চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

হাসপাতালেই বিয়ে

বয়স আর কতো? মাত্র চার বছর। এর মধ্যে মরণরোগ দানা বেঁধেছে তার শরীরে। তাই বলে স্বপ্ন তো আর থেমে নেই? চার বছরের অ্যাবির স্বপ্ন, সে বিয়ে করবে তার পছন্দের পুরুষকেই।

মেয়েটির স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হলো। আর স্বপ্নটা পূরণ করলো শিশুটির পছন্দের পুরুষই।

ক্যান্সারের চিকিৎসা নিতে প্রতিনিয়ত হাসপাতালে আসতে হয় অ্যাবিকে। হাসপাতালে আগে আসতেই চাইতো না সে, কিন্তু এখন তার হাসপাতালে আসতে ভালো লাগে শুধুমাত্র একটি কারণে। হাসপাতালে তার যে প্রধান সেবক, তাকে তার প্রচন্ড পছন্দ হয়ে গেছে। তাকেই বিয়ে করার স্বপ্ন বুনে সে।

চকলেটি রিং, কেক ও ‘জাস্ট ম্যারিড’ লেখা উজ্জ্বল গোলাপী খেলনা কার, ফুল, সাদা গাউন কি ছিলোনা এই বিয়ের আয়োজনে।
হাসপাতালে অ্যাবির দেখাশোনা করছিলো ম্যাট হিকলিং নামের সেবক। অ্যাবির মা-ই ম্যাটকে জানিয়েছিলো, অ্যাবি গত সপ্তাহে হাসপাতালে আসার সময় খুব উৎসাহী ছিলো এই জন্যই যে সে ম্যাটকে বিয়ে করবে।

কথাটা শোনার পরই অ্যাবির স্বপ্ন পূরণ করতে চায় ম্যাট। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালের আরো কিছু সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে অ্যাবি-ম্যাটের বিয়ের আয়োজনটা করেই ফেলে ম্যাট নিজেই।

বিয়ে উপলক্ষ্যে সাদা প্রিন্সেস গাউন বানানো হয়েছিলো অ্যাবির জন্য। আর একটা টি-শার্ট পরেছিলেন ম্যাট। ফুলের পাপড়ির উপর দিয়ে অ্যাবিকে হাঁটিয়ে নিয়ে আসেন তার মা। তবে অন্য কেউ দায়িত্ব নেওয়ার আগেই নিজের বিয়ের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয় অ্যাবি। সোজা গিয়ে ম্যাটকে জিজ্ঞেস করে, ‘আমাকে বিয়ে করবে?’ ম্যাটও দ্রুত জবাব দেন ‘অবশ্যই, আমি তোমাকে বিয়ে করবো।’ এরপর দুজন দুজনকে জড়িয়ে ধরে এবং রিং পপ খেয়ে নিজেদের প্রতিজ্ঞা দৃঢ় করেন।  

ম্যাট পরে নিজের ফেসবুক পোস্টে এই খবর জানিয়ে বলেন, আমার ‘হ্যাঁ’ বলতে কোনো দ্বিধাই হচ্ছিলো না। আমরা তারপর আমাদের ‘জাস্ট ম্যারিড’ লেখা কার নিয়ে হাঁটুর ভরে পুরো ঘর ঘুরে বেড়ায়। সবশেষে কেক ও ছবির জন্য আবার ঘরে ফিরে আসি।

অ্যাবির কাছেও দিনটি ছিলো ‘সবসময়ের সেরা দিন।’ ক্যান্সার আক্রান্ত অ্যাবিকে প্রতিদিন একবার কেমো পিল খেতে হয় আর প্রতি তিনমাসে একবার স্পাইনাল ট্যাপ নিতে হয়। স্বপ্নের পুরুষকে বিয়ের এই আয়োজন অ্যাবির ক্যান্সার চিকিৎসা নিতে মানসিক শক্তি আরো বাড়াবে বলেই মনে করছেন সকলে। এমনকি তার কষ্টের দিনে তার মুখে হাসি ফোটাবে বলেও ধারণা সবার।