জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থার (আইএইএ) দুই বছরের পর্যালোচনার পরে সুনামি-বিধ্বস্ত ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় পানি প্রশান্ত মহাসাগরে ফেলতে যাচ্ছে জাপান।
আলজাজিরা জানিয়েছে, ওই তেজস্ক্রিয় পদার্থ মিশ্রিত পানি এখন সাগরে ফেলতে বাধা নেই বলে জানিয়েছে আইএইএ। গতকাল মঙ্গলবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদার হাতে এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট জমা দেয় সংস্থাটি। এখন জাপানের কর্মকর্তারা শীঘ্রই স্থানীয় সম্প্রদায় এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর কাছে সাগরে এই তেজস্ক্রিয় পানি ফেলার পরিকল্পনাটি জানাবেন।
জাপানের নাগরিকদের একাংশ, বিশেষ করে মৎস্যজীবী সম্প্রদায় অবশ্য এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করে আসছেন প্রথম থেকেই। তার সঙ্গে এবার যোগ দিয়েছে চীনও। জাপানে চীনের রাষ্ট্রদূত উ জিয়াংগাও বলেছেন, আইএইএ রিপোর্ট কিছুতেই সাগরে পানি ফেলার ছাড়পত্র হতে পারে না। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগে থেকেই জাপান পুরো পরিকল্পনাটি সাজিয়ে রেখেছে।
এই বিষয়ে, আইএইএ’র মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি বলেছেন, তারা দুই বছর ধরে নিরাপত্তার বিষয়টি পর্যালোচনার পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, জাপানের সাগরে পানি ফেলার পরিকল্পনাটি প্রাসঙ্গিক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মানদণ্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সেখানে বর্তমানে যতটুকু তেজস্ক্রিয়তা রয়েছে তা পরিবেশের জন্য তেমন ক্ষতিকর নয়। পানি ছাড়ার সময় ফুকুশিমা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আইএইএ’র প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। তবে কবে থেকে এই কাজ শুরু হবে, তা এখনও জানানো হয়নি।
২০১১ সালে ভূমিকম্প এবং সুনামির জেরে বিধ্বস্ত হয়েছিল ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। তারপরে সেখানকার সিল করা যে ধাতব টিউবে জ্বালানি ইউরেনিয়াম থাকে, সেই টিউব বা রডগুলোকে ঠাণ্ডা করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল এই পানি যা প্রায় ৫০০টি অলিম্পিক মাপের সুইমিং পুলের পানির সমান বা ১ দশমিক ৩ মিলিয়ন টনেরও বেশি পানি। সেই পানিই ৩০ থেকে ৪০ বছর ধরে ধাপে ধাপে সাগরে ফেলতে চায় জাপান।