আজ ১৭ মে, আজ সেই দিন; যেদিন সব হারানো একজন মানুষ বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেছিলেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে, দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সালের এইদিনে রাজধানীর কুর্মিটোলা বিমান বন্দরে তাকে বরণ করে নিয়েছিলেন লাখ লাখ মানুষ।
আমরা জানি, তার এই ফেরা কোনো দিক থেকেই খুব একটা সহজ ছিল না। প্রথমত ছিল বাবা-মাসহ পরিবারের বেশির ভাগ আপনজনকে হারানোর তীব্র যন্ত্রণা, ভারী কষ্ট আর বুকে চেপে বসা চিরকান্না। আর ছিল একদল ষড়যন্ত্রকারীর অদৃশ্য বাধা, তাকে ধ্বংস করে ফেলার গোপন সব পরিকল্পনা। কিন্তু সেসব বাধা পেছনে ফেলে সাধারণ মানুষের ভালোবাসা নিয়ে সেই শেখ হাসিনা শুধু ফিরেই আসেননি। চার-চারবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও হয়েছেন।
৪১ বছর আগে সেইদিন শেখ হাসিনা আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আজ আপনারাই আমার আপনজন। মানুষের মুক্তির সংগ্রামে অংশ নিতে আমি ফিরে এসেছি। আওয়ামী লীগের নেতা হতে আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হিসেবে আপনাদের পাশে থাকতে চাই।’
আজ এতগুলো বছর পর ঠিক একইভাবে আবেগাপ্লুত হয়েছেন তিনি। সকালে একনেকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এত বড় দায়িত্ব নেব, তা কখনো ভাবিনি। ১৭ মে আমি ফিরেছিলাম, কারণ দেশের জন্য আমাকে কিছু করতে হবে; এই সিদ্ধান্ত নিয়ে। কত অপপ্রচার, কত ষড়যন্ত্র- তবুও মানুষ আমার প্রতি আস্থা রেখেছে। সেটাই আমার বড় শক্তি। আমি মানুষের আস্থা, ভালোবাসা পেয়েছি।
হ্যাঁ, এই ৪১ বছর ধরে শেখ হাসিনা দেশের মানুষকে দেয়া নিজের সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। সরকার প্রধান হিসেবে বাংলাদেশেকে নিয়ে গেছেন বড় উচ্চতায়। যা এই দেশের কোনো সরকার প্রধান করে দেখাতে পারেননি। কাজ ও কথা মিল রেখে তিনি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে এখনো লড়াই করে যাচ্ছেন। মূলত সোনার বাংলা গড়তে জাতির পিতার যে স্বপ্ন, তার বাস্তবায়নেই কাজ করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। অর্থনীতি বিভিন্ন সূচকে দেশের যে অগ্রগতি, তা আজ বিশ্ব স্বীকৃত। বিশেষ করে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগখাতে। এর বাইরে নারী শিক্ষা, শিশুদের সুরক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মতো বিষয়গুলো সেই ইতিবাচক অগ্রগতিরই প্রমাণ। আগামীদিনগুলোতে এসব খাতের উন্নয়ন সূচক সুন্দর এক বাংলাদেশকেই তুলে ধরে আমাদের সামনে।
আমরা মনে করি, কোনো দেশের সরকার প্রধান আন্তরিকভাবে চাইলে একটি দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অসম্ভব কিছু নয়। শেখ হাসিনা নিজেই সেই প্রমাণ রেখেছেন। দেশকে আরও অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবেন তিনি, এটাই আমাদের কামনা।