পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাত ঘুরে নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত ভার এসেছিল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে। সংস্থাটির তদন্তে উঠে আসে, ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই ওই হত্যার পরিকল্পনা করেন ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছিল নিহত নুসরাতের পরিবার। সেদিনই অধ্যক্ষকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ওই ঘটনার জেরে ৬ই এপ্রিল মাদ্রাসার পরীক্ষার হল থেকে ডেকে ছাদে নিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া সেই মাদ্রাসারই কয়েকজন শিক্ষার্থী।
সেদিন সকালে শামীম, নুর উদ্দিন, হাফেজ আব্দুল কাদের মাদ্রাসায় যান। নুসরাত পরীক্ষা দিতে গেলে পুর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক উম্মে সুলতানা পপি নুসরাতকে তার বান্ধবীকে মারধরের কথা বলে ছাদে যেতে বলে।
ছাদে উঠলে কামরুন্নাহার মনি, শাহাদত হোসেন শামীম, জোবায়ের ও জাবেদ নুসরাতের তার পেছন পেছন ছাদে যায়। সেখানে তারা নুসরাতকে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নিতে কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলে।
তদন্তে জানা যায়, নুসরাত স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে পপি, মনি, শাহাদাত ও জুবায়ের তাকে শুইয়ে তার হাত,পা ও মুখ বেঁধে ফেলে। পরে জাভেদ নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢালে। এরপরই শামীমের ইঙ্গিতে জুবায়ের আগুন ধরিয়ে দেয়। তারপর সেখান থেকে সবাই চলে যায়।
আদালতে জবানবন্দিতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছিলেন মামলার প্রধান আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিলিয়া মাদ্রাসাছাত্রী অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাসহ অন্যারা।
বৃহস্পতিবার ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ১৬ আসামিরই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।