সৌদি আরবে শিয়া ধর্মগুরু ও আরব বসন্তের অন্যতম পরিচিত মুখ নিমর আল নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পুরো মধ্যপ্রাচ্য। ঘটনার পর ক্ষুব্ধ জনতা তেহরানে সৌদি দূতাবাসে আগুন ধরিয়ে দিলে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয় সৌদি আরব। নিমরের মতো রাজবন্দিকে সন্ত্রাস দমন আইনের আওতায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়াকে সৌদি রাজতন্ত্রের রাজনৈতিক বিরোধী দমন চেষ্টা হিসেবে দেখছে আন্তর্জাতিক মহল। এর পেছনে মার্কিন হাতও দেখছেন কেউ কেউ।
নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর প্রায় সবদিক থেকেই সমালোচনা হয়েছে। সবচেয়ে কড়া প্রতিবাদ ও সমালোচনা করেছে ইরান। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি বলেছেন, এ জন্য সৌদি আরবের উপর গজব পড়বে। এর মধ্য দিয়ে সোদি কর্তৃপক্ষ অন্যায়ভাবে একজন শহীদের রক্ত ঝরিয়েছে। যে নিষ্পাপ রক্তের দাগ সৌদি রাজপরিবারে লাগলো তা তাদের ধ্বংস ডেকে আনবে।
সমালোচনা করেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, জার্মানি, ফ্রান্স, ইউরোপিয় ইউনিয়ন ও সৌদির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ পশ্চিমা সহযোগী ও সমর্থক যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনও।
ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র নিন্দা জানালেও প্রশ্ন উঠেছে, এরপরও কি সৌদি আরবের সঙ্গে পশ্চিমাদের অস্ত্র ব্যবসা চলবে? উত্তর হলো চলবে। বিশেষ করে ব্রিটেন ও কমওয়েলথ দফতরের বিবৃতিতেই সেটা পরিস্কার। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ব্রিটেন যেকোনো জায়গায়, যেকোনো দেশে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী। এ কারণে সৌদি আরবের সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কে প্রভাব পড়ার কথা নয়।’
সাবেক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার ম্যালকল রিফকিন্ড বলেছেন, ‘যেসব দেশকে পছন্দ করি শুধু সেসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখতে হলে তো চীন, রাশিয়াসহ বিশ্বের চারভাগের তিনভাগ দেশের সঙ্গেই সম্পর্ক রাখা চলে না।’
ব্রিটেনের মতো নিন্দা বিবৃতিতে সরাসরি আর্থিক বিষয়টি উল্লেখ না করলেও তেমন কোনো কড়া ভাষা ব্যবহার করেনি যুক্তরাষ্ট্র। গতানুগতিভাবে দুপক্ষকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এলিজাবের্ত ওই অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে এমন যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য রিয়াদ ও তেহরানকে অনুরোধ করেছেন।
সার্বিক দিক বিবেচনায় প্রশ্ন উঠছে, মধ্যপ্রাচ্যের দুই শক্তিশালী প্রতিবেশির সংঘাতের নেপথ্যে কি যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে?
কেউ কেউ এরকমই মনে করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সরাসরি আঙ্গুল তুলেছে হিজবুল্লাহ। নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করায় সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের পশ্চিমা মিত্রদের নিন্দা করেছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে হিজবুল্লাহ জানায়, সৌদি আরবকে সরাসরি সমর্থন দেওয়ায় নিমরের মৃত্যুদণ্ডের জন্য যুক্তরাষ্ট্রও সমানভাবে দায়ী। বিবৃতিতে সৌদি আরবের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে হিজবুল্লাহ।
মার্কিন ওয়াল স্টিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাদশাহ সালমান সিংহাসনে বসার পর আক্রমণাত্মক পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছে সৌদি আরব। এর অংশ হিসেবে ৩০ বছরের প্রিন্স মোহাম্মদকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
সিংহাসনে পরিবর্তন আসার পর আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ইরানের সঙ্গে সৌদি আরব সরাসরি এবং মুখোমুখি দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে যেকোনো হুমকি মোকাবেলার নামে প্যান-আরব সামরিক জোট গঠন করে ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠী হাউতিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা পরিচলনা করছে সৌদি আরব।
সৌদি-ইরান সংঘাতের পেছনে মার্কিন হাত থাকার বেশ কিছু কারণ ব্যাখ্যা করেছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। তার মধ্যে একটি: মাত্র কয়েকদিন আগে ইরানের ব্যালাস্টিক মিসাইল পরীক্ষা, যা মার্কিন রণতরীর খুব কাছে গিয়ে পড়ে। তবে মিসাইল পরীক্ষার কথা অস্বীকার করেছে ইরান। কিন্তু অনেকে মনে করেন, পরমাণু চুক্তির পর দ্বিতীয় দফায় ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাতে নতুন রাস্তা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র।
