চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

রোজা রাখা না রাখার সুফল কুফল

মহান আল্লাহ তা‘আলা, যিনি সর্বশক্তিমান ও বিশ্ব বিধাতা। আর ইসলামী শরিয়তে রোজার মর্যাদা ও অবস্থান তথা স্তর জানান দিয়ে তিনি ঘোষণা করছেন,“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা খোদাভীতি অর্জন করতে পারো”। (আল-কুরআন)।

হযরত ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-“ইসলাম ৫টি খুঁটির উপর দণ্ডায়মান-(১) এ কথা সাক্ষ্য দেওয়া যে, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোনো উপাস্য নেই ও মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর প্রেরিত রাসুল, (২) নামাজ কায়েম করা, (৩) যাকাত প্রদান করা, (৪) হজ্জ পালন করা ও (৫) রমজানে রোজা আদায় করা (বুখারী ও মুসলিম)”। উপরিউক্ত কুরআনের ভাষ্য ও হাদিসে রাসুলের বর্ণনা থেকে এ কথা আমরা অবগত হলাম যে, রোজা হলো মুসলমান-ঈমানদারের জন্য একটি ফরজ বা অত্যাবশ্যকীয় কর্ম। পবিত্র কুরআন ও হাদিস শরীফে রোজা পালন, নিয়ম-কানুন, ফজিলত ও না রাখার কুফল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচিত হয়েছে।

হযরত আবু উমামা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,“একদিন আমি স্বপ্নে দেখলাম যে, একটি সম্প্রদায় উল্টোভাবে ঝুলছে। তাদের গলা ফাড়া এবং তা থেকে রক্ত ঝরছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম এ সকল লোক কারা? বলা হল, এরা ঐসব ব্যক্তি যারা বিনা কারণে রমজান মাসের রোজা ভঙ্গ করেছিল তথা রোজা রাখেনি (সহীহ ইবনে খুযাইমাহ)”।

অপরদিকে প্রসিদ্ধ সাহাবি হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,“যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েছে আর সেটার রোজা রাখেনি, সেই ব্যক্তি হতভাগা। যে ব্যক্তি আপন পিতা-মাতাকে কিংবা উভয়ের যে কোনো একজনকে পেয়েছে কিন্তু তার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করেনি, আর যার নিকট আমার নাম উল্লেখ করা হয়েছে কিন্তু সে আমার উপর দরূদ শরীফ পাঠ করেনি,সেও হতভাগা (মাজমাউয যাওয়ায়িদ)”।

একই বিষয়ে আরেকটি হাদিস প্রসিদ্ধ সাহাবি হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,“ঐ ব্যক্তির নাক ধুলায় মলিন হোক, যার নিকট আমার নাম নেওয়া হয়েছে কিন্তু সে আমার উপর দরুদ পড়েনি, ওই ব্যক্তির নাক ধুলায় মলিন হোক, যে রমজান মাস পেয়েছে কিন্তু তার মাগফিরাত হওয়ার আগেই সেটা তার কাছ থেকে অতিবাহিত হয়ে গেছে (মুসনাদে আহমদ)”।

সম্মানিত পাঠক, একদিকে রোজা পালন করা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আমাদের উপর ফরজ করে দিয়েছেন, অপরদিকে রোজা না রাখার কুফল আমাদের সামনে প্রিয় নবীজী স্পষ্টভাবে অঙ্কিত করেছেন। আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা‘আলা বলছেন, “আমি জ্বীন ও মানব জাতিকে কেবল আমার ইবাদত করার জন্য সৃজন করেছি (আল-কুরআন)”। প্রিয় নবীজী কঠোর সতর্ক সংকেত দিয়ে ইরশাদ করেছেন, “যে ব্যক্তি রমজানের একদিনের রোজা শরিয়তের অনুমতি ও রোগাক্রান্ত হওয়া ছাড়া ভেঙ্গেছে তথা পালন করেনি, তাহলে সমগ্র মহাকাল যাবৎ রোজা রাখলেও সেটার কাযা আদায় হবে না (বুখারী)”।

আসুন, একজন আল্লাহ তা’আলার বান্দা ও রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত হিসেবে আমাদের উপর অর্পিত অত্যাবশ্যকীয় কর্ম সিয়াম তথা রোজা পালন করি ও দুনিয়াতে শান্তি ও পরকালের মুক্তির পথকে সুগম করি।