ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার প্রথম আলোর সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে আবার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে পুলিশের নিরাপত্তায় কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে তাকে এখানে আনা হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে তাকে কেরানীগঞ্জ থেকে কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়েছিল।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, গতকাল শুক্রবার সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। আজ দুপুরে পুনরায় তাকে কেরানীগঞ্জ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসা হয়েছে।
সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে কাশিমপুর কারাগার থেকে পাঠানোর পর আজ সকালে ওই কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ বলেছিলেন, গতকাল রাতে সাংবাদিক শামসুজ্জামান কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১-এ ছিলেন। আজ সকালে তাকে আবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হচ্ছে।
একবার কাশিমপুরে আনার পর আবার কেন সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে ঢাকার কারাগারে পাঠানো হচ্ছে, জানতে চাইলে শাহজাহান আহমেদ ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশের’ কথা বলেন।
অন্যদিকে শনিবার ১ এপ্রিল প্রথম আলোর সাংবাদিক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক শিক্ষার্থী শামসুজ্জামান শামসের নিঃশর্ত মুক্তি এবং ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিক্ষোভে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতের দাবি জানান তারা। ‘সাংবাদিকতা কোন অপরাধ নয়’, ‘ফ্রি শামস’ এমন বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে মত প্রকাশের অধিকার চেয়ে নানা দাবি জানায় বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি পরিচয়ে সাভারের বাসা থেকে ‘তুলে নেওয়ার’ ৩০ ঘণ্টা পর শামসুজ্জামানকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।
বুধবার ভোররাতে ‘তুলে নেওয়ার’ পর শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলার কথা জানিয়েছিল পুলিশ। এরপর বুধবার মধ্যরাতে তার বিরুদ্ধে একই আইনে রমনা থানায় আরেকটি মামলা হয়।
দুই মামলাতেই ‘মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর’ তথ্য প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা হয়েছে। প্রথমটি তেজগাঁও থানায়, দ্বিতীয়টি রমনা থানায়। প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান এ মামলার প্রধান আসামি।
২৬ মার্চ প্রথম আলো অনলাইনের একটি প্রতিবেদন ফেসবুকে প্রকাশের সময় দিনমজুর জাকির হোসেনের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি ‘কার্ড’ তৈরি করা হয়। সেখানে উদ্ধৃতিদাতা হিসেবে দিনমজুর জাকির হোসেনের নাম থাকলেও ভুল করে ছবি দেওয়া হয় একটি শিশুর। পোস্ট দেওয়ার ১৭ মিনিটের মাথায় প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের অসংগতি নজরে আসে এবং দ্রুত তা প্রত্যাহার করা হয়।
পাশাপাশি প্রতিবেদন সংশোধন করে সংশোধনীর বিষয়টি উল্লেখসহ পরে আবার অনলাইনে প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনের কোথাও বলা হয়নি যে উক্তিটি ওই শিশুর; বরং স্পষ্টভাবেই বলা হয়েছে, উক্তিটি দিনমজুর জাকির হোসেনের।