‘ছোটকাকু’ সিরিজের উপন্যাস নিয়ে এবার ঈদেও ধরাবাহিক নাটক তৈরি করছে চ্যানেল আই। এবারের পর্ব ‘ঢাক বাজলো ঢাকায়’। চলছে শুটিং। স্পটে বসেই চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে কথা বললেন সবার প্রিয় ‘ছোটকাকু’, নন্দিত অভিনেতা আফজাল হোসেন। নাটকটি পরিচালনাও করছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সুদীপ্ত সাইদ খান।
এবার ‘ছোটকাকু’ সিরিজে দর্শক ছোটকাকুকে কীভাবে দেখবে?
আমরা যতবার ছোটকাকু দেখিয়েছি, ততবারই আলাদা গল্প দেখানোর চেষ্টা করেছি। ছোটকাকুকে আলাদা দেখানোর চেষ্টা করিনি। এবার ছোটকাকু সিরিজে আমরা দেখাব একজন গায়ক গান গাইতে পারছে না। ছোটকাকু সিরিজের মূল বিষয় হচ্ছে রহস্য উদঘাটন। গত সিরিজে আমরা খেলা নিয়ে রহস্য গল্প দেখিয়েছি। এবার একজন গায়ক কেন গান গাইতে পারছে না, সেই রহস্য উদঘাটন করব।
ছোটকাকু সিরিজের এই গায়ক চরিত্র খুঁজতে আপনাদের নাকি বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে?
আমরা চেয়েছিলাম গায়কের চরিত্রে কোনো অভিনেতা নন, প্রকৃত গায়ককে নিয়ে কাজ করতে। কিন্তু টাইম শিডিউল মেলানোসহ নানা কারণে সেই পরিকল্পনা বাদ দিতে হয়েছে। কারণ আমাদের একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজটা শেষ করতে হবে। সে কারণে আমরা একটা নতুন ছেলেকে নিয়ে কাজটা করছি। তবে যেহেতু গল্পটা একজন গায়কের ওপর, তাই আমরা এ নাটকে গান ব্যবহার করব। এস আই টুটুলের সুর করা একটি গান ব্যবহার করব।
ঢাকায় ‘ছোটকাকু’র শুটিং হচ্ছে। কারণ কি?
এবারই প্রথম আমরা ঢাকায় শুটিং করছি। এর আগে ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় শুটিং করেছি। এবার গল্পটা পুরোই ঢাকা কেন্দ্রিক। নামটাও ‘ঢাক বাজলো ঢাকায়’। সে কারণেই ঢাকায় শুট করছি।
সাহিত্যকে যখন পর্দায় উপস্থাপন করা হয়, তখন নানা সমস্যা হয়। সাহিত্যের প্রকৃত প্রতিরূপ পর্দায় ফুটিয়ে তোলা কষ্টকর। আমরা এই সিরিজে ছোটকাকুর সাহিত্যরূপ কতটা দেখতে পারব?
সাহিত্য হচ্ছে পাঠের জন্য। আর আমরা যেটা বানাই, সেটা হচ্ছে দেখার জন্য। দেখার জন্য সাহিত্যকে উপস্থাপন করার সময় আমরা অনেক কিছু বাড়াই। এটা এজন্য করি যে আকর্ষণটা বৃদ্ধি করবার জন্য। এক্ষেত্রে আমার সুবিধা হচ্ছে ফরিদুর রেজা সাগরের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে, ভালো বোঝাপড়া রয়েছে। আর ফরিদুর রেজা সাগরের একটা বিষয় হচ্ছে যে তিনি একটা বিষয়ে পরিষ্কার বলে দিয়েছেন যে, আমার কাজ হচ্ছে লেখা। লেখার পর সেটা নাটক কিভাবে হবে সেটা কতটা বাড়বে বা কমবে সেটা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নেই। আমার লেখার কাজ সম্পন্ন করেছি এতেই আমি তৃপ্ত। তো এক্ষেত্রে আমরা আকর্ষণ বাড়ানোর জন্য যেসব গল্পে বাড়তি কিছু যোগ করি সেটা তার সঙ্গে,আমার বোঝাপড়া থাকার কারণে সুবিধা হয়।
এতে আপনি কাজটি মন মতো করতে পেরেছেন?
অবশ্যই। কারণ কাজটি করতে গিয়ে যদি বারবার লেখকের কথা ভাবতে হতো বা লেখকের অনুমতি নিতে হতো, তাহলে কাজটি আমি ঠিক মতো করতে পারতাম না। আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে লেখক যেহেতু বলে দিয়েছেন, নাটকে কী হবে না হবে, সেটা নিয়ে তার মাথা ব্যথা নেই, ফলে নির্মাতা তার মনের মতো কাজ করতে পারছেন। এই স্বাধীনতাটা নির্মাতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এতে নির্মাতা সহজেই কাজ করতে পারেন।
আপনি ‘সেদিনও ছিল বসন্ত’ ও ‘নিয়তির মুচকি হাসি’ নামে দুটি ঈদের নাটকে কাজ করেছেন। ঈদের কাজ নিয়ে জানতে চাই।
আমি তো আসলে অভিনয় করা বাদই দিয়েছি। তবে কোনো উৎসব বা ঈদকে কেন্দ্র করে দুয়েকটা কাজ করা হয়। আর যে দুটি কাজের কথা বললেন তা অনেক আগেই নির্মাণ করা হয়েছে। প্রচার হবে ঈদে। আর ঈদে বা উৎসবে অনেকে মনে করেন আমাকে নিয়ে কাজ করবেন। আর আমারও অভিনয়ের নেশা যেহেতু আছে সেহেতু গল্প পছন্দ হলে সময় সুযোগ পেলে কাজ করা হয়। এ নাটক দুটিও সেভাবেই করা।
নাটক দুটিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা মনে আছে?
আসলে এখন তো একটা নতুন প্রজন্ম গড়ে উঠেছে। তারা নতুন চিন্তা নিয়ে হাজির হয়েছে। নতুনদের সঙ্গে, নতুন চিন্তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেই আমি নতুনদের সঙ্গে কাজ করি। এ কাজগুলোও সে কারণেই করেছি।
বর্তমানের নাটক নিয়ে দর্শকের অভিযোগ অনেক। বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন?
দর্শকের অভিযোগ তো সত্যি। দর্শকদের আর কী বলব! আমি আমার নিজের নাটকই তো দেখি না। নাটকের টাইম শিডিউল। বিজ্ঞাপন কতটা দেখাবে, সব মিলিয়ে টাইমে কোলাবে কিনা? এসব কারণে নাটক দেখা হয় না।