বাংলাদেশি নাগরিক কামরুজ্জামানের কাছে নিজেকে প্রিসকা খালিফা নামে পরিচয় দিয়েছিলেন এক বিদেশী তরুণী। পরিচয়টা অবশ্য ফেসবুকের মাধ্যমে। একপর্যায়ে ওই তরুণী জানালেন, লন্ডনের ব্যাংকে তার বাবার নামে কয়েক মিলিয়ন ডলার রাখা অাছে। ওই টাকা তুলতে একজন বিশ্বস্ত লোক প্রয়োজন।
এরই মধ্যে কোটিপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন কামরুজ্জামান। তাই অনেকটা লোভে পড়েই ওই তরুণীর পাতা ফাঁদে পা দেন। এক সময় তাকে বলা হয়, ওই টাকাগুলো তুলতে কিছু প্রসেসিং ফি লাগবে। একাধিক ব্যাংক হিসাব থেকে প্রিসকা খালিফার নামে ২৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা পাঠান কামরুজ্জামান।
এক সময় বুঝতে পারেন প্রতারিত হয়েছেন তিনি। আশ্রয় নেন গোয়েন্দা পুলিশের। তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশের কাছে উঠে আসে এমন আরো কয়েকটি ঘটনার চিত্র।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হাতে আটক চার নাইজেরিয়ান নাগরিকের প্রতারনার বিষয়ে বিস্তারিত জানান গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গার্মেন্টস ব্যবসার আড়ালে ওই নাইজেরীয় নাগরিকরা প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করত।
প্রতারিত কামরুজ্জামানের মত একই অবস্থা বাংলাদেশের আরেক নাগরিক মো. শাহনুর হোসেনের। প্রিসকা খালিফার ফাঁদে পড়ে তাকে হারাতে হয়েছে ৪০ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। তার ক্ষেত্রেও একই পন্থা অবলম্বন করে প্রিসকা।
সংবাদ সম্মেলন করে চার নাইজেরিয়ান নাগরিকসহ আটক সাত জন ও দুই মানবপাচারকারীর বিষয়ে বিস্তারিত জানায় ডিএমপি।
আটককৃতরা হলেন- জন আগডি ইউজিও, লিজা আক্তার, আফেজ, মহসিন শেখ, তাসমিয়া পারভীন, মাইকেল ইউজিনি ব্রাউন ও নামডি কেলভিন।আর মানবপাচারকারী দুইজনের নাম জামাল হোসেন ও মজিবুর রহমান।
আটক মাইকেল ও নামডির স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে আব্দুল বাতেন বলেন, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ গার্মেন্টস ব্যবসার আড়ালে বাংলাদেশী ও বিদেশী নাগরিকের পরস্পর যোগসাজসে প্রতারণামুলকভাবে বাংলাদেশি বিভিন্ন লোকজনের নাম ও একাউন্ট ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করে আসছিল।
সাংবাদিকদের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক বিদেশী নাগরিক অবৈধভাবে বসবাস করে আসছে। এদের মধ্যে আফ্রিকা অঞ্চলের অধিবাসী নাগরিকরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। তারা নানা ভাবে ফাঁদ পেতে এদেশের সহজ সরল ও লোভী প্রকৃতির মানুষকে ধোঁকা দিয় কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে বিদেশে পাচার করছে।