লোকসংস্কৃতির বিকাশ এবং সংস্কৃতিসমৃদ্ধ আগামী প্রজন্ম গড়তে হাঁটি হাঁটি পা পা করে এক বছর পার করল সাংস্কৃতিক-সামাজিক সংস্থা ‘দিয়াড়’। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিকাশের প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটি। রোববার বিকেলে (২৫ সেপ্টেম্বর) পথচলার এক বছর পূর্তিতে গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান ও গুণীজন সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরার মাধ্যমে এই অঞ্চলের লোকসংস্কৃতি, ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বৃদ্ধিতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও জাদুঘর স্থাপনের দাবি জানানো হয়। এর উপস্থাপন শৈলীতে মুগ্ধ হন উপস্থিত দর্শক।পাশাপাশি সংগঠনের শিল্পীদের আবৃত্তি, নৃত্য ও গানে আবেগআপ্লুত হয়ে পড়েন ঢাকায় বসবাসরত জেলার বাসিন্দারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্য সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘গম্ভীরা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের লোকসংস্কৃতি সংরক্ষণ ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বৃদ্ধিতে দরকারি অবকাঠামোর জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেলে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে। সংস্কৃতি একটি শিশুকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। এর চর্চা ছাড়া শিশু যান্ত্রিক হয়ে যায়।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বাজেট ঘাটতি ও স্বল্পতা রয়েছে। তা সত্ত্বেও সরকার সংস্কৃতিচর্চাকে বেগবান করতে যে অবদান রেখে চলেছে, তা এর আগে কেউ করেনি। দেশের সংস্কৃতিকর্মীরা নিজেদের পকেটের পয়সা খরচ করে সংস্কৃতিচর্চাকে বাঁচিয়ে রাখছেন। এই অদৃশ্য বাজেট আছে বলেই আমাদের সংস্কৃতি এখনো প্রাণবন্ত।’
সংগঠনটির আহ্বায়ক মুখলেসুর রহমান মুকুলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হকের সঞ্চলনায় সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক এলতাস উদ্দিন, বিখ্যাত কার্টুনিস্ট অধ্যাপক রফিক-উন নবী (রনবী), সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এতে শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের গর্ব অধ্যাপক এলতাস উদ্দিনকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
‘দিয়াড়’ এরই মধ্যে সাফল্যের সঙ্গে একটি বছর পার করেছে সংস্থাটি। গম্ভীরা, আলকাপ, বিয়ের গীত, লাঠিখেলা, ঝার্নিখেলাসহ গ্রাম-বাংলার মূল সংস্কৃতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় সংগঠনটি। শিগগিরই শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গে যৌথ আয়োজনে ‘দিয়াড়’ জাতীয় গম্ভীরা উৎসবের আয়োজন করবে।