চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

লালমিয়ার ক্যালগেরি সফর

ক্যানাডার টরেন্টো শহরে বসবাসের সময় মাত্র দু’ বছর পার হয়েছিলো। স্থিতিশীলতা তখনও  আসে নি।  দেশের জন্য মন আনচান করে (দেশের জন্য মন এখনো আনচান করে)।  গ্রীষ্মের শেষের দিকের কথা। শুক্রবার বিকেলে  সাপ্তাহিক  বাজার করতে  বেরুবো, দেখি টিপটিপ বৃষ্টি হচ্ছে।   এ ধরণের বৃষ্টি আমার মোটেই পছন্দ না।  অনেকটা নাঁকি কান্নার মতোই বিরক্তিকর।  আরে  ঝরবিই  যখন তখন অঝোর ধারায়ই ঝর !  এক কাপ চা বানিয়ে দোতালার বসার ঘরের জানাল দিয়ে দেখছি।  অপেক্ষা করছি কখন প্রকৃতির এই নাঁকি কান্না বন্ধ হবে।  নিমেষে ফিরে  গেলাম গ্রামের বাড়ির টিনের চালে বৃষ্টির শব্দে।  এমন শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যাবার কথা, কিন্তু কেন জানি ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে যেত।

টেলিফোনের  কর্কশ শব্দে আমার  ধ্যান ভঙ্গ  হলো।  অপর প্রান্ত থেকে  বললো, বাইসাব কিমুন আচেন? অতি পরিচিত কণ্ঠ। আমি নিরুত্তর। বোঝার চেষ্টা করছি কে। আবারো বললো, ভাইসাব আমি লাল মিয়া, এইবার চিনবার পারছেন? আমি বললাম হা চিনতে পেরেছি। সে সময়ে দেশের বাইরে কথা বলতে ফোনকার্ড লাগতো, কিন্তু লালমিয়ার কণ্ঠস্বর খুবই পরিষ্কার।   আমি বললাম, আরে আপনি ? এতদিন পর  কি মনে করে ? লাল মিয়া বললো, আমি তো টরেন্টোতে। আমি বললাম, আমার ফোন নাম্বার কোথায় পেলেন ? বললো, ক্যান ? আপনার সমস্যা করলাম না কি?  আমি বললাম, আরে না!  তা টরেন্টোর কোথায় ? ওর উত্তর  শুনে তাজ্জব।

একঘন্টা ধরে এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে আছে  হোটেলে যাবে কিন্তু ট্যাক্সিতে যেতে ভয় পাচ্ছে।  যদি ছিনতাইকারীর কবলে পরে তাই ভয়ে বের হচ্ছে না।  আমাকে অনুরোধ করলো আমি যেন তাকে এয়ারপোর্ট থেকে হোটেলে নামিয়ে দেই।  আমি বললাম কি বলেন , এদেশে ছিনতাইকারী পাবেন কোথায়।  আপনার কোনো ভয় নাই ট্যাক্সি  নিয়ে হোটেলে চলে যান, আজ রাতে তো অবশ্যই দেখা করতে আসবো।  তাছাড়া কাল-পরশু আমার ছুটি আছে, আমি সকালে হোটেল থেকে আপনাকে নিয়ে আসবো। লাল মিয়া বললো, কি যে কন না বাই, আম্রিকা তো আরো ধনী দ্যাশ, সেইহানে নিউয়র্কে ছিন্তাই হইলে এইহানে ছিন্তাই ক্যান হইবার  পারবো না ? বুঝলাম তার সাথে তর্কে যেয়ে লাভ নেই।