দিন কয়েক আগে ইরানের ব্যালাস্টিক মিসাইল পরীক্ষার পর আরব দেশগুলোর সরকার ও মার্কিন ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনেটর ও কংগ্রেসম্যানরা সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছিলেন। হোয়াইট হাউজও দ্বিতীয় দফায় ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাতে কংগ্রেসকে আহবান জানিয়েছে। কংগ্রেস কিছুটা সময় নিলেও দ্রুতই এই নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।
মার্কিন কংগ্রেসে মেরিল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক প্রতিনিধি রেপ স্টেনি হোয়ার বলেন, ‘ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাতে প্রশাসন যে বিলম্ব করছে, এতে আমি যারপরনাই হতাশ।’
ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে সৌদি আরব। ধর্মীয় বিভাজনের উপর ভিত্তি করে দুইপক্ষের এই দ্বন্দ্ব নিরসনে যুক্তরাষ্ট্র কি ভূমিকা নিতে পারে, এমন প্রশ্নের মধ্যেই একজন ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যান বলেছেন শুধু ইরান নয়, এই সংঘাতের মাধ্যমে সৌদি আরবকেও কিছুটা শিক্ষা দিতে চায় ওবামা প্রশাসন। কারণ বাদশাহ সালমান সিংহাসন গ্রহণ করার পর দুদেশের ভেতরের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না। মধ্যপ্রাচ্যে অস্ত্র বিক্রয় ও গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহের নিয়ে গালফ কো-অপরাশেন কাউন্সিলের এক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সৌদি আরব সরাসরি অভিযোগও তুলেছিলো।
বেশ কয়েকজন আরব কর্মকর্তা এবং মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক ওয়ালস্টিট জার্নালকে বলেন, সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে আরো প্রতারণাপূর্ণ ও উত্তেজনাপূর্ণ কূটনৈতিক অবস্থা সৃষ্টি করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সেক্ষেত্রে শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ডের পরামর্শ দিয়ে থাকতে পারে তারা।
মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষকরা আরো বলেন, ‘অন্য কারণ হতে পারে অস্ত্র। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বাজার সৌদি আরব। তাই এই অঞ্চলে সংঘর্ষ যদি আরো বিস্তার পায়, সেক্ষেত্রে মার্কিনিদের অস্ত্রর বিক্রির পরিমাণটাও বেড়ে যাবে।
ওই বিশ্লেষকরা আরো জানান, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রসহ অপর বিশ্বশক্তির পরমাণু চুক্তি ও কাছাকাছি সম্পর্ক ভালোভাবে নেয়নি সৌদি আরব ও তার মধ্যপ্রাচ্য মিত্ররা। এজন্য তারা যুক্তরাষ্ট্রের উপর চাপ বাড়াতে থাকে। আর সৌদি জোটের আস্থা অর্জনের জন্য ইরানের উপর নতুন চাপ সৃষ্টির কৌশল নিতে পারে মার্কিন প্রশাসন।
এর উদাহরণ হিসেবে তারা তুলে ধরেন সংখ্যালঘু শিয়াদের উপর চালানো সৌদি আরবের নির্যাতনের কথা। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের মানবাধিকার সম্মেলনে সৌদি আরবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে কোনো রকম টুঁ-শব্দ করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটসওয়াচের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক অ্যাডাম কোল বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কখনোই সত্যিকারভাবে সৌদি আরবের মানবাধিকার পরিস্থিতি আমলে নেয়নি। সৌদির সঙ্গে সম্পর্ক সবসময় অর্থনীতির বাটখাড়ায় মাপা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। বিশেষ কিছু ঘটনায়ও যুক্তরাষ্ট্র এটি করেনি। যার কারণে সৌদি আরব সবসময় বুঝে এসেছে, মার্কিনিরা তাদের বিরুদ্ধে কখনোই কিছু করবে না। তাই তারা সমানতালে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছে।’
এই সংঘাতের আরেকটি বড় কারণ হতে পারে তেল বাণিজ্য। এর পেছনেও মার্কিন ছায়া দেখছেন বিশ্লেষকরা।
সৌদি আরব ও তার আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক বিরোধের জের ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও স্বর্ণের দাম বেড়েছে। সোমবার দিনের শুরুতে এশিয়ার বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে তিন শতাংশ। বিশ্বের অন্যতম দুটি জ্বালানি তেল সরবরাহকারী দেশের মধ্যে বিরোধের ফলে তেল সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে- এমন আশঙ্কা থেকে অশোধিত তেলের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছে মার্কিন পত্রিকা দ্য ফিসক্যাল টাইমস।
