ঈদুল আযহার ছুটি শেষে এফডিসির অফিসগুলো খুললেও স্বাভাবিক হয়নি বিভিন্ন শুটিং ফ্লোর। ঈদের সপ্তম দিন (আজ) দুপুর ১২ টা নাগাদ এফডিসি ঘুরে দেখা যায়, কোথাও কোনো শুটিং হচ্ছে না। মূল ফটকে বসে আছেন কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী। ফটকের বাইরে নিত্যদিনের মত এফডিসি নিয়ে অতি উৎসাহী কিছু মানুষের আনাগোনা।
গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকে তিন ও চার নম্বর ফ্লোরের সামনে দিয়ে হেঁটে ক্যান্টিনের দিকে যাওয়ার সময়ও চোখে পড়লো না কোনো শুটিংয়ের। তবে চার নম্বর ফ্লোরে ঢুঁ মারতেই দেখা গেল শুটিংয়ের জন্য সেট তৈরি হচ্ছে। সেখানে উপস্থিত একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, একটি বেসরকারি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের জন্য সেট তৈরি করা হচ্ছে। কোনো সিনেমার শুটিংয়ের জন্য নয়।
আট নম্বর ফ্লোর পার হয়ে ক্যান্টিনের সামনে চোখে পড়লো দু-তিন জন প্রোডাকশন বয়ের। তবে ক্যান্টিনের মধ্যে কয়েকজন সহকারি পরিচালকের দেখা মিললো। চা পানরত তারা আড্ডা দিচ্ছিলেন বসে। একাধিক সহকারি পরিচালকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেল, এখনো ঈদের আমেজ কাটেনি। এজন্য কোনো নির্মাতা শুটিংয়ে ফেরেননি।
এফডিসির পরিচালক সমিতি ও শিল্পী সমিতির দুই অফিসেই সবসময় নির্মাতা ও শিল্পীদের আনাগোনা চোখে পড়ে। কিন্তু দুপুর একটা পর্যন্ত এই দুই অফিসের বাইরে কাউকে দেখা যায়নি। তবে পরিচালক সমিতির অফিসের মধ্যে সেখানকার অফিস সহকারি ও দু-একজন নির্মাতাকে দেখা গেছে। শিল্পী সমিতিতেও অফিস সহকারি ছাড়া কাউকে দেখা যায়নি।
এরপর এফডিসির প্রশাসনিক ভবন ও প্রযোজক সমিতির অফিসে দেখা গেছে অফিস সংশ্লিষ্টদের ভিড়। মান্না ডিজিটাল কমপ্লেক্সের সামনে ছিল তথ্য মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজেক্টের শুটিংয়ের জন্য ২০-৩০টি পি-কাপ। এছাড়া সরেজমিনে মনে হচ্ছিল এ যেন এক বিধ্বস্ত জনপদ! কোথাও কেউ নেই! কোনো শুটিং নেই। সিনেমার মানুষদের আনাগোনাও নেই।
এছাড়া এফডিসির আরেক পরিচিত স্থান কড়ইতলাতে যেখানে একের পর এক শুটিং লেগে থাকে সেটিও ছিল পুরোপুরি ফাঁকা। কোনো শুটিং সেট নির্মিত হচ্ছে এমনটাও দেখা যায়নি। দূর থেকে এক তরুণ নির্মাতার সঙ্গে দেখা হলে কুশল বিনিময় শেষে তিনি জানান, ঈদের পর বলে কথা না। এমনিতেই এফডিসিতে শুটিং কমে গেছে। এখন যতটুকুই কাজ হছে এফডিসির বাইরে শুটিং করা হচ্ছে।
ওই নির্মাতা আরও বলেন, এফডিসিতে এতগুলো সংগঠন আছে, অথচ কাজের মানুষ আছেন ক’জন? কাজই যদি না থাকে তবে কি হবে এই সংগঠনগুলো দিয়ে? এসব সংগঠনের জোরে যারা কাজ করছে তাদেরকে নানাভাবে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। আগে এতো সংগঠন ছিল না, তখন কি কাজ হতো না? তার মতে, সংগঠন থাকুক। তবে তারা কাজ করুক। সিনেমা নির্মাণ করুক। নইলে একদিন এই এফডিসিও থাকবে না!
এফডিসি জনসংযোগ কর্মকর্তা হিমাদ্রি বড়ুয়া চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, এফডিসি কর্তৃপক্ষ গত রবিবার থেকেই অফিস করছে। আজ (মঙ্গলবার) এফডিসিতে কোনো সিনেমার শুটিং হচ্ছে না। বেশিরভাগ ফ্লোর খালি পড়ে আছে। তিনি বলেন, ঈদের ছুটি শেষে এখনো অনেকেই হয়তো শুটিংয়ে ফেরেননি। আগামী সপ্তাহ থেকে আবার শুটিং এর ব্যস্ততা বাড়তে পারে।
ছবি : নাহিয়ান ইমন