বিভক্তি ও অসহিষ্ণু পরিবেশ দূর করে দেশের রাজনীতিতে স্বস্তির জায়গা ফিরিয়ে আনতে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে সৌহার্দ্যের হাত বাড়িয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। পদ্মা সেতুর পাশাপাশি অনেক সেতুর মতো রাজনীতিতে তিনি সৌহার্দ্যের সেতু তৈরি করার ঘোষণাও দিয়েছেন।
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। দেশের বর্তমান রাজনীতিতে বিভাজনের বিষয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এ পরিবেশের দায় সকল রাজনীতিবিদের বলে দাবি করেন। কয়েকযুগ ধরেই ধীরে ধীরে এই অবস্থা তৈরি হয়ে আসছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দাবি করে আসলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজনীতিতে এই বিভক্তি আর বিষবাষ্পের প্রভাব বেড়েছে। রাজনৈতিক এই নেতিবাচক পরিবেশ শুধু রাজনীতিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, তা এখন দেশের ক্রীড়াঙ্গন, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও ছড়িয়ে গেছে।
ওবায়দুল কাদেরের এই ইচ্ছার পরে রাজনীতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে কিনা, তা স্বাভাবিক কোনো সূত্রে হয়তো বোঝা যাবে না। তারপরেও প্রতিপক্ষ ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতার এই উপলব্ধি বেশ ইতিবাচক বলে আমরা মনে করি।
আরেকটি বিষয় লক্ষ্যনীয় যে, বিভিন্ন নির্বাচনে দেশের আরেকটি বড় দল বিএনপির অংশগ্রহণ। তারা আসন্ন ঢাকা সিটি নির্বাচনেও অংশগ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ইভিএম পদ্ধতিতে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তবে সুষ্ঠু হবে না জেনেও গণতন্ত্রের স্বার্থে ঢাকা সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছে বিএনপি। এবিষয়টিও ইতিবাচক। যদিও ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন বর্জনের পর থেকে অনুষ্ঠিত আর কোন নির্বাচন বর্জন করেনি বিএনপি। তবে জাতীয়, স্থানীয় ও সিটি নির্বাচনের সবগুলোতেই অংশ নিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি বলে অভিযোগ করেছে দলটি। নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে তাদের যে বিশ্বাসের ঘাটতি আছে, তা দূর করতে নির্বাচন কমিশনসহ সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে। কারণ যারা ক্ষমতায় থাকে তাদের দায়িত্ব একটু বেশি থাকে।
সমস্যা ও সম্ভাবনা আসলে সবসময়ই কমবেশি থাকবে, এসব মেনেই সার্বিক পরিস্থিতি ও দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক নিয়মে এগিয়ে যায়। তবে রাজনৈতিক বিভক্তি ও বৈরি পরিবেশ না থাকলে সেযাত্রা আরো গতিশীল হয়। রাজনৈতিক নেতাদের সদিচ্ছায় দেশের রাজনীতিতে যে পরিবর্তনের আশাবাদ তৈরি হয়েছে তারা সুফল জনজীবনে প্রতিফলিত হোক, এই আমাদের প্রত্যাশা।