বাংলাদেশে এখনো ৫২.৩ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় তাদের বয়স ১৮ হওয়ার আগে। আর ১৮.১ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয় ১৫ বছর বয়সের মধ্যেই। বিয়ের বয়স নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে ইউনিসেফ প্রকাশিত জরিপে বাল্যবিয়ের এ চিত্র পাওয়া গেছে।
ইউনিসেফ পরিচালিত জরিপ মতে, বাংলাদেশের মহিলা ও শিশুদের উন্নয়নে অনেক অগ্রগতি অর্জিত হলেও এখনো বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে তীব্র বৈষম্য রয়েছে। গ্রাম ও শহরের পরিবারগুলোর মধ্যেও বৈষম্য বিরাজমান বলে জরিপে পাওয়া গেছে।
এই জরিপে ৭৯টি সামাজিক নির্দেশক মূল্যায়ন করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৬টি হলো সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বিষয়ক।
এতে দেখা গেছে শিশুমৃত্যুর হার কমানো, শিক্ষা, সঠিক সময়ে বুকের দুধ পান করানো, প্রাক বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার ও বিদ্যালয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার হারে যথেষ্ট অগ্রগতি হলেও এখনো সব ধরণের মানুষের একত্রিত অগ্রগতির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ রয়েই গেছে।
গবেষণা ফলাফলে বলা হয়, দেশের ৪২ শতাংশ খর্বাকৃতির মানুষের মধ্যে ৫২.৮ শতাংশই দরিদ্র পরিবার থেকে আসা। সন্তান জন্মদানের সময় দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর সাহায্য পায় দরিদ্র মায়েদের মাত্র ২৬.৫ শতাংশ। কিন্তু ধনী মায়েদের ৭২.৮ শতাংশই এই সুবিধা পেয়ে থাকে।
দেশে পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট বৈষম্য রয়েছে। জরিপে দেখা গেছে, দেশের ৭৭ ভাগ মানুষের পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধা থাকলেও ধনী ও দরিদ্রদের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় ৫৯ হাজার ৮শ ৯৫টি পরিবারের মধ্যে ‘প্রগতির পথে’ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (মিকস) এই জরিপ চালায় ইউনিসেফ।
জরিপ রিপোর্টের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া বক্তৃতা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব কানিজ ফাতেমা, ইউনিসেফ প্রতিনিধি এডওয়ার্ড বেগবেদার এবং ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকসের মহাপরিচালক আব্দুল ওয়াজেদ।