নব্বই  দশকের কথা,  আমার বড় ভাইয়ের নির্দেশে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকারেজ হাউজকে প্রতিষ্ঠিত করার কাজে নেমেছি।   আমি যে সময় এই ব্রোকারেজ হাউজের দায়িত্ব নিয়েছিলাম তখন সমুদ্রের জ্বলোচ্ছাসের মতই  ধীরে ধীরে ফুঁসছে শেয়ার বাজার। অগণিত মানুষের ঢল।  রাস্তায় শাকসব্জী  ফেরিওয়ালার  মত  শেয়ার বিক্রি করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।  সে ফাঁদে অনায়াসে পা ফেলছে নিরীহ লোকজন। যাদের অধিকাংশই শেয়ার কি তা জানে না।  শুধু এটুকুই জানে শেয়ার কিনলে টাকা এক সপ্তাহে দ্বিগুন। জমিজমা বিক্রি করে শেয়ার কিনতে এসেছে।  অন্যান্য ব্রোকারেজ হাউজের মতই আমাদের হাউজে অগণিত গ্রাহক। সবাই টাকা ইনকামের স্বপ্নে বিভোর।

সেই সময় আমাদের হাউজে ঢুকে পড়লো এক লোক, তাঁর পরনে সাদা লুঙ্গি, সাদা সিল্কের পাঞ্জাবি, হাতে একটা ব্যাগ।  চোখে সুরমা, তেল দেয়া চুল, পরিপাটি করে আঁচড়ানো।   তাঁর  বেশভূষা দেখে সবাই একটু ভীত সন্ত্রস্ত। সে উঁচু স্বরে  বললো, ” আপনাগো সাব  আছে নি”।  আমি বললাম, এদিকে আসেন, কি ব্যাপারে আসছেন?   আমি ঘরের এক কোণায়  কিছুটা আড়াল করা একটা রুমে বসতাম, কিন্তু কোনো দরজা নেই।  আমাকে দেখে, আকর্ণবিস্তৃত একটা হাসি দিয়ে আয়েস করে বসলো আমার সামনে।  বললো, চিপায় বইয়া রইছেন কিল্লাই ?  আমারে চিনবার পারছেন? আমার নাম লাল মিয়া। আপ্নের লগে তো আপ্নের বাইয়ের আরমানিটোলা গার্মেন্টসে  চিন পরিচয় অইছিল।   আমি ঐহানে ছাটের ব্যবসা করতাম।  আমার কাপড়ের আড়তও আছে ছয়খান।

আমার স্মৃতিতে সূর্য কিরণের মতই উদ্ভাসিত হলো তার চেহারা। বছর কয়েক   আগে ভাইয়ার গার্মেন্টসে গিয়েছিলাম।  তখন পরিচয় হয়েছিল।  সে অনবরত কথা বলছিলো।  আর তার মুখ থেকে ভুরভুর করে  জর্দার  গন্ধ বের হচ্ছিল।    যা হোক তারপর তো অনেকদিন হয়ে গেলো, কিন্তু লাল মিয়ার অকস্মাৎ আগমনের কারণ চিন্তা করতে করতেই সে বললো, গেলো বছর আপনার বাই কৈছিলো সেয়ারে কিছু টাকা খাটাইতে।  মর জালা  আমি কি তহন সেয়ার  বুজতাম ? কনচেন দেহি? অহনো যে বুজি তাও ঠিক না। যাওকগা, অহন  আমারে  কিছু সেয়ার  খরিদ করেন।  ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে বললো, এইহানে বিস  লাখ  আছে,  এই টেকা দিয়া বন্নি করেন, লাগলে আরো দিমুনে।  হালার  কাগজের দাম যে টেকার  চাইতে বেসি  তা বাপের জন্মেও হুনি নাইক্যা ।  আমি বললাম, এখন তো শেয়ার  কেনা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, কিছুদিন অপেক্ষা করেন তারপর কিনবো, আপনার টাকা নিয়ে যান।  একটু হতাশ হয়েই বললো, বাই দিলে চোট পাইলাম, ব্যবসার লাইগ্যা টেকা আইন্যা হেইডা আবার ফেরত লইয়া যামু, আমাগো বংশে হেইডা নাইক্যা।

