টাঙ্গাইল পৌরসভার কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান মোর্শেদের বিরুদ্ধে এবার স্ত্রীকে হত্যা ও গুমের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোর্শেদের দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবা সৈয়দ শরিফ উদ্দিন বাদি হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ ও আরো অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হচ্ছে, টাঙ্গাইল শহরের বিশ্বাস বেতকা এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে আতিকুর রহমান মোর্শেদ, মৃত আ. মোমেনের ছেলে মুন্সী তারেক পটন, মৃত লুৎফর রহমানের ছেলে পারভেজ খান রনি, সোহেল ওরফে বাবু, দুলাল সূত্রধরের ছেলে অন্তর সূত্রধর, আতিকুর রহমান মোর্শেদের প্রথম স্ত্রী সুমা, মুন্সী তারেক পটনের স্ত্রী লিনা, শামীম আল মামুনের ছেলে রাফসান, মৃত আজিজ মিয়ার ছেলে আয়নাল মিয়া।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালে টাঙ্গাইল পৌর শহরের বিশ্বাস বেতকা এলকা থেকে মোর্শেদ ও তার লোকজন সরিফ উদ্দিনের মেয়ে পিংকিকে তুলে নিয়ে জোর পূর্বক বিয়ে করে। পরে ২০১৭ সালে পটনের বাড়ীতে আসামিরা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ গুম করেন।
টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ জানান, টাঙ্গাইল সদর থানার ওসিকে তদন্ত শেষে আদালতের বিচারক শামসুল আলম প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছেন।
টাঙ্গাইল পৌরসভার ১৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আতিকুর রহমান মোর্শেদকে গত বৃহস্পতিবার (১৯ আগস্ট) গোয়েন্দা পুলিশ ও সদর থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে পৌরসভার সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার বিশ্বাস বেতকা এলাকার বাড়িতে তল্লাশী চালিয়ে দুইটি বিদেশি পিস্তল, ছয় রাউন্ড গুলি ও দুটি ম্যাগজিন উদ্ধার করে পুলিশ। গত শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোর্শেদকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। গতকাল সোমবার তিন দিনের রিমান্ড শেষে মোর্শেদকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর মোশারফ হোসেন জানান, রিমান্ডে মোর্শেদ জিজ্ঞাসাবাদে তার ওই অস্ত্র এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য দিয়েছে। তার দেয়া তথ্য যাচাই করা হচ্ছে।
টাঙ্গাইল সদর থানা সূত্র জানায়, আতিকুর রহমান মোর্শেদের বিরুদ্ধে দুই যুবলীগ নেতা হত্যা, ছাত্রদল নেতা রেজা হত্যা, ব্যবসায়ী তুহিন হত্যা মামলাসহ চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের এক ডজন মামলা দায়ের হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মোর্শেদ টাঙ্গাইল শহর ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। পরে জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে দলীয় পদ না থাকলেও শহর আওয়ামী লীগের দলীয় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশ নিতেন। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা ছাত্রদল নেতা রেজা হত্যা মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।