চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

সিলিন্ডার ব্যবসা চাঙা করতেই গ্যাসের দাম বৃদ্ধি: সিপিবি

সরকার অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবসায়ীদের পকেট ভারী করতে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। সরকার জনস্বার্থের চেয়ে একশ্রেণীর ব্যবসায়ীর স্বার্থ দেখছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি জানান, ‘চিহ্নিত লুটেরাদের পকেট চাঙা করতে কৃত্রিমভাবে সিলিন্ডার ব্যবসাকে পথ করে দেয়া এবং জনবিরোধী মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামীকাল রাজধানীতে অর্ধদিবস হরতাল ডাকা হয়েছে। এ হরতালে ৯৯ শতাংশ নগরবাসীর সমর্থন আছে।’

হরতাল সফল করতে সবাইকে ২৮ ফেব্রুয়ারি সকালের বদলে দুপুর ১২ টায় কর্মস্থলে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সিপিবি সভাপতি। তবে এসএসসি পরীক্ষার্থীরা ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত ডাকা এই হরতালের আওতার বাইরে থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

চ্যানেল আই অনলাইনকে সিপিবি সভাপতি সেলিম বলেন, ‘আমাদের হিসাব বলছে বর্তমানে যে দামে গ্যাস দেয়া হচ্ছে তার চেয়ে অর্ধেক দামে গ্যাস দেয়া সম্ভব। আমরা দাম কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিলাম। অথচ সরকার জনগণকে উপেক্ষা করে উল্টো গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে। যা অযৌক্তিক। এই জনবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা হরতাল সফল করতে গণসংযোগ করেছি। শতকরা ৯৯ শতাংশ জনসমর্থন আছে এই হরতালের পক্ষে।’

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সিপিবি সভাপতি

এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন,‘ গ্যাসের দাম বাড়লে জনজীবনের সর্বত্র তার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এরই মধ্যে সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর হুমকি দিয়েছে। এসব হুমকি-ধামকি আন্দোলনের মাধ্যমেই মোকাবেলা করতে হবে। সরকারের গণবিরোধী নীতি ও পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পাড়ায়-মহল্লায় সর্বত্র ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে।’

হরতাল সফল করার আহ্বান জানিয়ে পরিবহণ শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা এবং আজ ২৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুর, মোহাম্মদপুর, তেজগাঁও, উত্তরা, সুত্রাপুর, ধানমন্ডি, খিলগাঁও, মতিঝিল, কাকরাইল এলাকায় হরতালের পক্ষে সিপিবি-বাসদের কেন্দ্রীয় নেতারা গণসংযোগ করেন।

গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম দলগুলোর ডাকা হরতালে সমর্থন জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

গত শনিবার এই হরতালে সমর্থন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ দেশের মানুষ এখন ভাল নেই। জীবনযাত্রার ব্যয় অনেকে বেড়েছে প্রতিনিয়ত দ্রব্য মূল্যে বাড়ছে। সেভাবে তাদের আয় নেই। সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের কারণে মানুষের জীবন যাত্রাকঠিন হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে গ্যাসের দাম ২২.৭ ভাগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে সমগ্র বাংলাদেশের অর্থনীতির উপর চাপ পড়বে। সামগ্রিক ভাবে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে। আমরা ইতোমধ্যে এটার প্রতিবাদে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।’

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বিভিন্ন খাতে গ্যাসের দাম মার্চ ও জুনে দুই ধাপে গড়ে ২২ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এই ঘোষণা অনুযায়ী, আবাসিক গ্রাহকদের আগামী ১ মার্চ থেকে এক চুলার জন্য মাসে ৭৫০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৮০০ টাকা দিতে হবে। আর দ্বিতীয় ধাপে ১ জুন থেকে এক চুলার জন্য মাসিক বিল ৯০০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৯৫০ টাকা হবে।

আবাসিকে মিটারে যারা গ্যাসের বিল দেন, তাদের মার্চ থেকে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহারের জন্য ৯ টাকা ১০ পয়সা এবং জুন থেকে ১১ টাকা ২০ পয়সা করে দিতে হবে। এতোদিন প্রতি ঘনমিটারে তাদের বিল হত ৭ টাকা করে। এছাড়া যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত সিএনজির দাম ১ মার্চ থেকে প্রতি ঘনমিটারে ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩৮ টাকা হবে। আর ১ জুন থেকে হবে ৪০ টাকা।