চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

ভারতীয় ভিসা জটিলতায় ক্ষুব্ধ সঙ্গীতশিল্পী আসিফ

জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী আসিফ আকবর খুব শীঘ্রই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার জাতীয় পুরস্কার রাষ্ট্রের কাছে ফেরত দিবেন।বিগত বেশকয়েক বছর যাবৎ ভারতীয় হা্ই কমিশনের সঙ্গে ভিসা সংক্রান্ত ব্যাপারে আসিফের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

গতকাল দুপুরে আসিফ তার সামিাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট শেয়ার করে লিখেছেন ‘‘সতেরো বছরের সঙ্গীত ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় ইন্ডাষ্ট্রীর মানুষের সুখে দূঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। নিজের স্বার্থে যুদ্ধ কখনোই করিনি, করবোও না । ভারতীয় কোন শিল্পীর সাথে বাংলাদেশ হাই কমিশন এ ধরনের আচরন করলে ফুঁসে উঠতো পুরো ভারত। তারা তাদের সন্তানদের দেশে খাওয়াতে পারুক বা না পারুক, অন্তত এভাবে নিজ ভূ-খণ্ডে অপমানিত হতে দিতো না।

বাংলাদেশে এটা হবেনা, আমি পথচলা শুরু করেছি এই ইন্ডাষ্ট্রীর ওপর ভরসা না করেই। সঙ্গীতের নানা পদের সংগঠন, তথাকথিত এজেন্ডাধারী বুদ্ধিজীবি,নাগরিক সমাজ কিংবা রাষ্ট্র কখনোই আমার পাশে দাঁড়াবে না জেনেই আমি আমার পথচলা অব্যাহত রেখেছি। রাষ্ট্রে অবরুদ্ধ আছি নয় বছর, তাতেও কোন অসুবিধা নেই, দেশে তো থাকতে পারছি অন্তত … !!!

সর্বোচ্চ সম্মাননা জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি দেশে যখন ইমার্জেন্সী চলছিলো, এর সম্পূর্ন কৃতিত্ব ‘রানী কুটির বাকী ইতিহাস’ ফিল্ম টিমের। কোন পার্টি বাজির মাধ্যমে এ সম্মাননা পাইনি। পৃথিবীর অন্ততঃ আটত্রিশটি দেশ ভ্রমনের পর দেড় ভড়ি ভারতীয় হাই কমিশনের এই অপমান আমার নয়, রাষ্ট্রের দেয়া সম্মাননার। রাষ্ট্রের অপমানের ভার বয়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয় । তাই আগামী সপ্তাহে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে জাতীয় পুরস্কার রাষ্ট্রের কাছেই ফেরত দিয়ে দেবো।

ভারতীয় হাই কমিশনের গৃহপালিত শিল্পাঙ্গনের সমস্ত শিল্পীদের বলতে চাই- আমি এবং আমার পরিবার নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, হয়তো আরো হবো, কিন্তু আপনারাও জয়ী হননি। শুভাকাঙ্ক্ষীদের সবাই থামাতে চায় আমাকে, বুদ্ধি দেয়-মানিয়ে চলো। আমার উত্তর স্পষ্ট- যাই ঘটুক আমার জীবনে – আমি নতুন এবং তরুন প্রজন্মের সামনে মিশাল হয়ে থাকতে চাই- জীবিত কিংবা মৃত ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চ্যানেল আই অনলাইনকে আসিফ বলেন, ‘‘আমি অপমানিত বোধ করেছি, ওরাই আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, আমার মুম্বাইতে একটা ফিল্মের কাজ ও কলকাতায় ভেনাস রেকর্ডের সঙ্গে সঙ্গীত পরিচালক প্রীতমকে নিয়ে কাজ করার কথা ছিল। আমি তো কোন জঙ্গি বা সন্ত্রাসী নোই, তবে কেন আমার সঙ্গে এ আচরণ করা হবে।”

আসিফ আরো বলেন, ‘‘এ অপমান শুধু আমার নয় আমার রাষ্ট্রেরও। তাই রাষ্ট্রের কাছে জাতীয় পুরস্কার খুব শীঘ্রই ফেরত দিবো।আমি আমার এ আন্দোলনে কাউকে পাশে পাচ্ছি না, আমি কাউকে পাশে চাইছিও না।”

এর আগে ২০০৪ সালে ভারতীয় হাইকমিশন পাসপোর্ট আটদিন আটকে রেখে ভিসা দেয়নি আসিফকে। এবার তিনি ভারত থেকে সম্মান জনক দাওয়াতপত্র পেয়ে হাইকমিশনে গিয়েছিলেন ভিসার জন্য। পাঁচটি পাসপোর্ট সহ যাবতীয় কাগজপত্রও জমা দিয়েছিলেন আসিফ।

দীর্ঘ এগারো বছর পর তেরোদিন পাসপোর্ট রেখে দিয়ে চৌদ্দদিনের মাথায় তা নাকোচ করে দেয়া হয়েছে। তবে এবারো ভিসা না দেয়ার কারন ব্যাখ্যা করেনি ভারতীয় হাইকমিশন।