চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

লন্ডনে এসিড হামলার দায়ে বাংলাদেশি যুবকের কারাদণ্ড

পূর্ব লন্ডনে এসিড হামলার দায়ে এক বাংলাদেশি যুবক ও তার সহযোগীকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এসিড হামলা চালিয়ে দুই যুবকের জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দেয়ায় আদালত তাদের ভিন্ন ভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তদের একজন বাংলাদেশি কাহা মিয়া (২৪), যাকে ৯ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। তার সহযোগীর নাম জানা যায়নি। এই অপরাধের জন্য ওই সহযোগীর ৬ বছরের কারাদণ্ডাদেশ হয়েছে। এছাড়া তাকে কিশোর অপরাধ কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

আদালত জানায়, বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত দুই যুবক মুসা মিয়া ও সাঈদ বাশার পূর্ব লন্ডনের একটি ভবনের ১১ তলা থেকে নিচে রাখা তাদের গাড়ি দেখছিলেন। সেসময় একদল যুবক তাদের গাড়িও ওপর উঠে লাফালাফি করছিল ও লাথি মারছিল। মুসা মিয়া তখন যুবকদের সামনে যায়। নিরাপত্তার জন্য বাশারও তার পাশে দাঁড়ায়।

এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। সেময় কাহা মিয়ার সহযোগী ব্যাগ থেকে এসিডের একটি বোতল বের করে কাহা মিয়াকে দেয়। কাহা মিয়া বোতল খুলে মুসা ও বাশারের ওপর নিক্ষেপ করে।

এতে বাশারের মুখ ও কাঁধ পুড়ে যায়। শক্তিশালি এসিডে তার শরীরে থাকা জ্যাকেটও পুড়ে যায়। আর মুসা মিয়ার চোখ ও মুখের কিছু অংশ পুড়ে যায়। এতে তিনি ২০ শতাংশ দৃষ্টি হারিয়ে ফেলেন।

এরপর তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পুলিশ তাদের হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাদের লন্ডন হাসপাতাল ও মোরফিল্ড চক্ষু হাসপাতালে নেয়া হয়।

পুলিশ জানায়, এই এসিড হামলা ক্ষতিগ্রস্তদের জীবনে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে। তারা মানসিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এ ঘটনার পর ক্ষতিগ্রস্তদের বেশ কয়েকটি সার্জারি হয়েছে। এমনকি মুসাকে ত্বক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে দিনে ২২ ঘণ্টা প্লাস্টিকের মুখোস পড়ে থাকতে হয়েছে।

আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় মুসা বলেন, দোষীদের আজীবন কারাদণ্ড হওয়া উচিত। যদি তাদের দীর্ঘমেয়াদী সাজা না হয় তাহলে লোকজন আবারও এসিড বহন করবে এবং মানুষের ওপর নিক্ষেপ করবে।

সাম্প্রতিক বছর গুলোতে ব্রিটেনে এসিড হামলার পরিমান বেড়ে গেছে। পুলিশের তথ্যমতে, ২০১৫ সালে ২৬১ টি এসিড হামলার ঘটনা ঘটে। গত বছর এর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৪৫৮ তে।