মনে করেন হগ্গল টেকাই গাঙের পানিত  বাইশ্যা গেছে গা। কিনেন দিল ডা  খুস অইবো। ও বুইল্যা গেছিলাম গা, এই প্যাকেটে হাজির  বিরানি  আনছি, যা আছে হগলতে  মিলা খাইবার পারুম।  সে সময় বেশ ক্ষুধার্থ ছিলাম, জ্বলন্ত উনোনে যেমন লাকড়ি দিয়ে খোঁচা মেরে আগুন চেতিয়ে দেয়া হয়, হাজির বিরিয়ানী তেমন করে আমার ক্ষুধাকে বাড়িয়ে দিলো। খাবার পর লাল মিয়া বললো, পান খাইবেন নি? তার মজা করে পান খাওয়া দেখে আমার কিঞ্চিৎ ইচ্ছা হলো বললাম দেন। সে বললো, আপ্নের তো বিয়া বাড়ি ছাড়া পান খাওনের অব্যস নাই কা। জর্দা দিমু না, এক খিলি মিঠা  পান বানাই।  ওর যেমন শেয়ার সম্পর্কে ধারণা নাই তেমনি আমার পান সম্পর্কে কোনো ধারণা নাই।  তবে সে ঠিক আন্দাজ করছে বিয়া বাড়ি ছাড়া পান কখনো খাওয়া হয় নাই।

শেয়ার   বাজারে ধ্বস নামলো। ক্রেতা নেই সবাই বিক্রেতা।  এমন সময় আবার লাল মিয়ার আবির্ভাব।  তার মনে কোনোই দুঃশ্চিন্তা এবং দুঃখের চিহ্ন মাত্র নেই, বললো, চিন্তা কইরেন না আমি তো কইছিলাম ওই টাকা পানিত পড়লেও কোনো সমস্যা নাইক্কা।  আরো টেকা  লইয়া আইছি। শেয়ার যহন পানির  দর অইবো, আমার শেয়ার খরিদ  শুরু  করবেন।  টেকা  দিয়া ক্যামতে টেকা  বানাইতে  অয় হেইডা আমি জানি।  আমি বললাম, আপনার টাকা দেয়া লাগবে না, আপনার সব টাকাই  আছে, সে সময় আপনার কোনো শেয়ার  কেনা হয় নাই।  আমাদের সবাইকে অপ্রস্তুত করে লাল মিয়া শিশুর মত কেঁদে উঠলো। তারপর বললো, বাই  আপ্নে আমার বাপের কাম  করচেন।  আমি নানা কারণে তার উপর বিরক্ত হলেও সে কখনোই আমার উপর বিরক্ত হয় নাই।

স্মৃতিচারণ করতে করতে  টরেন্টোর পিয়ারসন এয়ারপোর্টে গিয়ে দেখি এলাহী কান্ড।  লাল মিয়া তার পুরা পরিবার আর গোটা দশেক ছোট বড় স্যুটকেস নিয়ে হাজির।  আমার যদিও মিনি ভ্যান,  তারপরও  হয় স্যুটকেস আর না হয় যাত্রী, যে কোনও একটা নিতে হবে।   তার ধারণা পেছনের সিট ফোল্ড করে সব লাগেজ রাখবে আর মাঝের  আসনে  মা ছোট মেয়েকে কোলে নিয়ে বসবে, পাশের সিটে ছোট বোনকে কোলে নিয়ে বসবে তার বড় মেয়ে আর সামনের সিটে  লাল মিয়া।  আমি তাঁকে ক্যানাডার নিয়ম কানুন বোঝানোর পর সে কিছুটা শান্ত  হলো।  সাহস করে  বললাম, যে কয়দিন থাকবেন আমার বাসায় থাকবেন। সে অবাক হয়ে আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বললো, আপনার কাম আপ্নে করছেন আমার দিল খুস অইছে, মাগার আমি তো হোটেল বাড়া কইরাই আইছি, টিকেটের লগেই সব টেকা -পয়সা কিলিয়ার করা আছে।  আর আমি আপনারে দেহনের  লাইগ্যাই এহানে আইছি। যহন দ্যাশে ফিরুম তহন আপনার বাই জিগাইবো, আমার ছোটো বাইয়ের  লগে দ্যাহা  করছেন ? তহন তো আমার জবান বি বন্দ অইয়া যাইবো গা । আমি দুইদিন পরই আম্রিকা যামু।   আসলে আমাকে ঝামেলায় না ফেলতেই সে এ ব্যবস্থা করেছে।

