ্রীসের হার না মানা সাহসিকতার সাক্ষীও হয়েছে তার ক্যামেরা। সমুন্নত পতাকার এই ছবি ইঙ্গিত দেয় টিকে থাকার।