বাংলাদেশে আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বৈরী আবহাওয়ায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) শুভেচ্ছা দূত ও অভিনেত্রী ক্যাট ব্ল্যাচেট। তিনি মনে করেন, আগামী কয়েকমাসের মধ্যে বাংলাদেশে মৌসুমি প্রভাব থেকে রক্ষা পেতে এখন থেকেই সর্তক হতে হবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের। কারণ আসন্ন বৃষ্টিপাত, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। বাংলাদেশে প্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের কারণে প্রাকৃতিক বন, সামাজিক বনায়নের গাছ কাটা ও পাহাড় ধ্বংসের পাশাপাশি জীববৈচিত্র পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। যেসব জায়গায় তারা ক্যাম্প করে আছে সেগুলো কয়েকমাস আগেও ছিল গহীন বন আর হাতির অভয়ারণ্য। বর্তমানে বৃষ্টির প্রকোপ না থাকার কারণে কিছু স্বস্তি থাকলেও বর্ষাকালে ভয়াবহ পাহাড় ধসে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের প্রাণহানি হতে পারে বলে অনেক আগে থেকেই আশঙ্কা করে আসছেন পরিবেশ সংশ্লিষ্টরা। ক্যাম্প অঞ্চলের পাহাড়গুলো অন্যদেশের পাহাড়গুলোর মতো পাথুরে না, বেশির ভাগই বালু ও আঠালো মাটি দিয়ে তৈরি। রোহিঙ্গারা এইসব পাহাড় কেটে রাস্তা, পাকা বাড়ি, মসজিদ-মাদ্রাসা ও বাজার তৈরি করেছে। যার ফলে পাহাড় তার স্বাভাবিক আকার ও পাহাড়ের মাটি তার স্থায়ীত্ব শক্তি হারিয়েছে। এ অবস্থায় ছোট থেকে মাঝারি বৃষ্টিতে যেকোন ধরণের মানবিক বিপর্যয় নিয়ে আসতে পারে। বিষয়টি আমাদের ভাবাচ্ছে। পাবর্ত্য এলাকায় গত বছর ঘটে যাওয়া স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড় ধস থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি। রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফেরত না যাওয়া পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার জন্য নোয়াখালীর ভাসানচরে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পুনর্বাসন কার্যক্রম চলছে, সেখানে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গাকে সাময়িকভাবে আশ্রয় দেয়া হবে বলে সরকারি বিভিন্ন তথ্য ও গণমাধ্যমে প্রকাশ। বাকি আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে কোথায় রাখা হবে তা এখনও অনিশ্চিত। বড় ধরণের মানবিক বিপর্যয় এড়াতে সাময়িক নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কূটনীতিক প্রক্রিয়া জোরদার করতে সংশ্লিষ্টরা আরও আন্তরিক হবেন বলে আমাদের আশাবাদ।