
বিশ্বকাপের অন্যতম আরাধ্য ম্যাচে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান। দুই রাজনৈতিক চিরবৈরী দেশের লড়াইয়ে উত্তেজনায় কাঁপছে ক্রিকেটবিশ্ব। হাই-ভোল্টেজ ম্যাচে দলীয় লড়াইয়ের ভেতরে থাকবে খণ্ডখণ্ড লড়াইয়ের রসদ। বিরাট কোহলি এবং মোহাম্মদ আমিরের ব্যক্তিগত লড়াইও জমে ওঠার অপেক্ষা। কোহলি নিজেও আমিরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ব্যাপারে কথা বলেছেন। সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন, জিততে খেলতে হবে দল হিসেবেই।
‘আমি টিআরপি বাড়ানোর জন্য কিংবা রোমাঞ্চকর নিউজের জন্য কিছু বলবো না। প্রতিটি বোলারের শক্তিকেই আপনাকে সম্মান করতে হবে। বোলার নির্বিশেষে আমি সাদা বল কিংবা রঙিন বলের দিকে ফোকাস করি। আপনাকে ভালো বোলারের স্কিলের সম্মান করতেই হবে। এমনকি সাউথ আফ্রিকা ম্যাচের আগে কাগিসো রাবাদাকে নিয়েও আমি একই কথা বলেছি। বিশ্ব ক্রিকেটে ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব বিস্তারকারী বোলার রয়েছে। আমাদেরকে তাদের শক্তি সম্পর্কে সতর্ক হতে হবে এবং একইসঙ্গে রান করার জন্য নিজের সামর্থ্যরে উপরও ফোকাস করতে হবে।’
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই কথার লড়াই। এবার অবশ্য লড়াই জমেনি দুই প্রতিবেশীর মধ্যে। ম্যাচের আগের দিন কোহলি যেমন বিতর্ক এড়িয়ে প্রতিপক্ষকে সম্মান দিয়ে পরিপক্ব অধিনায়কের মতো বলে গেলেন- এসব ব্যক্তিগত লড়াই নয়, দলীয় নৈপুণ্যই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেবে।
২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। সেবার কোহলিসহ তিন টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানকে আউট করে ভারতকে শুরুতেই ছিটকে দেন আমির। এবারও ভারতের বিপক্ষে আমির জ্বলে উঠবেন বলে আশাবাদী পাকিস্তানিরা। তবে চাপের ম্যাচের আগে কোহলি আমিরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়কে একপাশেই সরিয়ে রাখছেন।
‘এটি এমন নয় যে যদি সে (আমির) উইকেট পায় অথবা আমি রান করি তাহলে ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত হয়ে যাবে। দলে আরও ১০ জন খেলোয়াড় রয়েছে। তাদের সবাইকেও ভালো খেলতে হবে। আমি মনে করি না কারো সঙ্গেই আমার প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছে। এগুলো বাহিরের কথাবার্তা। এই ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা এমনকি আমার মনেও আসে না। যদি আপনি একজন বোলারকে বাজেভাবে মোকাবেলা করেন তবে আপনি আউট হবেন। আমার কাছে এটিই সহজ।’
তিন ম্যাচে দুই জয় ও এক ড্রয়ে ৫ পয়েন্ট নিয়ে বেশ শক্ত অবস্থানে আছে ভারত। টানা দুই ম্যাচে সাউথ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। পরে নিউজিল্যান্ড ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয় কোহলিদের।
সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে বড় হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ছন্দে ফেরে পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কা ম্যাচ বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয় পাকিস্তানকে। চতুর্থ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে ব্যাকফুটে চলে যায় সরফরাজের দল। সেমিফাইনালে যেতে শেষ ৫ ম্যাচের কমপক্ষে চারটি জিততে হবে তাদের।
বিগ ম্যাচ জিততে আমিরের দিকে তাকিয়ে থাকবে পাকিস্তান। বড় ম্যাচের চাপ সামলে কীভাবে নৈপুণ্য উপহার দিতে হয় সেটি জানা আছে বলে মন্তব্য করেছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে ১৬ রানে ৩ উইকেট নেয়া আমির, ‘সেটি (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল) ছিল হাই-প্রেসার ম্যাচ। সেই ফাইনাল থেকে আমি শিখেছি। একজন স্ট্রাইক বোলার হিসেবে সবাই-ই চায় আমি উইকেট তুলি। ওইদিনই আমি শিখেছি কীভাবে চাপ সামলাতে হয়।’
বিজ্ঞাপন