চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

মুসলিম দেশেই ‘মুসলিম বিরোধী’ ট্রাম্পের ব্যবসা-বাণিজ্য!

মার্কিন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প চরম মুসলিম বিদ্বেষী হলেও তার ব্যবসা-বাণিজ্যের একটি বড় অংশই মুসলিম প্রধান দেশে। তার ব্যবসার বড় অংশ পারিচালিত হয় উপসাগরীয় দেশ আরব আমিরাত ও এশিয়া-ইউরোপের প্রবেশ দ্বার তুরস্কে। ট্রাম্প তার ব্যবসার পরিধি মুসলিম প্রধান কাতার, সৌদি আরবের মতো দেশগুলোতেও ছড়িয়ে দিতে চান। তার ভালো সম্পর্ক রয়েছে জর্ডানের বাদশাহ’র সঙ্গেও।

আরব আমিরাতে পরিচালিত ট্রাম্প অর্গানাইজেশন ট্রাম্পের মালিকানাধীন একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি। আমিরাতের শীর্ষস্থানীয় একটি ডেভেলপার কোম্পানির সাথে যৌথ মালিকানার ব্যবসা করছে ট্রাম্পের কোম্পানি।

আগে থেকে মুসলিম বিদ্বেষী হলেও সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবের পর ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী থেকে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় তার প্রস্তাবের কড়া সমালোচনা করছে। বিভক্তি দেখা দিয়েছে তার দল রিপাবলিকান পার্টিতেও।

চরম মুসলিম বিরোধী মনোভাব প্রকাশের পরও মুসলিম দেশগুলোতে ট্রাম্পের ব্যবসা-বাণিজ্যর কোনো প্রভাব ফেলবে না বলেই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

ট্রাম্পের মন্তব্যে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের ব্যবসায়িক মিত্র দুবাইয়ের দামাক প্রোপার্টিজের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নায়াল ম্যাকলোগলিন আল-জাজিরাকে বলেন, ‘ট্রাম্পের রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত ব্যাপারে আমরা আগ্রহী নই। তার সাথে আমাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক। তিনি যে মন্তব্য করেছেন তা নিয়ে আমাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।’

দুবাইয়ের মতো তুরস্কেও ট্রাম্পের ব্যবসা রয়েছে। তুরস্কে ট্রাম্পের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ট্রাম্প টাওয়ারও বরাবরের মতো চালু আছে। তবে দুবাই কর্মকতাদের মতো কোনো রকম মন্তব্য করতে রাজি হয়নি তুর্কি অফিস।

সিসলি জেলাতে অবস্থিত ইস্তাম্বুল ভিত্তিক আবাসিক ও অফিস টাওয়ার ট্রাম্পের বিতর্কিত বক্তব্য নিয়ে আল-জাজিরার কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

ট্রাম্পের মেয়ে ও পারিবারিক ব্যবসার একজন উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ইভানকা জানিয়েছেন, ট্রাম্প তার ব্যবসার পরিধি কাতার, সৌদি আরবের মতো মুসলিম প্রধান দেশগুলোতেও ছড়িয়ে দিতে চান।

এ ব্যাপারে কাউন্সিল অন আমেরিকান রিলেশনস (কেয়ার) এর মুখপাত্র ইবরাহিম হুপার বলেন, ‘তিনি মুসলিম দেশ থেকে টাকা বানাতে পারলে খুব খুশি হন আবার তাদেরকেই আক্রমণ করেন সম্ভাব্য সবচেয়ে জঘণ্য ভাষায়। ট্রাম্পের এই দ্বিমুখী নীতির কারণ আমার বোধগম্য নয়’।

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় না এটা তাকে কোনো বার্তা দিতে পারবে। মনে হচ্ছে তিনি বিবেচনা বোধ হারিয়েছেন, তিনি সমাজকে সংঘাতের দিকেই শুধু নিয়ে যেতে পারবেন। কোনো সুষ্ঠু সমাধান তার কাছে আশা করা বোকামি’।

গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের প্রবেশের উপর ‘পূর্ণ’ নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবী জানান রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট মনোনয়ন প্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তার এই বক্তব্যের সমালোচনা করে এটিকে অ-মার্কিনসুলভ বক্তব্য বলে অভিহিত করে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউজ। হোয়াইট হাউজের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ডোনাল্ডের এ বক্তব্য মার্কিন মূল্যবোধ ও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থের পরিপন্থী। একই রকম প্রতিক্রিয়া দেখায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় পেন্টাগনও।