চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

যা যা থাকছে স্মার্টকার্ডে

স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় তিনি বলেছেন, ‘আইডেন্টিফিকেশন
সিস্টেম ফর এনহ্যান্সিং অ্যাক্সেস টু সার্ভিসেস’ – আইডিইএ প্রকল্পের অধীনে
নির্বাচন কমিশন নাগরিকদের তথ্য সম্বলিত ডাটাবেস বা তথ্যভাণ্ডার তৈরি করেছে।
বর্তমানে সেই ডাটাবেসে ১০ কোটিরও বেশি নাগরিকের তথ্য সংরক্ষিত আছে।’

আজ রোববার রাজধানী ঢাকার মধ্য দিয়ে শুরু হলো স্মার্টকার্ড বিতরণ। সোমবার কুড়িগ্রামের একটি বিলুপ্ত ছিটমহলে স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। আগামী দেড় বছরে সারাদেশে মোট ১০ কোটি স্মার্টকার্ড বিতরণ করা হবে।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নাগরিক ও নাগরিকের তথ্যের নিরাপত্তার কথা ভেবেই প্রথমে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়।

স্মার্টকার্ডের মাধ্যমে ব্যক্তিপরিচয় নিশ্চিত করা সহজ হবে এবং এর ফলে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িতদের সনাক্ত করা সহজ হবে। অনলাইন ও অফলাইন – উভয় পদ্ধতিতেই কার্ডধারীর পরিচয় যাচাই করা সম্ভব হবে। এতে আর ভবিষ্যতে নিরাপত্তা হুমকি থাকবে না বলে মনেকরেন প্রধানমন্ত্রী।

নতুন স্মার্টকার্ডে কী থাকছে?

স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রটি এখনকার লেমিনেটেড কাগজের পরিচয়পত্রের মতো সহজে নকল করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোটারের বা পরিচয়পত্রধারীর আইডি নম্বর ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য এই আইডিতে সংরক্ষিত থাকবে।

নতুন এই স্মার্ট পরিচয়পত্র (স্মার্টকার্ড) ২৫টি খাতে ব্যবহার করা হবে এবং ২২ ধরনের নাগরিক সেবা পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে তিন স্তরে ২৫টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য থাকবে। প্রথম স্তরের নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য খালি চোখে দেখা যাবে, দ্বিতীয় স্তরের বৈশিষ্ট্যগুলো দেখার জন্য প্রয়োজন হবে বহনযোগ্য যন্ত্রাংশ এবং শেষ স্তরের জন্য কোনো ল্যাবরেটরিতে ফরেনসিক টেস্ট করার দরকার পড়বে।

সেবা খাতগুলোর মধ্যে রয়েছে: সরকারি সব অনলাইন সুবিধা, ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, সম্পত্তি কেনাবেচা, টিআইএন প্রাপ্তি, বিয়ে রেজিস্ট্রেশন, ই-পাসপোর্ট, ব্যাংক হিসাব খোলা, ব্যাংক ঋণগ্রহণ , সরকারি ভাতা উত্তোলন, সহায়তা প্রাপ্তি, বিআইএন, শেয়ার-বিও অ্যাকাউন্ট, ট্রেড লাইসেন্স, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, বীমা স্কিম, ই-গভর্নেন্স, গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ, মোবাইল সংযোগ, হেলথ কার্ড, ই ক্যাশ, ব্যাংক লেনদেন ও শিক্ষার্থীদের ভর্তির কাজ ছাড়াও আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় কাজ।

স্মার্টকার্ড পাবেন কীভাবে?

সারাদেশে প্রত্যেক ভোটার এলাকায় স্কুলগুলোতে এক বা একাধিক ক্যাম্প করা হবে। সেখানে গিয়ে ভোটাররা তাদের যার যার পুরনো জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিয়ে নতুন কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। ২৫ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র নেয়ার সময় ভোটারদেরকে ১০ আঙ্গুল এবং কর্নিয়ার ছাপ দিতে হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

ইতিমধ্যে প্রথমবারের মতো নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে ভোটার হওয়ার আবেদন করার সুযোগ দিচ্ছে ইসি। বিষয়টি জাতীয় পরিচয়পত্র বিধিমালায় রাখা হচ্ছে। এমনকি যারা ভোটার তালিকাভুক্ত নন তারাও জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, প্রায় দু’শ টাকা মূল্যমানের স্মার্টকার্ড প্রথমে সব নাগরিককেই বিনামূল্যে বিতরণের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। কার্ডের মেয়াদ কমপক্ষে ১০ বছর। এরপর কার্ড নবায়নের জন্য ফি নির্ধারণ করা হচ্ছে (সাধারণ) ২৫০ টাকা। আর জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য ফি থাকছে ৫০০ টাকা।

হারানো বা নষ্ট কার্ড তুলতে প্রথমবারের ফি (সাধারণ) ৫শ’ টাকা। আর জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য ফি এক হাজার টাকা।

দ্বিতীয়বার হারালে ফি ধরা হয়েছে (সাধারণ) এক হাজার টাকা। আর জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য দু’হাজার টাকা। এছাড়াও দ্বিতীয়বারের পর কার্ড হারালে বা নষ্ট হলে জরিমানা বা ফি হিসেবে (সাধারণ) দুই হাজার টাকা এবং জরুরি ভিত্তিতে প্রদানের জন্য চার হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে।

ফিগুলো ইসি সচিব বরাবর পে-অর্ডার বা ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে দেয়া যাবে।