চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

যেখানে থমকে থাকল সাকিবের ক্যারিয়ার

তার হাত ধরে তছনছ হয়েছে ক্রিকেট ইতিহাসের অনেক রেকর্ডের পাতা। রথী-মহারথীদের পাশে স্থান করে নিয়েছেন অসাধারণ সব পারফরম্যান্সে। বাংলাদেশের ক্রিকেট পেয়েছে সোনালী সব সাফল্যের দেখা। আইসিসির দুই বছরের নিষেধাজ্ঞায় সেই সাকিব আল হাসানের ক্যারিয়ার থমকে থাকল অকালেই।

সবধরনের ক্রিকেট থেকে সাকিব আল হাসানকে ২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টুয়েন্টি অধিনায়কের নিষেধাজ্ঞার কথা জানায় বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

যার মধ্যে এক বছর থাকছে স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবরের পর আইসিসির কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে হবে এবং সন্তোষজনক হলে এক বছর পরই উঠে যাবে সাকিবের নিষেধাজ্ঞা।

টাইগারদের বাঁহাতি স্পিন বোলিং অলরাউন্ডারের বিপক্ষে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পরও তা আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটকে (আকসুর) না জানানোর অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে সংস্থাটি। আইসিসির দুর্নীতি-বিরোধী নিয়ম ভঙ্গের তিনটি অভিযোগ সাকিব স্বীকার করে নেয়ার পর সিদ্ধান্তের কথা জানাল আইসিসি। যেজন্য সর্বনিম্ন ৬ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের শাস্তির বিধান রয়েছে।

এক বছর পর নিষেধাজ্ঞা যদি ওঠেও, তবুও আগামী টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা হচ্ছে না সাকিবের। এক বছরের পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর। আর অস্ট্রেলিয়ায় টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু একই বছরের ১৮ অক্টোবর।

আইসিসি বলছে, আগামী এক বছর সাকিব খেলতে পারবেন না, কিন্তু তিনি যদি সাজার সব শর্ত মেনে চলেন তাহলে ২০২০ সালের ২৯শে অক্টোবর থেকে মাঠে ফিরে আসতে পারবেন।

তার মধ্যেই বর্তমানে ৩২ বছর ২১৯ দিন বয়সী এ ক্রিকেটারের জীবন নদীতে গড়িয়ে যাবে অনেক জল। ক্যারিয়ারও পড়ন্ত বেলায় পৌঁছে যাবে। দেশে-বিদেশে দাপটে খেলে বেড়ানো সাকিবের ব্যাটের ঝলক বা কব্জির ঘূর্ণিতে মরচে পড়ে যাওয়ার শঙ্কাও থাকে।

দেখে নেয়া যাক কোথায় এসে থমকে থাকল সাকিবের ক্যারিয়ার
বাংলাদেশের জার্সিতে ৫৬ টেস্ট, ২০৬ ওয়ানডে ও ৭৬টি টি-টুয়েন্টি খেলেছেন সাকিব।

টেস্ট: ২০০৭ সালের ১৮ মার্চ চট্টগ্রামে ভারতের বিপক্ষে অভিষেক সাকিবের। চট্টগ্রামেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে গত সেপ্টেম্বরের টেস্টটি হয়ে থাকল তার আপাত শেষ টেস্ট। এই যাত্রায় সাদা পোশাকে পাঁচ সেঞ্চুরি ও ২৪ ফিফটিতে ৩৯.৪০ গড়ে ৩,৮৬২ রান করেছেন তিনি, সেরা ২১৭। আছে ২১০ উইকেট। ইনিংসে ১৮বার পাঁচ উইকেট ও ম্যাচে দুবার দশ উইকেট আছে সংগ্রহে, সেরা ইনিংসে ৩৬ রানে ৭ উইকেট, আর ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে সেরা ১২৪ রানে ১০ উইকেট।

ওয়ানডে: ২০০৬ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে অভিষেক সাকিবের। আপাতত যতি পড়ল গত বিশ্বকাপে লর্ডসে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটিতে। দীর্ঘ যাত্রায় ২০৬ ওয়ানডেতে ৯ সেঞ্চুরি ও ৪৭ ফিফটিতে ৩৭.৮৬ গড়ে ৬,৩২৩ রান করেছেন সাকিব, সেরা অপরাজিত ১৩৪। বোলিংয়ে ২৬০ উইকেট তার নামের পাশে, সেরা ২৯ রানে ৫ উইকেট।

টি-টুয়েন্টি: ২০০৬ সালে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ছোট সংস্করণে অভিষেক সাকিবের, শেষ হয়ে থাকল চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামা। পথে ৭৬ ম্যাচে ১,৫৬৭ রান তার, সেরা ৮৪। আর বাঁহাতি স্পিনে সংগ্রহ ৯২ উইকেট, সেরা ২০ রানে ৫ উইকেট।

এছাড়া, প্রথম শ্রেণিতে ৫,৭৭৭ রান ও ৩১০ উইকেট। লিস্ট-এ ক্রিকেটে ৭,৪৬৫ রান ও ৩২১ উইকেট, ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টুয়েন্টি ও সবধরনের টি-টুয়েন্টি মিলিয়ে ৪,৯৭০ রান আর ৩৫৪ উইকেট সাকিবের নামের পাশে আছে।