পরদিন আমার ছোট টাউন হাউজের বাসায় সবাইকে নিয়ে আসলাম। সকালের নাস্তা খেয়ে নায়াগ্রা ফল দেখতে যাবো। আমার বাসায় এসে মনে হলো লাল মিয়া চুপসে গেছে। ওর ভাষায় বলতে গেলে জবান বন্দ। পরে ওর কথায় বুঝলাম কেন তার মন খারাপ। আমাকে আড়ালে ডেকে বললো, বাই এই কৈতরের খোপে থাকার লাইগ্যা ক্যানাডায় আইছিলেন।  আমি এর কোনো জবাব না  দিয়ে মৃদু একটি হাসি উপহার দিলাম তাঁকে। ওদের নিয়ে দুইদিন খুব আনন্দেই কাটলো। এই দুইদিনে লাল মিয়ার ছিনতাইকারীর ভয় দূর হয়েছে। তাই এয়ারপোর্টে পৌঁছে দেবার কথা না বললেও আমি তাদের এয়ারপোর্টে পৌছিয়ে দিলাম।

আমরা প্রায় আট  বছর হয় ক্যালগেরি চলে এসেছি। এর মধ্যে লাল মিয়ার ফোন, সে  টরোন্টোতে আসছে। দেশে ফেরার আগে ক্যালগেরি আসার কথা জানিয়েছিল তাও  তো প্রায় এক মাস হয়ে গেলো।  এমন সময় কোবিড ১৯ ভাইরাস  মহামারী আকারে সার বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লো।  এই দুঃসময়ে আবার লাল মিয়ার ফোন।  সে বললো, দেকছেন নি কারবার ডা?  আল্লাহর গজব নামচে দুন্ন্যায়, কি জীবানু দিয়া সব মাইনষেরে গরের  মদ্যে হান্দাইয়া দিচে। হালার আম্রিকা, তর পরমাণু দিয়া ঠেকা, পারছ কি না দেহি ! কি কন বাই, এক্কারে উচিত কতা কইচি না? আমি উত্তর না দিয়ে হু হা করে আলাপ সারলাম। আরো প্রায় বছর কেটে গেলো চাকুরীহীন গৃহবন্দী অবস্থায়। অনেকদিন পরে মাস্ক ছাড়া বের হলাম এবং প্রাণ ভরে শ্বাস নিলাম। আহঃ কি বিশুদ্ধ নির্মল  হাওয়া। গত তিন মাস আগে থেকে আমি ডায়েট শুরু করেছি , ক্যালগেরি অধিবাসী লেখক লতিফুল কবিরের “রোগমুক্তি দীর্ঘ জীবনের বৈজ্ঞানিক বাস্তবতা” বইটি পড়ে।    অনেকটা কিটো ডায়েটের মতই, কিছুটা ব্যতিক্রম। বেশ উপকৃত হলাম। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আমার বাড়তি ওজন কমে গেলো  ক্লান্তি দূর হয়ে গেলো, নিজেকে আর বোঝা মনে হয় না।

গ্রীষ্মের আগমনে খুশির বার্তাকে আরো আনন্দময় করতেই মনে হয় ক্যানাডাতে  করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় শূন্যরে কোঠায় এসে দাঁড়ালো। বিশেষ করে আলবার্টায়। আলবার্টা সরকার হঠাৎই সব কিছু শিথিল করে দিল। এই খুশিতে যথারীতি ঘোরাঘোরি ও ক্যাম্পিং শুরু হয়ে গেলো।  অবশেষে লালমিয়াও  ক্যালগেরি পৌঁছে গেলেন । এবারও তাঁরা হোটেলে উঠেছেন, আমাদের আতিথেয়তার  সুযোগ না দিয়েই।   এবারও তাদের সময় সংক্ষিপ্ত ।  আমাকে দেখা মাত্রই তার চোখ কপালে উঠে গেলো, করচেন কি? এক্কেরে হুক্কায়া হোডা হইয়া গেচেন গা ! গটনা কি! অসুক-বিসুক অইলো নি। আহ্হারে কিমুন গোলগাল চেহারা চ্যাপ্টা কইরা ফালাইচে। আমি হেসে বললাম, ডায়েট শুরু করেছি তো তাই।  এখন অনেক এনার্জি।  সে বললো, তাই বইলা চামড়ার লগে কোনো গোস্তই  রাকবেন না ! বিচানায় হুইলে তো আড্ডি দুক পাইবো। এইডা আপ্নে কুনো কামের কাম করচেন ? আমি নিরুত্তর রইলাম। একটু পর বের হতে হবে, অল্প সময়ে যত ঘোরা  যায়  সেই পরিকল্পনা করছি।  টেবিলে নাস্তা দেয়া হলো পরোটা, ডিম ভাজি, মাংসের ভুনা, যতদূর সম্ভব আমার গিন্নি ওঁদের খাদ্যাভ্যাসের সাথে মিল রেখেই খাবার পরিবেশন করেছে।  সবাই খেতে বসলাম, আমার হাতে কফির মগ দেখে বললো, বাই  কি নাস্তার কাম সারছেন? আমি বললাম না এই তো আমার নাস্তা, সকালে এক কাপ ব্ল্যাক কফি, ব্যাস।

