চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

স্বাধীনতার চেতনায় ‘রঙ তুলিতে মুক্তিযুদ্ধ’

‘রঙ’ মানে শহীদের রক্ত আর ‘তুলি’ বাঙালির চেতনা। রক্ত আর চেতনা দিয়েই
মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে দেশ পেয়েছে মুক্ত ও স্বাধীন দেশে। সেই রক্ত আর চেতনাকে সমন্বয়
করে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রতিবছর চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে দেশ ও দেশের
বাইরে থাকা গুণী চিত্রশিল্পীদের নিয়ে ‘রঙ তুলিতে মুক্তিযুদ্ধ’ অনুষ্ঠানটির
আয়োজন করা হয়।

স্বাধীনতা পদক পাওয়া রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার গান এবং গুণী চিত্রশিল্পী হাশেম খানের ছবি আঁকা দিয়ে শুরু হয় ‘রঙ তুলিতে মুক্তিযুদ্ধ’ অনুষ্ঠানটি। চৈত্র’র কাঠফাটা রৌদে দূর-দুরান্ত থেকে গুণীজনরা এসে উপস্থিত হন চ্যালেন আই প্রাঙ্গণে।

মাতৃভূমিকে ভালোবেসে অনেকে ছুঁটে এসেছেন প্রবাস থেকে। সবার উদ্দেশ্য একটাই, মাতৃভূমি নিয়ে নিজের মনে কতোটুকু অনুভূতি জমে আছে তা রঙ আর তুলি দিয়ে প্রকাশ করবেন। আঁকবেন মুক্তিযুদ্ধের ছবি, সমৃদ্ধ এক বাংলাদেশের ছবি। অবশ্য এবারের অনুষ্ঠানটি নির্মাতা ও চিত্রশিল্পী খালেদ মাহমিুদ মিঠুর স্মরণে উৎসর্গ করা হয়।

উপমহাদেশীয় রবীন্দ্র সঙ্গীতশিলপী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা স্বাধীনতা দিবসে নিজের অনুভূতি জানিয়ে বলেন, আমার জন্ম হয় পরাধীন একটি দেশ পাকিস্তানে। তবে আমার মৃত্যু স্বাধীন দেশ বাংলাদেশে। আজ আমার বড়ই শান্তি যে আমি বাঙালি।

গুণী চিত্রশিল্পী হাশেম খান বলেন, আজ আমি এ প্রজন্মের ছোট সোনামনিদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ছবি আঁকবো। তাদের কাছেই দেশটিকে বুঝিয়ে যেতে হবে। অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর কবি নির্মলেন্দু গুণের মুক্তিযুদ্ধের কবিতা পাঠ করে নিজের অনুভূতির কথা প্রকাশ করেন।

কবিতা পাঠের পর মন্ত্রী বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের জনসভার আমি উপস্থিত ছিলাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণে উজ্জীবিত হয়ে যুদ্ধে নেমে পড়ি। সেই ভাষণটি ছিলো আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণা।

ছবি আঁকা গান করার পাশপাশি প্রতিবছর চ্যানেল আই এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বরেণ্য ব্যক্তিদের সম্মাননা প্রদান করে থাকেন।

এবার চ্যানেল আইয়ের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধকে বেগমান করার জন্য স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা করা হয়। সম্মাননার ক্রেস্ট তুলে দেন ইমপ্রেম টেলিফিল্ম চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থানা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর বলেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠানটি মুক্তিযুদ্ধের সময় অনন্যা এক ভূমিকা পালন করেছে। তাই চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের পরিদর্শন কক্ষ করা হয়েছে। আমরা এই প্রতিষ্ঠানকে সম্মানিত করতে নিজেরাই আজ সম্মানিত। যতোদিন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থাকবে ততোদিন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র বেঁচে থাকবে।

বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ বলেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রকে সম্মান করতে পারায় চ্যানেল আই গর্বিত। স্বাধীনতার মাসে একটি স্বপ্ন বাংলাদেশ সমৃদ্ধশালী দেশ হবে। যেখানে কৃষিতে স্বয়ং সম্পূর্ণ থাকবে বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানে ক্ষুদে চিত্রশিল্পীরা তাদের বাংলাদেশকে তুলে ধরে। দেশবিষয়ক কবিতার আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশনা করা হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অনুভূতির কথা জানান।

জনপ্রিয় নাট্যব্যক্তিত্ব অাফজাল হোসেনের সঞ্চালনায় ‘রং তুলিতে মুক্তিযুদ্ধ’ অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে চ্যানেল আই।