বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন ছিল আয়েশা আক্তার শিমুর। নিজে প্রতিষ্ঠিত না হয়ে বিয়ের পিড়িতেও বসবেন না, এমন শপথ ছিল তার। কিন্তু সাপের দংশনে ভ্যাকসিন না পেয়ে হাসপাতালেই ঝরে গেল শিমুর সব স্বপ্ন।
স্কুল শিক্ষিকা আয়েশা আক্তার শিমু (২৭) বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের নুরু মিয়ার মেয়ে। বুধবার রাত ৮টায় তাকে বিষাক্ত সাপ কামড় দেয়। ৮.৪৩ মিনিটে তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লিখেন, ‘টাঙ্গাইলে সাপের ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায়?’।
বাড়ির চারদিকে বর্ষার পানি থাকায় তাকে নৌকা যোগে বাড়ি থেকে বের করে রাস্তার ধারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে গাড়িতে করে মির্জাপুর কুমুদিনী মেডিকেল কলেজ হাপপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান সেখানে সাপে কাটার ভ্যাকসিন নেই।
তারপর রাত একটায় ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় বাড়িতে নেয়া হয় শিমুকে।
অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারছিলেন না তার পরিবার। সাপে কাটা মানুষ নাকি কয়েকদিন বেঁচে থাকে এমন খবরে ওইদিনই বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে শিমুকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেও কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত শিমুর বাবা নুরু মিয়া ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘শিমুকে মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানকার চিকিৎসক জানান সাপে কাটার ভ্যাকসিন নেই। ওই হাসপাতালে ভ্যাকসিন থাকলে তাদের শিমুর মৃত্যু হতো না। শিমুর মতো ভ্যাকসিনের অভাবে আর যেন কারো মৃত্যু না হয়।’
মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে সাপে কাটা ভ্যাকসিন আছে কি না সে ব্যাপারে কর্তব্যরত চিকিৎসকের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এ ব্যাপারে কোন বক্তব্য দিতেও রাজি হননি তিনি।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. পুতুল রায় বলেন, ‘সাপের কাটার ভ্যাকসিন সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে থাকে। চাহিদা দেওয়া মাত্রই ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। প্রথমে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে আনা হলে হয়তো সাপে কাটা রোগিকে বাঁচানো সম্ভব হতো।’