করোনার কারণে শেয়ারবাজার বন্ধ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
রোববার ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও শীর্ষ ১০ ব্রোকারহাউজের সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৈঠকের পর বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান।
ওই বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন ধরে টানা পতন চলছে শেয়ারবাজারে। তাই বৈঠকে স্টেকহোল্ডাররা বাজারের সাম্প্রতিক অস্থিরতার পেছনে করোনা পরিস্থিতির অবনতি এবং বিনিয়োগকারীদের মনে পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাকে প্রধান কারণ হিসেবে তুলে ধরেছেন।
জবাবে কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলেও পুঁজিবাজার বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা নেই। যতদিন ব্যাংক খোলা থাকবে ততদিন শেয়ারবাজারও খোলা থাকবে।
বৈঠকে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতার প্রয়োজনে পর্যায়ক্রমে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের উপর থেকে নির্ভরতা কমিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী নির্ভর করার তাগিদ দিয়েছে বিএসইসি। এ লক্ষ্যে স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের ডিলার অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, বৈঠকে ব্রোকারহাউজগুলো তাদের ডিলার অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি আইনী বিষয়কে কিছুটা বাধা বলে উল্লেখ করেন। ১৯৮৭ সালে প্রণীত একটি আইন অনুসারে, গ্রাহকদের পাশাপাশি ব্রোকার তার ডিলার অ্যাকাউন্টে শেয়ার কিনতে চাইলে আগে গ্রাহকের ক্রয়-আদেশ কার্যকর করতে হবে। পরে ডিলার অ্যাকাউন্টের ক্রয়-আদেশ বাস্তবায়ন হবে। এই শর্তের কারণে ডিলারদের বিনিয়োগ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান তারা।
এই পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি বলেছে, ওই আইনের শর্ত পরিপালনের বিষয়ে কোনো কঠোর অবস্থানে যায়নি বিএসইসি। কেউ আইনের ওই শর্তটি লংঘন করলেও সেটিকে নন-কমপ্লায়েন্স বিবেচনা করা হয়নি, কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেয়া হয়নি। এবারও বিষয়টিকে নন-কমপ্লায়েন্স হিসেবে গণ্য করা হবে না। তাই কোনো ব্রোকার চাইলে গ্রাহকের আগে তার ডিলার অ্যাকাউন্টে শেয়ার কিনতে পারবেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন বলেন, বাজারের সাম্প্রতিক দর পতনের পেছনে কোনো কারসাজি আছে কি-না তাদের জানা নেই। সব সময় তারা বাজার মনিটরিং করেন। এখনও করছেন। সব কিছুই পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।
বিএসইসির সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। সভায় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. রেজাউল করিম, ডিবিএর সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন, বিএমবিএ সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান, ডিবিএ ও বিএমবিএর উর্ধতন কর্মকর্তারা এবং শীর্ষ ১০ ব্রোকারহাউজের প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।