চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে ব্লগাররা যেভাবে মার্কিন স্বার্থ রক্ষা করবে

যারা ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের ধর্ম বিরোধীতা করে লেখে ব্লগার সাজেন তাদের দার্শনিক ভিত্তির কোনো পরিচয় নেই। বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মকে বিরোধীতা ফয়েরবাখ-হেগেল থেকে কার্ল মার্ক্স – এঙ্গেলস এরাও কেউ করে নাই। হেগেলের বস্তুবাদী দর্শনের উপর ছুরি চালিয়ে তার ভাববাদী চিন্তার উপর সমালোচনা করে মার্ক্স বলেছেন দ্বান্দিক বস্তবাদ ফয়েরবাখ-হেগেলই আবিস্কার করেছেন।

ফয়েরবাখের বস্তুবাদ ও হেগেলের দ্বান্দিকতাকে একটি মনুষ্য আকৃতিতে রুপ দিলে তার মাথা থাকে নিচের দিকে আর পা থাকে উপরের দিকে, আমি শুধু এটার মাথা ও পা সোজা করে দিয়েছি। দর্শনের শুরু এনাক্সমিন্দাসের বস্তুবাদ থেকে পরে সক্রেতিস এরিস্টটলের আমলে তা ভাববাদে প্রবেশ করে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করে। বারনাড রাসেল থেকে কিছুটা বস্তুবাদে প্রবেশ করে ও মার্ক্স – এঙ্গেলস এর সময় পরিপূর্ণ দ্বান্দিক বস্তবাদ এ প্রবেশ করে ।

যে সমস্ত দার্শনিকরা দর্শন চর্চা করেছেন তারা চিন্তা করেছেন সমাজ ও রাষ্ট্র কিভাবে পরিচালনা হবে সেই অবস্থান থেকে। সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় ধর্ম যতটুকু প্রয়োজন ভাববাদী দার্শনিকরা ততোটুকু জুড়ে দিয়েছেন আবার যতোটুকুর প্রয়োজন নাই বস্তুবাদীরা ততোটুকু সমালোচনা করেছেন। মূলত দর্শন চর্চা ও রাজনৈতিক চিন্তা একে অপরের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত।

সেই প্রেক্ষিতে রাষ্ট্র পরিচালনাকারী রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট দার্শনিক ভিত্তি থাকতে হয়। রাজনীতি ৩টি স্তম্ভের উপর দাড়িয়ে থাকে। দর্শন – অর্থনীতি – সমাজনীতি = রাজনীতি। কাজেই রাজনীতি বহির্ভূত কোন দর্শন ও অর্থনৈতিক চর্চা হতে পারে না। যারা এখন শুধুমাত্র ধর্মের বিরোধীতা করে ব্লগার হয়েছেন তাদের রাজনৈতিক দর্শন বলতে কোনো কিছু লেখায় পাওয়া যায় না । রাষ্ট্র নিয়ে , সমাজ ও রাজনৈতিক অর্থনীতি নিয়ে কোনো লেখা পাওয়া যায় না যা দিয়ে এই সমাজের নতুন প্রজন্ম নতুন রাজনৈতিক দার্শনিক চিন্তা করতে পারবে। এরা বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মকে বিরোধীতা করে।

বিজ্ঞান নিজেই একটি দ্বান্দিক বস্তবাদী দর্শন। ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের সংঘর্ষের চেয়ে রাষ্ট্র পারিচালনার রাজনৈতিক দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের সংঘর্ষ বেশি । ধর্মীয় চিন্তার সাথে যেমন দর্শন , রাষ্ট্র , অর্থনীতি , সমাজনীতি , রাজনীতি , রাষ্ট্র পরিচলনা জড়িত তেমনি বস্তুবাদী দর্শনের সাথেও দর্শন , রাষ্ট্র , অর্থনীতি , সমাজনীতি , রাজনীতি , রাষ্ট্র পরিচালনা জড়িত। বিজ্ঞানের সাথে অর্থনীতির নানা মুখী পণ্য আবিস্কার ও মুনাফা জড়িত, রাষ্ট্র পরিচালনা জড়িত নয় ।

যারা ধর্মের বিরোধীতা করে তারা রাষ্ট্রের বা সমাজের কোনো প্রয়োজনীয় অংশ নয়, রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় অংশ হচ্ছে যারা রাষ্ট্র ও সমাজ চিন্তা থেকে লেখালেখি করে । রাষ্ট্র সেই সমস্ত তরুণ চিন্তাবিদদের সাথে রাজনৈতিক মোকাবেলা করবে এবং রক্ষা করবে। কিন্তু রাষ্ট্র ও সমাজনীতি বহির্ভূত কোনো লেখা রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে এমন কাজে রাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়া হাস্যকর এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব বিশৃঙ্খলা রোধ করা।

আমেরিকা ইসলাম ধর্ম বিরোধী লেখক ব্লগারদের আশ্রয় দিবে। এটাই স্বাভাবিক। বর্তমান আমেরিকা ধর্ম বিরোধী বিশেষ করে ইসলাম ধর্ম বিরোধী নানামুখী কর্ম তৎপরতায় লিপ্ত। আমেরিকার বর্তমান রাজনৈতিক কৌশল হচ্ছে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষকে উস্কে দিয়ে নিজেদের তৈরি আল-কায়দা বা এ জাতীয় জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থান ঘটানো।

এই ধরনের জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থান এর পিছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ সুবিধা ভোগ করে , বিশেষ করে সামরিক রাজনৈতিক আধিপত্য চালানোর সুযোগ পায়। এই সুযোগটি বাংলাদেশের জন্য তাদের এখন বিশেষ প্রয়োজন বলে মনে হচ্ছে। এই সমস্ত ব্লগাররা আমেরিকায় গিয়ে এই দেশের স্বাভাবিক নিরিহ ধর্মপ্রাণ মানুষদের ক্ষেপিয়ে মার্কিন নীতিকে সাহায্য করবে।

(এ
বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর
সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে।)