চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

রেশন ব্যবসায়ী থেকে ‘র‌্যাব ও সিআইডি কর্মকর্তা’ পরিচয়ে প্রতারণা

আবুল কালাম আজাদ ওরফে মোস্তাফিজুর রহমান (৫৯) নিজেকে কখনো র‌্যাব ও কখনো সিআইডির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অবৈধভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে আসছিল। প্রতারণামুলক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সে র‌্যাবের সীল লাগানো বিশেষ টি-শার্ট পরিধান করত।

রোববার রাতে ভুয়া র‌্যাব ও সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করা প্রতারক চক্রের মুল হোতা আবুল কালাম আজাদকে রাজধানীর শ্যামলী এলাকা থেকে আটক করে এলিট ফোর্স র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-২)।  এসময় তার কাছ থেকে র‌্যাবের লোগোযুক্ত ভুয়া পরিচয় পত্র উদ্ধার করা হয়।

২০১৫ সালে কচুক্ষেতে রেশন ব্যবসায় নিজেকে জড়িত করলেও পরে ভুয়া র‌্যাব ও সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রথমে সখ্যতা গড়ে তোলার পর বাজারমূল্য বা পাইকার মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে সরকারী সাপ্লাইয়ের রেশন সামগ্রী লেনদেন করার প্রলোভন দেখাত এবং বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণের জন্য স্যাম্পল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ব্যান্ডের তেল, ডাল ইত্যাদি প্রদান করেছিল। এক পর্যায়ে ক্রেতাকে আকৃষ্ট করার পর সরকারী রেশন নগদমূল্যে কিনতে হয় মর্মে বুঝিয়ে ক্রেতার চাহিদা মাফিক অর্ডারের অগ্রিম মূল্য গ্রহণ করার পর লাপাত্তা হয়ে যেত।

র‌্যাব-২ এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মেজর মোহাম্মদ আলী চ্যানেল আই অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

মেজর মোহাম্মদ আলী বলেন: রোববার র‌্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানা এলাকায় র‌্যাব ও সিআইডি অফিসার পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি চাঁদা আদায় করছে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে র‌্যাব ও সিআইডি অফিসার পরিচয় দানকারী আবুল কালাম আজাদ ওরফে মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আবুল কালাম র‌্যাবকে জানায় বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ীসহ মাদক ব্যবসায়ীদেরকে সে র‌্যাব ও সিআইডি পুলিশের কর্মকর্তা হিসাবে পরিচয় দিয়ে হুমকি ও ভীতি প্রদর্শণ করে অবৈধভাবে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে আসছিল।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষিমার্কেট এলাকার দুইজন ব্যবসায়ীকে রেশন দেওয়ার নাম করে প্রত্যেকের কাছ থেকে সে বিশ হাজার টাকা এবং সাভার নবীনগর এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনদেরকে টিভি, ফ্রিজ, সাইকেল দেওয়ার নাম করে এক একজনের নিকট থেকে ৩০ হাজার টাকা গ্রহণ করে। আর প্রতারণা করার পর সে ঘন ঘন তার ঠিকানা পরিবর্তন করতো।

র‌্যাবের সীল লাগানো বিশেষ টি-শার্ট গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি কোথায় পেল জানতে চাইলে র‌্যাব-২ এর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: দুই বছর ধরে সে এই প্রতারণা কার্যক্রম পরিচালনা করত। সে নিজেই দর্জির কাছ থেকে এ টি-শার্ট গুলো বানিয়ে নিত। দর্জিকে দিয়ে সাধারণ একটি কালো টি-শার্টে সে হলুদ এম্বোডারি করে র‌্যাব লিখে নিত।

গ্রেপ্তারকৃত আবুল কালাম আজাদের নামে শেরে বাংলা নগর থানায় একটি মামলা করা হয়েছেও বলে জানান তিনি।