চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

‘নেটফ্লিক্স’ এর কোয়ালিটি মাথায় রেখে নির্মিত হয়েছে ‘সাহস’

বললেন অভিনেতা মোস্তাফিজুর নূর ইমরান

‘নারীর শিকল ভাঙার গল্প এটি। গল্পটি নারীর বিদ্রোহী ও প্রতিবাদী সত্তারও।’- মুক্তি প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘সাহস’ এর সারকথা এটুকুই। অন্তত এমনটাই মনে করেন অভিনেতা মোস্তাফিজুর নূর ইমরান। তিনি মনে করেন, ‘সাহস’ নিজেদের গল্পে নিজেদের সিনেমা, এবং সেই সঙ্গে বজায় রেখেছে আন্তর্জাতিক মানও!

গেল বছরেই শুটিং সম্পন্ন হয়েছে ‘সাহস’ এর। এরপর পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ শেষে জমা দেয়া হয়েছিলো সেন্সর বোর্ডে। কিন্তু সেখান থেকেই প্রথমে আসে আপত্তি। জানানো হয়, অশ্লীলতা ও অত্যধিক সহিংসতা থাকায় প্রদর্শনের অযোগ্য ‘সাহস’।

‘সাহস’ নিয়ে এমন আপত্তি উঠায় কিছুটা ভড়কে গিয়েছিলেন সংশ্লিষ্টরা। বিশেষত এই সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখা তরুণ পরিচালক সাজ্জাদ খান নিজের হতাশার কথা জানিয়েছিলেন গণমাধ্যমে। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের সদস্যদের আপত্তির মুখে এই তরুণ জানিয়েছিলেন, ‘সিনেমায় এমন কোনো দৃশ্য নেই, যা প্রদর্শন-অযোগ্য।’

তবে সব বিতর্ক শেষে স্বস্তি এসেছে ‘সাহস’ সংশ্লিষ্টদের মনে। কারণ সম্প্রতি সিনেমাটির কিছু দৃশ্য ও সংলাপ সংশোধন করে পুনরায় জমা দেয়া হয়েছিলো সেন্সর বোর্ডে। এবার আর কোনো আপত্তি আসেনি। মৌখিকভাবে ছাড়পত্রের নিশ্চয়তাও পেয়েছেন। বিষয়টি চ্যানেল আই অনলাইনকে নিশ্চিত করেন ‘সাহস’ এর কেন্দ্রীয় চরিত্র মোস্তাফিজুর নূর ইমরান।

কথা প্রসঙ্গে জানালেন, ‘সাহস’ সিনেমাটি তাদের হৃদয়ের খুব কাছের। বহু মানুষের আন্তরিকতা আছে এই সিনেমাটি হয়ে উঠার পেছনে। তাই বাধ্য হয়ে কিছুটা ‘কম্প্রোমাইজ’ এর পথ বেছে নিয়েছেন।

সিনেমাটি নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত সবাই। মোস্তাফিজুর জানালেন, দেশে এমন জনরার ছবি এরআগে হয়নি। আমরা শেষ পর্যন্ত একটা যুদ্ধের গল্পই বলেছি ‘সাহস’-এ, এবং সেটা এই সময়ের পারস্পেকটিভে বানিয়েছি। যে সিনেমায় সাহস আছে, অন্যায়ের প্রতিবাদ আছে। বাস্তবতা দেখতে পারবেন মানুষ।

সিনেমাটি নিয়ে মুক্তির পরিকল্পনা জানতে চাইলে ‘মহানগর’ এর মলয় চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া ফেলে দেয়া এই অভিনেতা জানান, নেটফ্লিক্সের কোয়ালিটি মাথায় রেখে আমরা ‘সাহস’ সিনেমাটি নির্মাণ করেছি। খরচ হয়েছে অনেক। ক্ষতি মেনে নিয়েই আমরা প্রথমে সিনেমা হলে আগে দেখাতে চাই। আমাদের দেশের সকল মানুষ সিনেমাটা দেখুক, যদি তাদের মধ্যে কিছুটা সাহসের সঞ্চয় হয়!

সিনেমা হলে চলার পর ওটিটিতে মুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নেটফ্লিক্সের জন্য একটা সিনেমার ক্ষেত্রে যেসব মান নিশ্চিত করা প্রয়োজন, তার সবই আমরা ‘সাহস’ এর ক্ষেত্রেও করেছি। গল্প, নির্মাণ ও পারফর্মসহ সমস্ত কিছুতেই সেই কোয়ালিটি আমরা মেন্টেন করেছি। ফোরকে তে শুট করেছি। প্রযোজক হিসেবে এই সিনেমার সাথে যুক্ত হয়েছে শাপলা মিডিয়া। সিনেমা হলে মুক্তির পর পরিচালক হয়তো শাপলা মিডিয়ার সাথে পরামর্শ করে ওটিটিতে রিলিজের বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

মোস্তাফিজুর ভূয়সী প্রশংসা করেন ‘সাহস’ এ তার সহ-অভিনেত্রী নাজিয়া হক অর্ষার। তিনি বলেন, এই সিনেমার গল্পে অর্ষা সেন্ট্রাল লিড। আমার কাছে ইন্টারনেশনাল লেভেলের পারফর্মার সে। এতো দুর্দান্ত লেভেলের এক্টিং, দর্শক দেখলে বুঝতে পারবেন। আরেকজন আছেন আমাদের বাগেরহাটের কুন্তল বিশ্বাস, ও দারুণ অভিনয় করেছে এই সিনেমায়। ও আমার আবিস্কার। বলিউডের ‘মারদানি-২’ তে নতুন ছেলেটা যেরমক হাইপ তুলছিলো, এই ছবি রিলিজ হলে ও এরকম হাইপ তুলতে পারে। ছবিতে খায়রুল বাসার, মাহবুব তূর্যসহ বাকিরাও খুব দারুণ অভিনয় করেছেন।

একই সঙ্গে মোস্তাফিজুর নূর বাগেরহাটের টিম আর ঢাকার টিমের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘সাহস’ এর গল্পকার অনুপম দাস ও চিত্রনাট্যকার হাসানাত বিন মাতিন সহ এই সিনেমার চিত্রগ্রাহক নাজেরী সাগরের প্রতি কৃতজ্ঞতা। একইভাবে ‘সাহস’ এর এডিট আর কালার করেছেন মুস্তাফা প্রকাশ, তার প্রতিও আমরা কৃতজ্ঞ। সবার আন্তরিকতা না থাকলে এমন দারুণ একটি কাজ সম্ভব হতো না।