রোহিঙ্গাদের অবশ্যই যত দ্রুত সম্ভব তাদের জন্মস্থান মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘকে আরও কঠোর হওয়ার আহবান জানিয়ে আন্তর্জাতিক মহলকে শিগগিরই এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইইউ এবং ইউএনএইচসিআর যৌথভাবে আয়োজিত রোহিঙ্গা বিষয়ে ফান্ড সংগ্রহে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন: বাংলাদেশ আর এই বোঝা নেওয়ার মতো অবস্থানে নেই এবং রোহিঙ্গাদের অবশ্যই তাদের ফিরে আসতে যেতে হবে। অবিলম্বে তাদের স্বদেশ নিজ ভূমিতে ফিরতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন: বাংলাদেশ মিয়ানমারের নৃশংসতা ও সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের প্রতি শর্তহীন এবং অগাধ মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। যখন কোনও দ্বিতীয় দেশ দায়িত্ব নিতে রাজি ছিল না, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এই সীমান্ত খুলে মিলিয়ন মিলিয়ন রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষা করেছিলেন। সাম্প্রতিক কিছু ভাসমান রোহিঙ্গা যখন আশ্রয় খুঁজছিল তখন বাংলাদেশ আবার তাদের উদ্ধার করতে এসেছিল কিন্তু অন্য রাষ্ট্রগুলো তাদের দায়িত্ব থেকে সরে আসে।
তিনি বলেন: ৭৫তম জাতিসংঘ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তার দেওয়া বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন সমস্যাটি মিয়ানমার তৈরি করেছিল এবং এর সমাধান অবশ্যই মিয়ানমারে হওয়া উচিত।
প্রতিমন্ত্রী শীঘ্রই প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাজ করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন। তিনি গভীর হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ২০১৮ সালে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আন্তরিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত মিয়ানমারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব এবং তার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থতার কারণে একটিও রোহিঙ্গাকে প্রত্যাবাসন করা যায়নি। গত তিন বছরে প্রত্যাবাসনের অগ্রগতির অভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ব্যাপক হতাশার কারণ হয়ে ওঠে তারা পাচার, উগ্রপন্থীকরণ, মাদক ব্যবসা এবং অন্যান্য অপরাধমূলক ক্রিয়াকলাপে সংবেদনশীল হয়ে পড়েছে।
প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য, আসিয়ান, জাতিসংঘ এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সরকারে প্রতি আহ্বান জানান শাহরিয়ার আলম। তিনি রোহিঙ্গাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি করতে এবং তাদের ফিরে যেতে উৎসাহিত করতে পারে এমন পদক্ষেপ নেবার জন্য নেতৃত্ব গ্রহণে প্রস্তাব করেন।
মিয়ানমারের নীতিমূলক কর্মকাণ্ডের পরেও রোহিঙ্গাদের বাঁচাতে জাতিসংঘের ভূমিকাও দৃশ্যমান নয় বলে তার হতাশা প্রকাশ করেন। নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তার পাশাপাশি, তিনি জরুরি প্রত্যাবাসন বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ইচ্ছা দেখানোর জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান।
ভার্চুয়াল সম্মেলনে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়াসহ অন্যান্য আঞ্চলিক দেশগুলোও অংশ নেয়।