চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

৩ গুলিতে শেষ বাংলাদেশে ৪ মাসের জীবন

সিজার ট্রাভেলার বয়স হয়েছিলো প্রায় ৫০। নেদারল্যান্ডসের একটি সাহায্য সংস্থার কর্মী হিসেবে কাজ করতে মাত্র চারমাস আগে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। সুন্দর এক সন্ধ্যায় সাঁতার কেটে বৈকালিক ভ্রমণে বের হয়ে তিনটি গুলিতে থেমে গেছে তার জীবন।

ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার শরীরে তিনটি গুলি পাওয়া গেছে। বেশ কাছ থেকেই গুলি করা হয় সিজারকে।

যে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ এবং গোয়েন্দারা প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন জানিয়েছেন, সেই প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, বিদেশী মানুষটি হেঁটে যাওয়ার সময় তার পেছন পেছন আরো দুইজন হাঁটছিলো।

তারা বলেন, পরে পরপর তিনটি গুলির ঘটনায় বোঝা যায় তারা আসলে তাকে অনুসরণ করছিলো। অন্য যে একজন তাদের জন্য মোটরবাইকে অপেক্ষা করছিলো, তার কাছাকাছি আসার পরই তাকে গুলি করা হয়।

পরে ওই মোটরবাইকে করেই তিনজন পালিয়ে যায়।

ডিপ্লোম্যাটিক জোনের মর্যাদা পাওয়া গুলশানের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ভেতর দিয়ে বাইক আরোহীরা কিভাবে চলে গেলো জানতে চাইলে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গুলশানে এতো অলিগলি যে পালিয়ে যাওয়‍া খুব কঠিন কিছু না।

ওই এলাকায় স্থাপন করা সিসি ক্যামেরায় কোনো কিছু বোঝা গেছে কিনা জিগগেশ করলে কর্মকর্তা বলেন, তখন সন্ধ্যা, অন্ধকার নেমে এসেছিলো। তাই তেমন কোনো ক্লু পাওয়ার সম্ভাবনা কম।

গত মে মাসে বাংলাদেশে এসেছিলেন সিজার ট্রাভেলা।

বিশ্ব রাজনীতিতে ইতালির নাম সেভাবে আলোচিত না হওয়ার কারণে আর এদেশে কখনোই ইতালিবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড না থাকার কারণে অন্য ইতালীয়ানদের মতো তাকেও তার দূতাবাস স্বাভাবিকের বাইরে বাড়তি তেমন কোনো নিরাপত্তা পরামর্শ দেয়নি।

বাংলাদেশে ইতালি মিশনের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা দূরতম দুঃস্বপ্নেও কখনও ভাবেননি যে তাদের একজন নাগরিক এভাবে বন্দুকধারীদের হাতে ঢাকায় নিহত হবেন।

সরকারিভাবে ইতালিতে ৭০ হাজারের বেশি বাংলাদেশী আছেন। বেসরকারিভাবে এ সংখ্যা আরো বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে অনেকে লিবিয়া থেকে কিংবা লিবিয়া হয়ে ইতালিতে গেছেন।