নানা আয়োজনে বাংলাদেশ ৪৯তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করছে। বাঙালির জাতীয় জীবনের অন্যতম পাওয়া এই দিনে। তবে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়াটা বড় অর্জন হলেও এখনও নানা ক্ষেত্রে অপ্রাপ্তি সেই বড় অর্জনকে ম্লান করেছে। বিশেষ করে ঘুষ-দুর্নীতি, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ, মাদকের মতো বিষয় দেশের অগ্রগতিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর স্বাধীনতার ৪৮ বছরে মূলচেতনা থেকে অনেকটা সরে আসায় জাতির মধ্যে বিভেদ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এসব নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সীমিত পরিসরে আমরা উদ্যোগ নিতে দেখেছি। সেই উদ্যোগ কখনো সরকার, কোনো প্রাতিষ্ঠানিক, কখনো বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক ছিল। তবে সার্বিকভাবে সেসব উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত কাজ করেনি। আর করেনি বলে এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা নাম দুর্নীতি। যে সমস্যা জাতিকে কুঁড়ে কুড়েঁ খাচ্ছে।
আজকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে বলেছেন তিনি। বিশেষ করে শিশুদের উদ্দেশে। কেননা তার মতে, আজকের শিশুদের মধ্যেই কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে, মন্ত্রী হবে, বড় বড় চাকরি করবে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সাথে আমরাও একমত। আমরা বিশ্বাস করি আধুনিক বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে হবে শিশুদেরকেই। এই মুহূর্তে বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের যে ধরনের অগ্রগতি, তাতে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দক্ষিণ এশিয়ার উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে।
এরই মধ্যে প্রবৃদ্ধি অর্জনে আমরা তার বাস্তব প্রমাণ দেখেছি। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরে (২০১৮-১৯) জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৮.১৩। শুধু তাই নয়, মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯০৯ ডলার।
তবে প্রবৃদ্ধি বাড়লেও দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়েছে বলে দাবি করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের বক্তব্য; ৬ষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান এবং নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎখাতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। সার্বিকভাবে দেশে সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো, শিক্ষার মান বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির কথা বলছেন।
আমরা মনে করি, যে চার মূলনীতির উপর ভিত্তি চার (গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্র) মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল; তা পুরোপুরি ফিরিয়ে আনা না গেলে স্বাধীনতার প্রকৃত অর্জন কোনোদিনই সম্ভব হবে না।