প্রায় একশো বছরের জল্পনা-কল্পনা আর ঐতিহাসিক বিতর্কের পর অবশেষে যুক্তরাষ্ট্রের ২৯তম প্রেসিডেন্ট ওয়ারেন হার্ডিঞ্জের বিয়ে বর্হিভূত সম্পর্কের এক সন্তানের পরিচয় পাওয়া গেছে।
ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে এলিজাবেথ অ্যান সাবেক প্রেসিডেন্ট ওয়ারেন হার্ডিঞ্জেরই সন্তান। শুধু তাই নয়, তিনি হার্ডিঞ্জের একমাত্র ঔরসজাত সন্তান।
ন্যান ব্রিটন ১৯২৭ সালে ‘দ্যা প্রেসিডেন্টস ডটার’ নামে একটি আত্মজীবনী লেখেন। সেখানে তিনি প্রথমবারের মতো দাবি করেন যে, এলিজাবেথ অ্যান তার এবং প্রেসিডেন্টের মেয়ে। বইয়ে ব্রিটন ১৯২৩ সালে প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার সাথে নিজের ৬ বছর দীর্ঘ গভীর প্রণয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দেন।
বইটি প্রকাশ হওয়ার পর এর বিষয়বস্তু নিয়ে তুমুল হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। কেননা ব্রিটনের দাবির কোনো ভিত্তি ছিলো না। মনে করা হচ্ছিলো ব্রিটন প্রেসিডেন্টকে নিয়ে রসালো গল্প ফেঁদেছেন। তাকে ‘যৌন বিকৃত’, ‘বিপথগামী’সহ নানা ধরনের আখ্যা দেওয়া হয়। এমনকি তার লেখার প্রতিবাদে আলাদা একটি বইও লেখা হয়।
হার্ডিঞ্জ বিশেষজ্ঞ ইতিহাসবিদ জেমস রোবেনাল্ট ন্যান ব্রিটনকে তার সময়কালের মনিকা লিউইনস্কি বলে অভিহিত করেন।
কিন্তু সম্প্রতি বংশগত ডিএনএ পরীক্ষায় সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে, এলিজাবেথ অ্যানের ছেলের সাথে জেমস ব্লায়েজিং প্রেসিডেন্ট হার্ডিঞ্জের ভাইয়ের নাতি পিটার হার্ডিঞ্জ ও নাতনি অ্যাবিগেইল হার্ডিঞ্জের রক্তের সম্পর্ক রয়েছে। অর্থাৎ জেমস তাদের খালাতো ভাই।
প্রেসিডেন্ট হার্ডিঞ্জের ভাই অর্থাৎ নিজের দাদার কাছে থাকা ব্রিটনের আত্মজীবনীর কপি পাওয়ার পর থেকেই ‘ব্রিটন রহস্যে’র সমাধানের চেষ্টায় লেগে পড়েন পিটার হার্ডিঞ্জ। দীর্ঘ ৬ বছরের প্রচেষ্টা শেষে তিনি সব রহস্য ও বিতর্কের অবসান করতে সফল হন।
পিটার বলেন, ছোটবেলায় মাম্পসে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট হার্ডিঞ্জের প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়, এমন একটি কথা তার পরিবারে প্রচলিত ছিলো। আর ব্রিটনকে মনে করা হতো মানসিকভাবে অসুস্থ একজন নারী, যিনি সারাক্ষণ কল্পনার জগতেই থাকতেন।
২০০৯ সালে লেখা রোবেনাল্টের বই ‘দ্যা হার্ডিঞ্জ অ্যাফেয়ার: লাভ এন্ড এসপিওনাজ ডিউরিং দ্যা গ্রেট ওয়ার’ বইয়ে ক্যারি ফিলিপস নামে আরেক মিস্ট্রেসের সাথে ওয়ারেন হার্ডিঞ্জের সম্পর্কের কথা পড়ে পিটারের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। তারপর থেকেই তিনি অনুসন্ধানে লেগে পড়েন এবং অবশেষে সফলতা লাভ করেন।