অবাক হয়ে বললো, কন  কি, প্যাটে ভুক নিয়ে গাড়ি চালাইবেন ক্যামতে ? রাস্তায় কাইত হৈয়ে পইড়া যাইবেন তো!  আমি হাসি আর ধরে রাখতে পারলাম না বললাম, চিন্তা নাই ভরসা রাখেন।  তারপর বললো, তয়  আপনার খানা-খাদ্য কি? আমি আমার খাবারের চার্ট তাকে বললাম এবং কিছু খাবার তাকে দেখলাম।  ওর মধ্যে কেফির ( kefir) ছিল।  সেটা দেখে বললো, যাউকগা, খাদ্যের মধ্যে দুধ রাখছেন, খুব বালা করচেন। আমি বললাম, দুধ না এটা কেফির (Kefir)। এইডা আবার কি ? আমি তাকে গ্লাসে কেফির ঢেলে দিলাম। এক চুমুক খেয়ে খেয়েই বললো, এইডা তো মাঠঠা। কাফের কন ক্যান? জব্বর সাদ, তয় আমগো ঢাকার মাঠঠা অনেক সাদের। আপ্নে এক কাম কইরেন, লবন আর গুলমরিচ মিলায়া নাড়া  দিয়া খাইয়েন  জব্বর মজা পাইবেন কইলাম, লগে লেম্বু চিপ্পা দিলে তো কতাই নাইক্যা।  কেফির  কোথায় কোথায় পাওয়া যায় তার বৃত্তান্ত জেনে নিলো।

সব ঘোরাঘোরি শেষে বললো, খুব বালা সময় কাটলো আপনাগো লগে, বাবি-সাবের যত্নে আমাগো দিল খুস হৈছে। যাউক্কা বালা থাইকেন, ইনশআল্লাহ আবার সাক্ষাত হইবো।  তয় এইবার টরন্টো গিয়া  হোমানে  কাফের মারুম। আমি বললাম কাফের মারবেন মানে ? ওই যে যেইডা খাওয়ালেন মাঠঠা। আমি বললাম, ওটার উচ্চারণ কেফির, কাফের না। সে বললো, ওই ওইলো  একার-উকারে  ব্যাস কম?

আরেখ্যান কতা কইবার চাই  আপনাগো রাস্তা গাটের নামগুলান ক্যামন জানি।  আমি বললাম, কেমন ? সে বললো জিমুন মনে করেন, আপনারা জিহানে আগে থাকতেন রাস্তার নামের লগে প্যানপ্যানানি বেসি, প্যানারোমা, প্যানেটেলা, প্যানমাউন্ট। আমার হাসি ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।  তারপর আবার বললো, বড় রাস্তার এইডা কিমুন নাম রাকচে, আল্লার দুইন্ন্যায় আর নাম খুইজ্যা পায় নাইক্যা ? হরিনের পাও, কাউয়ার  পাও, কাউয়ার ছাউ।  এইডা  কোনো রাস্তার নাম  অইবার  পারে?   আমি বুঝলাম, ডিয়ার ফুট , ক্রো ফুট, ক্রো চাইল্ড ।