সহিংস উগ্রবাদ প্রতিরোধে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে নাগরিক সংলাপ করেছে বাতিঘর সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়।
সোমবার গাজীপুরে একটি হোটেলে এ সংলাপ আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সম্প্রীতি প্রকল্পের আওতায় এই সংলাপ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাতিঘর সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মেহেদী হাসান শোয়েব।
সূচনা বক্তব্যে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সম্প্রীতি প্রকল্পের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাহাজাদী বেগম জানান, তরুণদের ভেতরে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দিতেই এই প্রকল্প।
নাগরিক সংলাপে গাজীপুরের মুক্তিযোদ্ধা, মাদ্রাসা শিক্ষক, কলেজ শিক্ষক, বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সংগঠক, গণমাধ্যম কর্মী, ধর্মীয় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, তরুণ প্রজন্মের মোট ৬০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। সকাল সাড়ে দশটায় শুরু হয়ে এই উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠান চলে দুপুর দইটা পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গাজীপুর জেলা মানবাধিকার নাট্য পরিষদের সভাপতি মোজাম্মেল হক, ভাষা শহিদ কলেজের অধ্যক্ষ মুকুল কুমার মল্লিক, গাজীপুর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ আবুল কালাম আজাদ, সংস্কৃতি সংগঠক লীনা রোজারিও, গাজীপুর মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নারায়ণ কুমার দাস, দৈনিক যোগফল সম্পাদক আসাদুল্লাহ বাদল, সাংস্কৃতিক সংগঠক লিয়াকত চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা ও ক্রীড়া সংগঠক হাতেম আলী, নাট্য সংগঠক সঞ্জীব রায় তপন প্রমুখ।
সংলাপের শুরুতেই সাংস্কৃতিক সংগঠক লিয়াকত চৌধুরী উগ্রবাদের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং তা মানুষের ভেতরে সঞ্চারিত হবার মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ করে বক্তব্য রাখেন।
সালনা সরকারি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ আলাউদ্দিন সরকার বলেন, তরুণদেরকে অপসংস্কৃতি থেকে দূরে রাখতে দেশি সংস্কৃতি চর্চায় উৎসাহ দেতে হবে। তাদের জন্য ভালো নাটক বানাতে হবে এবং সেসব প্রচার করতে হবে, যার মাধ্যমে তারা ভালো শিক্ষা পেতে পারে।
লীনা রোজারিও বলেন, তরুণদেরকে ভালোবেসে কাছে টানতে হবে। তারা যাতে বিচ্ছিন্ন হয়ে না যায়। এই কাজ করতে হবে প্রত্যেকের নিজের জায়গা থেকে, নিজের ঘর থেকেই।
নারায়ণ কুমার শীল বলেন, আমাদের সমাজে রাজনৈতিক দলের পদ-পদবী পেলে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। কিন্তু কেউ ভালো রেজাল্ট করলে, খেলাধূলায় বা কোনো সাংস্কৃতিক বিষয়ে ভালো করলে সংবর্ধনা দেয়া হয় না। ফলে এসব বিষয়ে আগ্রহ কমে যায় তরুণদের। তাই এসব বিষয়েও আমাদের তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহ দিতে হবে।
আলোচকরা সহিংস উগ্রবাদ দমন ও প্রতিরোধে পরিবারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মতামত দেন। সেইসাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেন তারা।
আগামী মাসে গাজীপুরে নাট্য উৎস এবং রচনা ও স্লোগান লেখা প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হবে বলে জানানো হয় আয়োজকদের পক্ষ থেকে।