বিদেশ থেকে ভেজাল ওষুধ আমদানি করে দেশে বাজারজাত করা চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এই ভেজাল ওষুধ তৈরি এবং আমদানিতে খরচ হতো মাত্র ১২ টাকা, কিন্তু বাজারে তা বিক্রি করা হতো ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকায়।
ক্যান্সারের ভুয়া প্রতিষেধকসহ বিভিন্ন ভেজাল ওষুধ চীনে তৈরি করে দেশের বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ২১ হাজার পাতা ওষুধ জব্দ করা হয়। আটকরা হলেন- রুহুল আমিন ওরফে দুলাল চৌধুরী, নিখিল রাজবংশী ও মো. সাঈদ।
শুক্রবার দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্যা নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন: আমরা তাদের কাছে এমটিএক্স, ক্লোমাইড ও রিভোকন নামে তিন ধরনের ভেজাল ওষুধ পেয়েছি। এসব ওষুধ প্রতি পাতা তৈরি এবং আমদানীতে তাদের ব্যয় হতো ১২ টাকা। আর তারা তাদের এজেন্টদের কাছে ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করতো। খুচরা পর্যায়ে এসব ওষুধ ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকায় বিক্রি করা হতো।
পুলিশ কর্মকর্তা মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন: আটকরা প্রায় সময়ই চীনে যাতায়াত করে। সেখানে গিয়ে তাদের চাহিদা অনুযায়ী ভেজাল ওষুধ তৈরির অর্ডার করেন। ক্যালশিয়াম ক্লোরাইডসহ নিন্মমানের উপাদান দিয়ে দামী দামী জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি করা হয়। তারপর ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী আমদানীর আড়ালে কাস্টমসের কিছু কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সহায়তায় সেসব ওষুধ কন্টেইনারে করে আমদানী করতো এই চক্র।
‘চায়না থেকে ভেজাল ওষুধগুলো এনে তারা একটি গোডাউনে রাখতো। তারপর ডিস্ট্রিবিউটরদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন বাজারে ছড়িয়ে দেয় তারা। ওষুধের সঙ্গে দেশের প্রতিটি নাগরিকের জীবন জড়িত। জীবন রক্ষাকারী এসব দামী ওষুধে ভেজালের ফলে মানুষ চরমভাবে প্রতারিত হয়েছে। এই চক্রের বিরুদ্ধে কাজ শুরু করেছি, আমরা এটা শেষ করতে চাই।’
আটকদের বিষয়ে তিনি বলেন: তারা মূলত জুয়ারী। বিভিন্ন ক্যাসিনোতে গিয়ে জুয়া খেলতে গিয়ে তাদের পরিচয়। এরপর পরস্পরের যোগসাজসে চীনে ভেজাল ওষুধ তৈরি করে আমদানির পরিকল্পনা করে তারা।
‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে চক্রের তিন সদস্য আটক এবং তাঁতীবাজার এলাকায় তাদের গোডাউন থেকে ওষুধগুলো জব্দ করা হয়। আমরা এর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের নাম পেয়েছি, আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে ওষুধগুলো কোন কোন পয়েন্টে বিক্রি হয় এবং তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।’