বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে সবধরনের ক্রিকেট থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল-আইসিসি। নিষিদ্ধ হওয়ার পর নিজের প্রতিক্রিয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন সাকিব। সেইসঙ্গে আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমে যুক্ত থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আইসিসির দুর্নীতিবিরোধী নিয়ম বা অ্যান্টি করাপশন কোড লঙ্ঘনের তিনটি অভিযোগ সাকিব আল হাসান স্বীকার করে নেয়ার পর মঙ্গলবার নিজেদের ওয়েবসাইটে সিদ্ধান্তটি জানায় আইসিসি। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার পরও সেটা গোপন করার অভিযোগে বাংলাদেশ তারকার এই সাজা।
নিষেধাজ্ঞার রায় জেনে আইসিসিকে সাকিব বলেছেন, ‘আমি যে খেলাটিকে পছন্দ করি তা থেকে নিষিদ্ধ হওয়ায় আমি স্পষ্টতই খুব দুঃখিত। তবে পদ্ধতি অনুযায়ী প্রতিবেদন না দেয়ার জন্য আমি আমার দোষ পুরোপুরি মেনে নিয়েছি। আইসিসি, আকসু দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য খেলোয়াড়দের উপর নির্ভরশীল এবং আমি এই উদাহরণে আমার দায়িত্ব পালন করিনি।’
‘বিশ্বের বেশিরভাগ খেলোয়াড় এবং অনুরাগীর মতো আমিও চাই ক্রিকেট একটি দুর্নীতিমুক্ত খেলা হোক এবং আমি আইসিসি, আকসু দলের সাথে কাজ করার প্রত্যাশায় রয়েছি, যাতে তাদের শিক্ষাব্যবস্থা সমর্থন করে এবং তরুণ খেলোয়াড়রা যাতে একই ভুল না করে, যেটা আমি করেছিলাম’ যোগ করেন সাকিব।
আইসিসির জেনারেল ম্যানেজার অ্যালেক্স মার্শার বিবৃতিতে বলেছেন, ‘সাকিব আল হাসান একজন অত্যন্ত অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। তিনি অনেকগুলো শিক্ষামূলক অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন এবং আইসিসির কোডের আওতায় তিনি বাধ্যবাধকতাগুলো জানেন। এই পদ্ধতির প্রতিটি বিষয় তার জানা উচিত ছিল।’
‘সাকিব তার ত্রুটিগুলো মেনে নিয়েছেন এবং তদন্তে পুরোপুরি সহযোগিতা করেছেন। তিনি ভবিষ্যতের শিক্ষায় স্বচ্ছতা ইউনিটগুলোকে সহায়তা করার, তরুণ খেলোয়াড়দের তার ভুল থেকে শিক্ষা নিতে সহায়তা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। আমি এই প্রস্তাব গ্রহণ করে খুশি।’
সাকিবের দুই বছরের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা। আইসিসি বলছে, আগামী এক বছর তিনি খেলতে পারবেন না, কিন্তু তিনি যদি সাজার সব শর্ত মেনে চলেন তাহলে তিনি ২০২০ সালের ২৯শে অক্টোবর থেকে মাঠে ফিরে আসতে পারবেন।
২০১৮ সালে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজ ও ২০১৮ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে দুর্নীতির প্রস্তাব দেয়া হয় সাকিব আল হাসানকে। সাকিব সেটা যথাযথ কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ, আইসিসির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটকে জানায়নি।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে এবং ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের সানরাইজার্স হায়দরাবাদ বনাম কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের একটি ম্যাচে সাকিব ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পান। আইপিএলের ম্যাচটি ২০১৮ সালের ২৬শে এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয়।