লম্বা সময় কোচিং করিয়েছেন বিকেএসপিতে। প্রায় একযুগ কাজ করেছেন বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগে। তুলে এনেছেন শত প্রতিভা। জাতীয় দলের অনেক তারকা ক্রিকেটারের মেন্টর তিনি। তবে ক্রিকেট অন্তপ্রাণ নাজমুল আবেদিন ফাহিমের বর্তমান ব্যস্ততা কেবলই নারী ক্রিকেট ঘিরে।
বিসিবির ওমেন্স উইংয়ের ইনচার্জ হয়ে চলতি বছর থেকে নাজমুল আবেদিন কাজ করছেন সালমা-রুমানা-জাহানারাদের নিয়ে। তার প্রেসক্রিপশনেই বাংলাদেশ দলে যোগ হয়েছে ভারতীয় নারী কোচিংস্টাফ। তাতে নারী ক্রিকেটে ঘটেছে নব জাগরণও।
অল্প সময়ের মধ্যেই এসেছে একের পর এক জয়। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার পরীক্ষায় আগামী মাসে নতুন চ্যালেঞ্জে অবতীর্ণ হতে যাচ্ছে সালমা খাতুনের দল।
চলতি মাসের শেষদিকে বাংলাদেশ সফরে আসছে পাকিস্তান নারী দল। ১০ দিনের সফরে তারা খেলবে চারটি টি-টুয়েন্টি ও একটি ওয়ানডে। নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এটিই টিম টাইগ্রেসের শেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ। চলছে তারই প্রস্তুতি, তবে এশিয়ার সেরাদের মানসপটে বড় একটি জায়গাজুড়ে বিশ্বকাপ স্বপ্ন।
প্রস্তুতি, আসন্ন সিরিজ, বিশ্বকাপ, উন্নতির জায়গাগুলো নিয়ে কথা বলেছেন নারী ক্রিকেটের দেখভালের দায়িত্বে থাকা নাজমুল আবেদিন। বৃহস্পতিবার মিরপুরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তার কথোপকথনটি তুলে ধরা হল।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সম্ভাবনা কেমন দেখছেন?
আমরা যত ম্যাচ খেলব, তত ম্যাচ জিতে যাব; বিষয়টা তা না। এমন ভাবা ঠিক না। কেননা পাকিস্তান কতটা শক্তিশালী দল সেটা ওদের ফলাফলই প্রমাণ করে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আমরা ভালো খেলছি।
নিয়মিতই ভালো খেলছি, তাই আমরা আমাদের সমান সমান পর্যায়ে রাখছি। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে আমরা খুশি। আপাতত আমরা প্রতিটি ম্যাচই জেতার জন্য নামব। যদি ভালো খেলি তাহলে কেনো জিতব না?
দলের শক্তিশালী দিক কোনটি?
আমাদের দলের ভালো দিকটা হচ্ছে বোলিং। বিশেষ করে স্পিনারদের কম্বিনেশন। আমাদের দলে লেগস্পিনার আছে, রাইটআর্ম অফস্পিনার আছে। প্রত্যেকেই ভালো বল করে।
গত তিন মাসে এরা যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। এছাড়া আমাদের পেস বোলাররা উন্নতি করেছে গত কয়েকমাসে। সব মিলিয়ে বলব বোলিংটা আমাদের বড় শক্তি।
এছাড়া ব্যাটসম্যানরা কাজ করেছে ব্যাটিং নিয়ে। ব্যাটসম্যানরা ধারাবাহিক তা বলব না। মোটামুটি একটা রান দাড়া করানো যায় এখন। ফিল্ডিংয়েও সম্প্রতি উন্নতি হয়েছে।
আরেকটি দিকে উন্নতি হয়েছে, তা হচ্ছে ফিটনেস। রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে আমরা এখন সবল। আগে যেখানে দুই রানের জায়গায় এক রান হত, সেটা এখন আর হবে না। অতিরিক্ত ৫-৭ বা ১০ রান আমরা পাবো ফিটনেস দিয়েই।
দলের পরিকল্পনা কেমন হবে?
আমাদের দলের দুই ওপেনারই হার্ডহিটার। তাদের হিট করার ক্ষমতা খুব ভালো। এটা আমাদের ম্যাচে এগিয়ে নিয়ে যায়। এখনো আমাদের দলের স্ট্রাটেজি একইরকম থাকবে, আমরা চেষ্টা করব শুরু থেকেই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে।
এটা করতে না পারলে আমাদের জন্য কঠিন হবে বড় দলের সঙ্গে জেতা। মেয়েরা যেরকম পারফর্ম করে আসছে, তাতে আশা করছি সামনেও ভালো পারফর্ম করবে।
অধিনায়ক সালমার পারফরম্যান্স কেমন হচ্ছে?
ও বোলিং ওপেন করছে, চার ওভার করে প্রতি ম্যাচেই বল করছে। সে আমাদের ওপেনার বোলার। আবার অধিনায়ক হলে যে ব্যাটিং উপরে করবে এমনটা না, ব্যাটিং ভালো করলেই উপরে উঠে আসবে।
সম্প্রতি ভালো ব্যাটিং করেছে, কিন্তু আমরা ওর পারফরম্যান্স সেভাবে দেখতে পাইনি। আর যেহেতু মিডলঅর্ডার ভালো করছে, তাই তাকে সাত বা আটে নামানো। দলের পরিকল্পনাই এটা।
আজ কী দেখলেন মেয়েদের ব্যাটিংয়ে?
ওদের ব্যালেন্সটা দেখলাম। পাওয়ার ক্রিকেট খেলতে গেলে ওদের ব্যালেন্স কেমন হবে সেটা নিয়ে আলোচনা করলাম। আজ ভালোই মনে হয়েছে। তবে আরও চর্চা করলে আরও স্থায়ী হবে বিষয়টা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ খুলনায় হওয়ার কথা ছিল। ভেন্যু কক্সবাজার কেন? সেখানে তো ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত নয়…
আমাদের প্রথম পছন্দ ছিল কক্সবাজারে খেলা। কেননা ওয়েস্ট ইন্ডিজে আমাদের সেই ধরণের পরিবেশে খেলতে হবে। এছাড়া সেখানে হোটেল থেকে মাঠ অনেক কাছে, যাওয়া সহজ। আবহাওয়া তো আমাদের হাতে নেই। তবে আশা করছি সেখানকার গ্রাউন্ড স্টাফদের সহযোগিতা পাব।