সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ২২ রানে হারিয়ে প্লে অফ নিশ্চিত করল কালকাতা নাইট
রাইডার্স। কলকাতার দেওয়া ১৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে কেকেআরের
স্পিনারদের অসাধারণ বোলিংয়ে হায়দরাবাদ ইনিংস শেষ হয় ১৪৯ রানে।
তবে কলকাতার
কাছে হেরে গেলেও প্লে অফের শেষ চার দলের মধ্যে পয়েন্ট টেবিলে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মুস্তাফিজরা।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে ২৮ রানের প্রয়োজন ছিল হায়দরাবাদের। রাজপুটের ওভারের প্রথম বলেই আউট হন ভুবেনশ্বর। পরের পাঁচটি বল থেকে পাঁচটি রানই নেয় হায়দরাবাদ।
মূলত কলকাতার স্পিন পড়তে না পেরেই জয় বঞ্চিত হয় হায়দরাবাদ। কলকাতার তিন স্পিনার সাকিব আল হাসান, সুনীল নারাইন আর কুলদ্বীপ সিংয়ের ১২ ওভারে মাত্র ৮৮ রান সংগ্রহ করতে পারে হায়দরাবাদ। বিনিময়ে উইকেট হারায় ছয়টি। যার মধ্যে নারাইন ২৬ রান নেন তিনটি, সাকিব ৩৪ রানে নেন একটি আর কুলদ্বীপ ২৮ রানে দুই উইকেট।
১৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমেই ঝড়ো সূচনা এনে দেয় দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও শিখর ধাওয়ান। তবে দলীয় ২৮ রানের মাথায় নারাইনের বলে সরাসরি বোল্ড হন ওয়ার্নার (১৮)। তবে আউটের আগের বলেই ওয়ার্নার স্লগ সুইপে নারাইনকে যে ছক্কা হাঁকালেন তা ছিল দৃষ্টিনন্দন।
ওয়ার্নার ফিরে গেলেও থেমে থাকে নি আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও ব্যাটিংয়ে প্রমোশন পাওয়া নামান ওঝা। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তারা ৫৮ রান যোগ করেন। ধাওয়ান তুলে নেন আইপিএলের চতুর্থ ফিফটি। ধাওয়ান ৩০ বলে চারটি চার ও তিনটি ছয়ে করেন ৫১ রান।
কুলদ্বীপের বলে ধাওয়ানের আউটের পরেই ফিরে যান ১৫ রান করে ফিরে যান ওঝা। হিটার যুবরাজ ১০ বলে এক চার ও দুই ছক্কার ১৯ রানের ক্যামিও ইনিংসটিকে বড় হতে দেয়নি সাকিব আল হাসান।
দলীয় ১১০ রানে সাকিবের বলে যুবরাজের ফিরে যাওয়ার পরেই কলকতার স্পিনের বিষ ছড়িয়ে যায় হায়দরাবাদের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে।
১১৫ রানে সাকিবের থ্রোতে ইনফর্ম দীপক হুদার (২) রান আউট জয় থেকে ছিটকে দেয় হায়দরাবাদকে, এর দুই রান পরেই শেষ প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান কেন উইলিয়ামসন (৭) রানে আউট হলে পরাজয় নিয়ে শেষ চারে পৌঁছায় মুস্তাফিজ ওয়ার্নাররা।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ইউসুফ পাঠানের ফিফটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ছয় উইকেটে ১৭১ রান করে কলকাতা।
ইডেন গার্ডেন্সে ওপেনিং জুটিতে শুরুটা ভালোই করেছিল রবিন উথাপ্পা ও গৌতম গাম্ভীর। তবে এ জুটি বেশিদূর এগোতে পারেনি। দলীয় ৩৩ রানের মাথায় বারিন্দার স্রানের বলে উইলিয়ামসনের কাছে তালুবন্দী হয়ে সাজঘরে ফেরেন উথাপ্পা (২৫)।
এরপর কেকেআরকে অফ স্পিনের ফাঁদে ফেলেন দীপক হুদা। দলীয় ৪৮ ও ৫৭ রানের মাথায় দীপক প্যাভিলনে পাঠান কলিন মুনরো ও অধিনায়ক গাম্ভীরকে। তবে মিডল অর্ডারের মানিশ পান্ডে আর ইউসুফ পাঠান দলকে সাময়িক বিপদ থেকে রক্ষা করে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে তারা ৮৭ রান যোগ করেন।
মানিশ পান্ডেকে (৪৮) রানে আউট করে জুটি ভাঙ্গেন ভুবেনশ্বর কুমার।তবে আরেক প্রান্ত ঠিকই আগলে রেখে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ইউসুফ পাঠান। তিনি ৩৪ বলে তিনটি চার ও দু’টি ছয়ে করেন অনবদ্য ৫২ রান।
বাংলাদেশের বাঁ হাতি কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ দলের ১১তম ওভারে নিজের প্রথম ওভার করতে এসে মাত্র ছয় রান দেন। দ্বিতীয় ওভারে একটু খরুচে বোলিং করেন তিনি। ওই ওভারে দেন ১৪ রান। দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসেই সফল হন কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ।
১৭তম ওভারে বল করেতে এসে ফিজের ফুল টস বল সামলাতে গিয়ে শট এক্সটা কাভারে হেনরিকের হাতে সহজ ক্যাচ দেন হার্ড হিটার জেসন হোল্ডার। উনিশ তম ওভারে মুস্তাফিজ দেন মাত্র তিন রান। শেষ পর্যন্ত চার ওভারে ৩২ রান দিয়ে ১ উইকেট শিকার করেন মুস্তাফিজ।
তবে ব্যাট হাতে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশের অন্যতম অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসন। মাত্র সাত করে ফিরতে হয়েছে তাকে। হায়দরাবাদের বোলারদের মধ্যে ভুবেনশ্বর কুমার ও দীপক হুদা দুটি করে উইকেট নেন।