রুপালী পর্দায় উঠে আসবে নব্বই দশক। যে সময়টি নতুন প্রজন্মের স্মৃতিতে গাঁথা। গল্পের ধারণা দিলেন না নির্মাতা রায়হান রাফী। শুধু জানালেন, নির্মাণে থাকবে সর্বাধুনিকতার ছোঁয়া। আরও থাকবে ভরপুর অ্যাকশন। যা বাংলাদেশের সিনেমার দর্শকরা বাংলা সিনেমায় আগে কখনও দেখেনি।
এসব দেখা যাবে সুপারস্টার শাকিব খানের আসন্ন ছবি ‘তুফান’-এ। গত ডিসেম্বরে ঘোষণার পর বর্তমানে এ ছবির প্রি-প্রডাকশনে দৈনিক শতাধিক টেনকিশিয়ান কাজ করছেন। পরিচালক রাফী জানান, চেন্নাইয়ের রামুজি ফিল্ম সিটিতে বাহুবলীর টেকনিশিয়ানরা সেট নির্মাণে কাজ করে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার রাতে ‘তুফান’র প্রি-প্রডাকশনের পাঁচটি স্থিরচিত্র রায়হান রাফী নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। সিনেমাপ্রেমীদের মাঝে সেগুলো ভাইরাল হয়েছে। নানা বিশ্লেষণে সেগুলো নিয়ে তৈরি হয়েছে ইউটিউব কনটেন্ট! স্থিরচিত্রগুলোতে দেখা যায়, ভিন্টেজ লুকে চারপাশ। মস্তবড় দালানের সামনে সেই সময়ের গাড়ি!
সড়কের পাশে সিনেমা হলে ঝুলছে সালমান শাহর ‘মহামিলন’ ছবির পোস্টার। অন্যরকম আবহের এসব প্রি-প্রডাকশনের মিনিয়েচার স্থিরচিত্র দেখে লুফে নেয় চলচ্চিত্র প্রেমীরা।
চ্যানেল আই অনলাইনের সাথে আলাপে রায়হান রাফী বলেন, রামুজি ফিল্ম সিটিতে বড় জায়গা জুড়ে এমন সেট বানানো হচ্ছে। সঠিকভাবে পরিকল্পনার জন্য আমার অফিসে প্রি-প্রডাকশনে এমন মিনিয়েচার বানিয়েছি। বলিউডের বড় বড় ফিল্মের প্রি-প্রডাকশনের প্ল্যানে এভাবে করা হয়। এখানে যে কালার দেখা যাচ্ছে সিনেমাতে এমন কালারে বাড়ি-গাড়ি থাকবে। আসলে কোন দৃশ্য কীভাবে হবে সেগুলো নিখুঁত করার জন্য এভাবে কাজ করছি।
একটি দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে সালমান শাহ-শাবনূরের ‘মহামিলন’ ছবির পোস্টার। এ প্রসঙ্গে রাফী বলেন, গল্পের এক দৃশ্যে দেখা যাবে শহরের একটি স্থানে সিনেমা হলে ওই ছবিটা চলছিল। আমাদের সিনেমা নব্বই দশক দেখাচ্ছি। ওই সময়ের সিনেমা খুব গুরুত্বপূর্ণ। গল্পে সিনেমা হলে অনেক নায়িক-নায়িকার ছবি দেখা যাবে। আগে কিছু বলা যাবে না, তবে এতটুকু বলতে পারি দর্শকরা দেখে আনন্দ পাবে। কারণ তাদের চাওয়াটা আমি বুঝি।
ঘোষণার পর থেকে ‘তুফান’ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহী সিনেপ্রেমীরা। শাকিব খানকে নিয়ে প্রথমবার ছবি বানাতে যাচ্ছেন রায়হান রাফী। দর্শকদের আগ্রহ প্রতিনিয়ত টের পাচ্ছেন তিনি। রাফী বললেন, লাস্ট যে পোস্টটা করেছি আগে ভাবিনি এভাবে ভাইরাল হয়ে যাবে। দর্শক পছন্দ করছে এবং তারা আগ্রহ প্রকাশ করছে এতে করে মনোযোগ বেশি দিতে হচ্ছে। বিশেষ করে দেশের বাইরের ছবিগুলো যেভাবে আগে প্ল্যান থাকে সেটাই করছি।
“শাকিব ভাই, আমি, প্রডাকশন থেকে সবাই চেষ্টা করছি ‘তুফান’র মাধ্যমে এমন কিছু উপহার দিতে, যা বাংলা সিনেমায় কমার্শিয়ালি নতুন মাত্রা এনে দেবে। আমাদের সিনেমাগুলো যেভাবে ব্লকবাস্টার হচ্ছে, আমরা চাচ্ছি এর চেয়ে বড় কিছু করবো। বলিউড যেভাবে অ্যাকশন ফিল্ম বানাচ্ছে এগুলো কয়েকবছর আগেও আমাদের চিন্তার বাইরে ছিল। তাদেরও কেউ না কেউ শুরু করেছিল বলে আজকে তারা পেরেছে। আমরা ‘তুফান’ দিয়ে শুরু করতে যাচ্ছি। কমার্শিয়ালি আমরা এখন যা ভাবছি তার চেয়েও যেন বেশি কিছু হয়। আমাদের বিশ্বাস ‘তুফান’ বাংলা সিনেমায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।”
পিরিওডিক্যাল অ্যাকশন ড্রামা ছবি হবে ‘তুফান’। এটি নব্বই দশকের কোনো সত্য ঘটনা অবলম্বনে কিনা আগেই জানাতে চাইলেন না রাফী। তার কথা, সবকিছু তো আগে বলা যাবে না। অনেকেই নায়িকার নাম জানতে চায়। কিন্তু আমরা সবাইকে সারপ্রাইজ দিতে চাই। সময় মতো সবকিছু জানাবো।
এদিকে, ‘তুফান’ ঘোষণার দিনই শাকিব জানিয়েছেন, ঠিকভাবে বানাতে পারলে এ ছবি দিয়ে বাংলা সিনেমা ১০০ কোটির ক্লাবে প্রবেশ করবে। সত্যিই পারবে? রাফী বলেন, আমরা তো চাই ১০০ কোটি ক্লাবে প্রবেশ করতে। সেভাবেই প্ল্যান করে আগাচ্ছি। আমি মনে করি, তুফান আমাদের শাকিব খানের ক্যারিয়ারে দৃষ্টান্তমূলক ছবি হয়ে থাকবে।
“সত্যি বলছি, ‘তুফান’ অনেক বড় ক্যানভাসের ছবি। আমি তুফান নিয়ে এতো সিরিয়াস যে কারণে রোযার ঈদে আমার ছবি থাকছে না। সব কাজ বাদ দিয়ে তুফান-এ সময় দিচ্ছি। ইনশাল্লাহ আমরা ফেব্রুয়ারির মধ্যে শুটিংয়ে নামবো এবং আগামী কোরবানির ঈদে দর্শকরা তুফান উপভোগ করবেন।”-বলছিলেন রাফী।
ঢাকা/এনই/এমটিএল