চ্যানেল আই প্রেজেন্টস লাক্স সুপারস্টার ২০১৮-এর মুকুট পরেছেন মিম মানতাসা। ১২ হাজার প্রতিযোগী টপকে শুক্রবার (১১ মে) রাতে সেরা মুকুট উঠেছে এই রূপবতীর মাথায়। এরপর রাতারাতি বদলে গেছে মানতাসার জীবন। সবখানেই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে তিনি। দেশের সবচেয়ে বড় তারকা নির্বাচন প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মানতাসা আজ (শনিবার) বিকেলে কথা বললেন চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে…
গতকালও ছিলেন আর দশটা মেয়ের মতো একজন। আজ আপনি সুপারস্টার। ভাবতে কেমন লাগছে?
আমি যেমন ছিলাম, তেমনই আছি। পার্থক্য তেমন মনে হচ্ছে না। শুধু মনে হচ্ছে, আমার দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে। অনেকেই আমাকে নিয়ে অনেক কিছু প্রত্যাশা করছেন। সেসব পূরণ করতে পারবো কিনা সেটা নিয়ে একটু চিন্তা হচ্ছে।
সুপারস্টার হওয়ার অনুভূতি নিশ্চয়ই ভালো। এমন প্রতিযোগিতায় কীভাবে যুক্ত হলেন?
ছোটবেলা থেকে চ্যানেল আই-লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতা সম্পর্কে জানতাম। জাকিয়া বারি মম, বিদ্যা সিনহা মিম আপুরা যখন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন তখন থেকেই এই প্রতিযোগিতার প্রতি আমার দুবর্লতা তৈরি হয়। মিম আপু যে বার বিজয়ী হয়েছিলেন আমি তখন স্কুলে পড়ি। আর এবার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার আগে খুব প্ল্যান করে কিছু করিনি। মনে হয়েছিল, আমার ক্যারিয়ার যদি এদিকে প্রতিষ্ঠা করা যায়! নিজেকে একবার চান্স দেয়া দরকার। এই ভেবেই প্রতিযোগিতায় অংশ নেই।
আপনি কি ভাগ্যের কাছে নিজেকে ছেড়ে দিয়েছিলেন?
ভাগ্য ঠিক না, নিজেকে একবার দেখতে চেয়েছি আমি কী কী পারি। কতদূর যেতে পারবো। আমাকে দিয়ে কী কী হবে! কারণ আমি সাধারণ একজন মেয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই, ক্লাস করি। এর বাইরে আমি আমার কিছু করা হয়নি।
কখনো মনে হয়েছিল, ‘আমি বোধহয় পারবো না’!?
পারবো না এ রকম মনে হয়নি। আবার বিজয়ী হবো এমনটাও কখনো মনে হয়নি।
টোটাল জার্নিটা কেমন ছিল?
খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল পুরো জার্নি। সঙ্গে এক্সাইটমেন্ট ছিল। কখনও ভালো, আবার কখনও খারাপ। মানে মিশ্র মনে হয়েছে।
‘চ্যানেল আই প্রেজেন্টস লাক্স সুপারস্টার’ প্রতিযোগিতার সঙ্গে প্রায় চারমাস ছিলেন। কী শিখলেন?
অনেক কিছুই শিখেছি। আগে আমি কখনো নাচিনি, অভিনয় করনি। গাইনি, র্যাম্পে হাঁটিনি। বলা যায়, সবকিছুই এখান থেকে শিখেছি। এখান থেকে আমার সবকিছুতেই হাতেখড়ি। আমি আসলে একজন পেইন্টার। পেইন্টিং ছাড়া জীবনে কিছুই পারতাম না। তবে হ্যাঁ আমি কিছু বিতর্ক প্রযোগিতা ও কবিতা আবৃতি করেছি এখানে আসার আগে। এককথায় এই প্ল্যাটফর্মে যেসব করানো হয়েছে, সবকিছুই আমার কাছে ছিল নতুন।
বাংলাদেশে মিডিয়া সম্পর্কে আপনার ধারণা কী?
এদেশের মিডিয়া নিয়ে আমার ধারণা ভালো। এটা নির্ভর মানুষের উপর। সে কীভাবে নিচ্ছে। আমার কাজ, আমার লাইফ কীভাবে সাজাবো, ক্যারিয়ার কীভাবে সাজাবো, প্রতিটি মানুষের নিজের উপর নির্ভর করে। আমারও তেমন।
আপনার কোনো ‘আইডল’ আছে?
অনেক মানুষকে ভালো লাগে। কিন্তু আমার কোনো আইডল নেই। আইডল মানে এমন নয় যে, আমি কাউকে ফলো করি! ফলো করলে নিজস্বতা হারিয়ে যায়। আমি নিজে কিছু একটা হবো। আমার নিজের একটা পরিচয় হবে। আমি কারো মতো হতে চাইনা। বরং অন্যরা আমার থেকে কিছু শিখুক। শিখে তারা কিছু একটা করুক। তারমানে এই নয় যে, আমার মতো হতে হবে!
মডেলিং, নাটক, সিনেমা। নিজেকে থিতু করতে চান কোথায়?
আসলে আমি এভাবে এখনও ভাবিনি। কারণ আমি একদম নতুন। আগে শিখতে চাই। অভিনয়টা আগে শিখতে চাই। অভিনয় করার ইচ্ছে বেশি, মডেলিংটা পরে। আমি এখন অনেক কিছু ভালো জানি না। অনেক অনেক জানতে চাই। তারপর কাজ করবো।
নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন…
আমরা তিন বোন ও এক ভাই। আমার বড় দুই বোন রয়েছে আর ছোট একটা ভাই। বাবা সরকারি চাকুরীজীবী। নিজের জেলা পাবনা হলেও বাবার চাকরির কারণে দেশের অনেক জায়গায় থাকা হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা ও রাজশাহীতে বেশি থেকেছি। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছি পাবনা থেকে। বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলায় চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আমি। হলে থাকা হয়নি। বাসা থেকে নিয়মিত ক্লাস করেছি।