প্রবাসীদের উৎসাহিত করে বৈধপথে রেমিট্যান্স আহরণ বাড়ানোর উদ্যোগের অংশ হিসেবে চতুর্থবারের মতো ৩৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।
ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাস করছেন। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্সই রিজার্ভের বড় যোগান। রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। কারণ তারা দেশের অর্থনীতিতে সাইলেন্ট কন্ট্রিবিউটর (নীরব অবদানকারী)।
ব্যাংকগুলোকে উদ্দেশ্য করে গভর্নর বলেন, অবৈধ পথে স্বল্প সময়ে টাকা পাঠানো যায় বলেই প্রবাসীরা সেসব পথ বেছে নেয়। তাই প্রতিযোগীতার বাজারে টিকতে এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স আহরণ বাড়াতে ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। কিভাবে স্বল্প সময়ে প্রবাসীদের টাকা বাংলাদেশে পাঠানো যায় সে বিষয়ে কার্যক্রম বাড়াতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান প্রবাসীদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা বিদেশে অনেক কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করেন। এই অর্থ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। তবে অবৈধ পথে না পাঠিয়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে টাকা পাঠালে দেশের অর্থনীতি আরো সমৃদ্ধ হবে।
তিনি বলেন, বিদেশে আমরা শ্রম আবাস ও বাণিজ্য আবাস গড়তে চাই। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলোকে আরো বেশি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
চার ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড-২০১৬ বিজয়ীদের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণকারী তফসিলি ব্যাংক ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে- ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, রাষ্ট্রায়াত্ত- অগ্রণী, সোনালী ও জনতা ব্যাংক।
অনিবাসী বাংলাদেশি মালিকানা ঋণ এক্সপেন্স হাউজ ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে- যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত প্লাসিড এনকে কর্পোরেশন ও সানম্যান গ্লোবাল এক্সপ্রেস কর্পোরেশন, ইতালির ন্যাশনাল এক্সচেঞ্জ কো. এসআরএল ও যুক্তরাজ্যের এনইসি মানি ট্রান্সফার।
এছাড়া সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী (প্রবাসী) ক্যাটাগরিতে ২১ জনকে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। আর বন্ডের বিনিয়োগকারী ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন আরও পাঁচজন।
সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণকারী (প্রবাসী) ও বন্ডের বিনিয়োগকারী ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাস করছেন। বাকি ৯ জন যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, কাতার ও অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন।
এর আগে ২০১৪ সাল থেকে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই বছর সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স পাঠানো ২০ জনকে এবং বন্ডে বিনিয়োগকারী ২৫ জনকে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়েছিল। প্রবাসী বাংলাদেশিদের ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশন প্রক্রিয়ার আওতায় নিয়ে আসা এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণে উৎসাহিত করার জন্যই চালু করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিট্যান্স অ্যাওয়ার্ড।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব নমিতা হালদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির ও ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী প্রমুখ।