ফকির আলমগীর। গণসংগীতশিল্পী। মেহনতি মানুষের কথা ফুটে ওঠে তার গানে। মহান মে দিবস ঘিরে তিনি খুবই ব্যস্ত। তার মাঝেই কথা বললেন চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে।
কেমন আছেন?
ভালো আছি। তবে খুব ব্যস্ত আছি।
কী নিয়ে ব্যস্ততা।
মহান মে দিবস নিয়ে। মে দিবস আসলে ব্যস্ততা থাকে, তবে খুব উপভোগ করি।
মে দিবস ঘিরে আপনার ব্যস্ততা বৃদ্ধির কারণ?
কারণ মহান মে দিবস হলো শ্রেণি সংগ্রামের ইতিহাস। সারা দুনিয়ার শ্রমিকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা হয় এই মে দিবসে। শ্রমিকদের অধিকারের কথা বলে সরা বিশ্ব। শ্রমিক আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দেয়।
শ্রমিকদের এই আন্দোলন, অর্জনের সঙ্গে গণসংগীতের সম্পৃক্ততার সূত্র কী?
আমি গণসংগীত শিল্পী। গণসংগীত সব সময় গণ আন্দোলনের কথা বলে। গণ মানুষের কথা বলে। শ্রমিকদের দাবি আদায়ের কথা বলে। সেটা আমরা আমাদের ইতিহাসের দিকে তাকালেই বুঝতে পারব। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধসহ আমাদের সব গণ আন্দোলনের সঙ্গে গণসংগীতের যোগসূত্র রয়েছে। গণমানুষকে জাগিয়ে তুলতে গণসংগীতের ভূমিকা অনেক। গণসংগীতের সূচনাটা কিন্তু আন্তর্জাতিক। যেহেতু শ্রমিক আন্দোলনের স্বীকৃতি স্বরূপ মে দিবসকে আন্তর্জাতিকভাবে পালন করা হয় সেহেতু আজকের এই দিনে আমার অনেক কিছু করার আছে বলে মনে করি।
মহান মে দিবস কী করবেন?
সকাল থেকে শুরু হবে বিভিন্ন টেলিভিশনের অনুষ্ঠান। সকালে এটিএন বাংলার ‘চায়ের চুমুকে’ অনুষ্ঠানে থাকব। এরপর একুশে টিভির ‘একুশের সকাল’–এ যাব। গাজী টিভির ‘বেলা শেষে’, এনটিভির ‘শুভ সন্ধ্যা’য় থাকব। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে তো যাবই। এছাড়া আমাদের একটা অ্যালবাম মুক্তি দেওয়া হবে। শুধু আজকের দিন না, মহান মে দিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী আমার ব্যস্ততা থাকে।
আর সপ্তাহ জুড়ে?
বিভিন্ন শ্রমিকদের সমাবেশে যাব। টিভি অনুষ্ঠানগুলোতে শ্রমিকদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা বলব। ৪ মে মাই টিভিতে মে দিবসের একক কনসার্ট আছে। গণসংগীত সমন্বয় পরিষদের অনুষ্ঠান আছে।
এতো এতো ব্যস্ততা উপভোগ করছেন নিশ্চয়?
হ্যাঁ, এই ব্যস্ততা তো আমার নয়, আমাকে ঘিরে নয়, গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীরের। একজন শিল্পী হিসেবে শ্রমিকদের কথা বলতে এতো জায়গা থেকে আমন্ত্রণ পাওয়া উপভোগের নয়?
অ্যালবাম নিয়ে বলুন।
গণসংগীতের একটা মিক্সড অ্যালবাম করছি। আমি, আগুন আর পূর্ণ। তিনজনের ছয় সাতটি গান নিয়ে ‘চলো মজদুর’ শিরোনামে অ্যালবামটি মহান মে দিবসে মুক্তি পাবে। গানগুলোর লিখেছেন গোলাম মোর্শেদ। সুর করেছেন বাসুদেব। পাশাপাশি আমার ‘লড়াইয়ের গান’, ‘শপথের গান’, ‘দুনিয়া কাঁপানো স্লোগান’ নামে তিনটি অ্যালবাম বের হবে শিগগিরই।
গণসংগীত আর অন্য সংগীতের কোনো পার্থক্য আছে?
অবশ্যই আছে। গণসংগীতের নিজস্ব শক্তি ও বৈশিষ্ট্য আছে। লড়াকু মানুষকে জাগাতে গণসংগীতের বিকল্প নেই। তবে গণসংগীতের সঙ্গে অন্য সংগীতের কোনো বাধা নেই।গণসংগীতের প্রয়োজন এখনো ফুরিয়ে যায়নি।
প্রয়োজন ফুরানোর কথা বললেন। তার মানে কোনোদিন কি গণসংগীতের প্রয়োজন ফুরাবে?
হ্যাঁ ফুরাবে। সেদিন ফুরাবে যেদিন শ্রমজীবী মানুষ তার রাজত্ব পাবে। আজও দেশে দেশে কালে কালে শ্রমিক নিগৃহীত হচ্ছে। ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। তার অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে পারছে না। সারা বিশ্বের মালিক পক্ষ যেদিন মানবিক হবে সেদিন এই সমস্যাগুলো দূর হবে।
ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
ছবি : সংগৃহীত