এর আগে তেলের দাম অব্যাহত ভাবে কমে যাওয়ার মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে ঝামেলা তৈরির আশঙ্কা করছিলেন বিশ্লেষকরা। তাদের ধারণা ছিলো সেটা হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকায়। ইরানের সাথে সৌদি আরব কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার পরই সোমবার নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে আগামী ফেব্রয়ারিতে সরবরাহের জন্য প্রতি ব্যারেল অশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ১.২৮ মার্কিন ডলার বেড়ে ৩৮.২২ ডলারের উঠেছে। লন্ডনের ইসিই ফিউচারস এক্সচেঞ্জে দাম ওঠে ৩৮.৫০ ডলার।
তেলের দামের জের ধরে সোমবার আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দামও বেড়েছে। তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতির লাগাম টানার বাহক হিসেবে দেখা হয় স্বর্ণকে।
ব্রিটিশ পত্রিকা ইকোনোমিক টাইমস জানায়, বিশ্বের তেল বাজারে সৌদি আরবের আধিপত্য হুমকির মুখে। একদিকে বিভিন্ন দেশে তেল রপ্তানি কমছে, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরানের মতো তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর কাছ থেকে তীব্র প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে দেশটিকে।
২০১৪ সালের তুলনায় গত বছর সৌদি আরবের তেল রপ্তানি কমেছে প্রায় ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। চায়না জেনারেল কাস্টমস এডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুসারে, ২০১৫ সালের প্রথম দুমাসে চীনে সৌদির তেল রপ্তানি ২০১১ সালের পর সর্বনিম্নে চলে যায়।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এনার্জি ইনফরমেশন এডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য মোতাবেক, চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে সৌদির তেল বিক্রি ২০১৫ সালের একই সময়ের তুলনায় অর্ধেক কমেছে। এ দুই দেশ সৌদি তেলের প্রধান আমদানিকারক। সৌদির মোট তেল উৎপাদনের ৮ ও ১০ শতাংশ আমদানি করে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন।
চীনে সৌদির তেল রপ্তানি কমার অন্যতম কারণ স্থানীয় দুর্বল চাহিদা। অন্যদিকে রাশিয়া, কুয়েত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশটির প্রতিযোগীরা চীনকে আরো ভালো প্রস্তাব দিয়ে চুক্তি করছে, যা রপ্তানি কমার আরেকটি কারণ। লক্ষ্য করার বিষয় হলো, চীন এবং রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের বড় শত্রু। এ ছাড়া সৌদিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় তেল উৎপাদকদের সঙ্গেও তীব্র প্রতিযোগিতায় নামতে হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গত বছরের জুনের পর এ পর্যন্ত তেলের দাম ৫০ শতাংশের বেশি কমে যাওয়ায় নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। তারা বলছেন, নিজেদের বাজার অবস্থান ধরে রাখার জন্য সৌদি আরব এশিয়ার গ্রাহকদের জন্য ৯ মাসে তেলের দাম ছয়বার কমিয়েছে।
আগামী দশকে বিশ্ববাজারে তেলের চাহিদা বাড়বে, এ প্রত্যাশাকে সামনে রেখে কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো গালফ রাষ্ট্রগুলো বাজার শেয়ার ধরে রাখার জন্য উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দিচ্ছে। কুয়েত ২০২০ সালে তেল উৎপাদন বর্তমানের দৈনিক ৩ দশমিক ২ মিলিয়ন ব্যারেল থেকে বাড়িয়ে ৪ মিলিয়ন ব্যারেল করার পরিকল্পনা করছে।
অন্যদিকে ২০১৭ সাল থেকে উৎপাদন তিন মিলিয়ন ব্যারেল থেকে বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৫ মিলিয়ন ব্যারেল করতে চায় সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির তথ্য অনুসারে, বিশ্বের মোট উৎপাদিত ক্রুডে সৌদি আরবের শেয়ার ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫ সালে কিছুটা কমেছে, ১০ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ২ শতাংশে। ২০১৫ সালের প্রথম দুই মাসেই গত বছরের একই সময়ের তুলনায় চীনে ইউএই ও কুয়েতের তেল রপ্তানি বেড়েছিলো ১১৬ ও ৯৮ শতাংশ।
অন্যদিকে, গত বছরের নভেম্বরে সৌদিকে হটিয়ে তাইওয়ানে শীর্ষ তেল রপ্তানিকারকে পরিণত হয় কুয়েত। এ ছাড়া সিঙ্গাপুরের সঙ্গেও ১০ বছরের চুক্তি করেছে দেশটি।
ইরান আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছে অবরোধ উঠে গেলে রপ্তানি দ্বিগুণ করবে তারা। ২০১৪ সালের শেষে এবং ২০১৫ সাল জুড়েই ইতালিতে শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক হিসেবে সৌদিকে হটিয়ে জায়গা দখল করেছে ইরান। যুক্তরাষ্ট্র ও পাঁচ পরাশক্তির সাথে পরমাণু চুক্তি করায় এ বছরই ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাচ্ছে। যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ব্যাংকে আটকে থাকা ১০০ বিলিয়ন ডলার ফেরত পাচ্ছে তারা। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের মূল্যে তেলের দাম পরিশোধের সুযোগ পাবে ইরান। আর এসব কিছু্ মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সৌদি আরব এবং তার মিত্রদের।