চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে ট্রিপল মার্ডার মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

একটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার ছৈলাবুনিয়া গ্রামের চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডার মামলার প্রধান আসামি মো. শহিদুলকে ঘটনার ৩ বছর পর ঢাকার সাভার থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে ক্লুলেস ওই তিন হত্যা মামলাটির রহস্য উদঘাটনও সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার মো. মইনুল হাসান।

সোমবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।

তিনি বলেন: প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শহিদ জানায়, দুই স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও সে চাচা-চাচির পালিত মেয়ে কাজলীকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। চাচী এতে রাজি না হওয়ায় ক্ষোভে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। তবে শহিদ একাই এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলেও পুলিশ অধিকতর তদন্ত জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা নিশ্চিত হওয়ার জন্য তাকে আদালতে সোপর্দ করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইবেন বলেও জানান পুলিশ সুপার।

২০১৭ সালের ১ আগস্ট নিজ ঘরে নৃশংসভাবে খুন হন গলাচিপা উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের ছৈলাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা দেলোয়ার মোল্লা (৫৫), তার স্ত্রী পারভিন বেগম (৪৫) ও ১৫ বছরের কিশোরী পালিত মেয়ে কাজলী। দুজনকে ধারালো দা দিয়ে নির্মম ভাবে কুপিয়ে ও মেয়ে কাজলীকে জবাই করে হত্যা করা হয়। পরদিন ২ আগস্ট সন্ধ্যায় প্রতিবেশী হনুফা বেগম গিয়ে প্রথমে মরদেহ দেখতে পেয়ে অন্যান্যদের খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। ৩ আগস্ট নিহত দেলোয়ার মোল্লার ভাই ইদ্রিস মোল্লা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে গলাচিপা থানায় মামলা করেন। একই ঘটনায় নিহত দেলোয়ার মোল্লার বোন পিয়ারা বেগম এক সপ্তাহ পর বাদী হয়ে কোর্টে ২২ জনকে সুনির্দিষ্ট ও অজ্ঞাত আরো ১০/১৫ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। থানায় দায়েরকৃত প্রথম মামলার সাথে সংযুক্ত করে একত্রে দু’টি মামলা তদন্তের আদেশ দেন কোর্ট। তবে ঐ দু’টি মামলায় শহিদুল আসামি ছিল না। এ হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই শহিদুল এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দেয়। সে নিহত দেলোয়ার মোল্লার ভাই প্রথম মামলার বাদী ইদ্রিস মোল্লার ছেলে।

পুলিশ সুপার জানান, নিহত কিশোরী কাজলীর খোয়া যাওয়া নোকিয়া মোবাইলের আইএমই নাম্বারের সূত্র ধরে ঐ মোবাইলটি গত ৯ অক্টোবর ঢাকার পল্লবী থানার বাউনীয়া বাঁধ এলাকা থেকে মো. আবু রায়হান নামে এক যুবকের কাছ থেকে উদ্ধার করলে সে পুলিশকে জানায় ফোনটি তার আত্মীয় শহিদ দেয়। সেই সূত্র ধরেই গত ১০ অক্টোবর সন্ধ্যায় সাভার থেকে শহিদকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গলাচিপা থানার ওসি (তদন্ত) হুমায়ুন কবির সঙ্গীয় ফোর্সসহ গ্রেপ্তার করে। শহিদ সেখানে নাম পরিবর্তন করে জাহাঙ্গির পরিচয়ে অটোরিকশা চালাতো এবং প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। ট্রিপল হত্যার পর থেকে এলাকার বা আত্মীয়-স্বজনের সাথে তার কোন যোগাযোগ ছিল না।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. মাহফুজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শেখ বিল্লাল হোসেন।